সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ১০:২৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
প্রধান উপদেষ্টা নিয়ে বিতর্কিত পোস্ট, ওএসডি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুন্নী সাহার ব্যাংক হিসাব তলব ভারতে পালানোর সময় সাবেক ভূমিমন্ত্রী আটক শুরুতেই দুই উইকেট হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী গ্রেফতার টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছে ভারত সরকারের প্রতি জি এম কাদেরের ত্রাণ সহায়তার আহ্বান ডেঙ্গুতে আরো ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ১২২৫ বাজার মনিটরিংয়ে টাস্কফোর্স গঠন হচ্ছে : আসিফ ভারত থেকে এলো ২ লাখ ৩১ হাজার ডিম, পিস ৭.৫ টাকা কোনো নিরাপত্তাঝুঁকি নেই, নির্বিঘ্নে পূজা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সুদ মওকুফ করে ঋণ রিশিডিউল করার দাবি চামড়া ব্যবসায়ীদের ১০০০ আইটি ইঞ্জিনিয়ারকে প্রশিক্ষণ দিতে চায় জাইকা বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তায় সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসটিডি দুই জাহাজে অগ্নিকাণ্ড: নৌ-মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি গঠন অভ্যুত্থানে ১০৫ শিশু নিহত, প্রত্যেক পরিবার পাচ্ছে ৫০ হাজার টাকা ক্রিকেটার ছদ্মবেশে শ্রমিক নেওয়ার অভিযোগে ২১ বাংলাদেশি আটক ইসরায়েলি হামলা হলে জবাব দিতে পরিকল্পনা প্রস্তুত ইরানের সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব আমিনুল গ্রেপ্তার অনুমাননির্ভর কোনো কথা বলতে চাই না: সাখাওয়াত হোসেন

ইউক্রেন যুদ্ধ ও সভ্যতার সংকট

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক:
  • আপলোড সময় সোমবার, ১৪ মার্চ, ২০২২
  • ২৮ বার পড়া হয়েছে

ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের ভয়াবহতা ও আতঙ্ক বৃদ্ধি পেয়েছে। ইউরোপের ক্রমবর্ধমান এই যুদ্ধক্ষেত্রটি আমেরিকার জন্য একটি নতুন অঞ্চল হয়ে উঠেছে বলে মনে হচ্ছে। স্টেট অফ দ্য ইউনিয়ন ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন যে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আগ্রাসনের মুখে ‘আমরা আরো একীভূত ইউরোপ, আরো একীভূত পশ্চিমা বিশ্ব দেখতে পাচ্ছি।’ তিনি সঠিক কথাই বলেছেন। পোলিশ জাতীয়তাবাদী এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের আমলারা হঠাত্ ভাই ভাই হয়ে গেছেন।

ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করছেন। নিজের দেশের কথাই বলি। আমেরিকান রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাটরা জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে মতবিরোধ করলেও এখন তা একপাশে সরিয়ে রেখেছেন এবং স্বায়ুযুদ্ধের মধ্য থেকে উত্থিত একটি দুষ্টসাম্রাজ্যের ইউরোপে অগ্রসর হওয়ার ক্ষেত্রে একসঙ্গে বিরোধিতা করছেন।

রাশিয়ার আক্রমণ ন্যাটোর জন্য চিকিত্সাশাস্ত্রের সিপিআরের মতো ফার্স্টএইড হিসেবে কাজ করছে। রাশিয়ার এই আক্রমণ ভূ-রাজনৈতিক ভারসাম্য প্রদান করছে। ওয়াশিংটন বহুবছর ধরে অনুরোধ করে আসছে ইউরোপীয়রা যেন তাদের নিরাপত্তাবিধান বাবদ অর্থ পরিশোধ করে। আমেরিকা ইউরোপের দেশগুলি রক্ষায় বিভিন্ন নিরাপত্তা সংস্হার মাধ্যমে যে অর্থব্যয় করছে, তারা যেন তা শেয়ার করে।

এর ফলে জার্মানিতে সেই দেশের সামরিক বাজেট বৃদ্ধি এবং ন্যাটো জোটে দেশটির অবদান বাড়ানোর পক্ষে একটি অভূতপূর্ব ভোটঅনুষ্ঠিত হয়েছে। বছরের পর বছর ধরে তুরস্ককে অনেকে ন্যাটোর একটি দুবৃ‌র্ত্ত সদস্য দেশ হিসেবে বিবেচনা করে আসছেন। কেননা এই দেশটি রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র কিনেছে এবং সিরিয়ার যুদ্ধের সময় পুতিনের কৌশলগত মিত্রে পরিণত হয়।

সেই তুরস্ক আজ ন্যাটো সদস্য হিসেবে ভালো অবস্হানে ফিরে এসেছে। ইউক্রেন যুদ্ধে তারা বায়রাক্টার ড্রোন সরবরাহ করছে যা রাশিয়ার সেনাদের হতাশ করছে। তুরস্ক বসপোরাস ও দারদানেলস প্রণালী বন্ধ করেছে যাতে রাশিয়ার কোনো যুদ্ধ জাহাজ প্রবেশ করতে না পারে।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যে একীভূত ইউরোপের কথা তাঁর সাম্প্রতিক ভাষণে বলেছেন তা আজ বাস্তব। এই উক্তি আপাতত স্ববিরোধী বলে মনে হলেও সত্যবর্জিত নয়। ইউরোপীয় সংহতি কেবল আমেরিকান শক্তি এবং বিশেষত্বের মাস্তুলের সঙ্গে আবদ্ধ করার মাধ্যমেই অর্জনযোগ্য বলে মনে হয়। ভূ-রাজনৈতিকভাবে স্বায়ত্তশাসিত ইউরোপের ধারণা ফরাসিদের কাছে অতি প্রিয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব থেকে বের হয়ে তারা স্বাধীনভাবে কাজ করবে—এটা বলা যতটা সহজ, করা ততটা সহজ নয়।

দিন যতই যাচ্ছে এই দৃষ্টিভঙ্গি এখন অবর্ণনীয় ও অপ্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে। যদিও বলা হয় যে ইউরোপীয়রা ইউরোপে বাস করে এবং তাদের হুমকি থেকে যে আমেরিকা নিরাপত্তা প্রদান করছে, মস্কো থেকে তাদের অবস্হান ৫,০০০ মাইল দূরে। তাঁরা মনে করেন, ইউরোপ এবং আমেরিকা যত বেশি তাঁদের নিরাপত্তা স্বার্থকে একত্রিত করবে, ইউরোপ তত কম বিশ্বে তার নিজস্ব অবস্হান গড়ে তুলতে পারবে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তির মধ্যে তত কম মধ্যস্হতাকারীর ভূমিকা পালন করতে পারবে।

কিন্তুসমস্যা হলো ‘পশ্চিমা বিশ্বের’ ধারণা। ওয়েস্ট মানে হলো কর্তৃত্ববাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ঐক্যবদ্ধ ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকা। পুতিনের সভ্যতাগত পরিচয় এবং সংঘাতের অত্যন্ত সংক্রমিত যুক্তি ভাগ করে নেওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। এর ফলাফল হতে পারে একটি বর্ধিত প্রতিযোগিতা যেখানে প্রতিটি প্রতিপক্ষ অন্যকে বিশ্বাস করতে পারে না।

কারণ পুতিনের ইউক্রেন আগ্রাসনে পশ্চিমা সভ্যতা হুমকির মুখে এমন ধারণাকে দেরিতে হলেও পুনরুজ্জীবিত করেছে। ২০১৭ সালে পোল্যান্ডে দেওয়া এক বক্তৃতায়, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পশ্চিমা সভ্যতার প্রতিরক্ষার ধারণাটিকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য খুব চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ন্যাটোর অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলায় পশ্চিমা উদারপম্হিদের কাছে এই বক্তব্যও ফাঁপা কথা বলে প্রতীয়মান হয়েছিল। এখন ‘পশ্চিমের’ আলোচনা আবার ফিরে এসেছে, এরসঙ্গে যুক্ত হয়েছে ‘মুক্ত বিশ্ব’ এবং ‘পশ্চিমি সভ্যতা’ পদগুলিও।

স্নায়ুযুদ্ধের সূচনায়, ‘মুক্ত বিশ্ব’ শব্দটি ‘পশ্চিমের’ স্হানে প্রতিস্হাপিত হয়। কারণ আমেরিকান শক্তি আরো বিশ্বব্যাপী অন্তর্ভুক্তিমূলক হওয়ার দাবি করে এই সময়। এর পরিপ্রেক্ষিতে দক্ষিণ ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া ও অন্যত্র কমিউনিস্ট ‘দাস সমাজের’ বিরুদ্ধে যুদ্ধ সংঘটিত হয়। তবে স্নায়ুযুদ্ধের পর আমেরিকান রক্ষণশীল চিন্তাবিদ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী স্যামুয়েল হান্টিংটন পশ্চিমা সভ্যতার ধারণাটিকে নাটকীয়তার রূপ দেন এবং একে পুনরুজ্জীবিত করেন। তিনি দেখান যে, পশ্চিমা সভ্যতার মূল্যবোধগুলি অভিবাসী ও সন্ত্রাসবাদীদের উত্থানে হুমকির মধ্যে পড়েছে।

স্নায়ুযুদ্ধের সমাপ্তি পূর্ব-পশ্চিমের বিভাগকে দ্রবীভূত করার কথা ছিল। পুতিন নিজে একসময় পশ্চিমের ক্লাবে যোগদান করতে আগ্রহী ছিলেন। এর প্রয়োজনীয়তা তার চেয়ে বেশি কেউ অনুধাবন করেনি। একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে যখন তিনি প্রথম ক্ষমতায় আসেন, তখন তিনি রাশিয়ার ন্যাটোতে যোগদানের কথা বলেছিলেন।

‘আপনি কখন আমাদের ন্যাটোতে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানাবেন?’ ২০০০ সালে পুতিন ন্যাটো জোটের তত্কালীন সেক্রেটারি জেনারেল জর্জ রবার্টসনকে এমন প্রশ্নই করেছিলেন। মিস্টার রবার্টসন তখন ব্যাখ্যা করেছিলেন যে ক্লাবটির একটি আবেদন প্রক্রিয়া রয়েছে। এরপর পুতিন তাকে প্রত্যাখ্যান করে বলেছিলেন, ‘ও, আচ্ছা, আমরা অনেক দেশের সঙ্গে লাইনে দাঁড়াতে চাচ্ছি না। এটা কোনো ব্যাপার না।’

সে সময় এটাও কল্পনা করা হতো যে, একদিন ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়াকেও অন্তর্ভুক্ত করতে পারে। এমনকি স্নায়ুযুদ্ধের শেষের দিকে ফ্রান্সের তত্কালীন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া মিতেরা ‘ইউরোপীয় কনফেডারেশন’ নামে একটি নতুন সংস্হার ধারণা প্রকাশ করেছিলেন। উদ্দেশ্য যাতে সোভিয়েত রাশিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করা যায়, কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নয়।

ক্ষমতায় থাকার প্রথম বছরগুলিতে পুতিনকে পশ্চিমা রাজনীতিবিদ এবং সাংবাদিকরা ইতিবাচকভাবেই দেখেছিলেন। ২০০১ সালে দ্য টাইমস-এর টমাস এল ফ্রিডম্যান তাঁর পাঠকদের ‘পুতিনের জন্য রুটিন রাখতে’ পরামর্শ দিয়েছিলেন, যখন ম্যাডেলিন অলব্রাইট তাঁকে একজন ‘কাজ করতে পারে এমন ব্যক্তি’ বলে অভিহিত করেছিলেন এবং বিল ক্লিনটন তাঁকে এমন একজন বলে মনে করেছিলেন যে ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাঁর সঙ্গে বাণিজ্য করতে পারে।’

ক্লিনটন সম্ভবত বেশি সঠিক ছিলেন। তিনি যে লেনদেনমূলক মনোভাব চিহ্নিত করেছিলেন তা রাশিয়ার রাষ্ট্রপতিকে বোঝার চাবিকাঠি বলে মনে হয়েছিল। পুতিন ‘পশ্চিম’ আসলে কী এ ব্যাপারে উত্তরাধিকারসূত্রেই একটি বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি লাভ করেন।

তাঁর কাছে ‘পশ্চিম’ হলো ‘প্রাক্তন ঘনিষ্ঠ সহযোগী’। গ্লেব পাভলভস্কির মতে, এটা উদার পুঁজিবাদী ব্যবস্হার সমার্থক, যা তিনি সোভিয়েত ব্যঙ্গচিত্রের পরিপ্রেক্ষিতে বুঝতে পেরেছিলেন যার অর্থ হলো অলিগার্চ বা অভিজাতদের সহ্য করো, রাষ্ট্রীয় শিল্পের বেসরকারিকরণ করো, ঘুষ দাও এবং গ্রহণ করো, রাষ্ট্রের ক্ষমতাকে হ্রাস করো ও ক্ষমতা ভাগাভাগি করো ইত্যাদি। এছাড়া পুতিন ভেবেছিলেন তাঁর পূর্বসূরি মিখাইল গর্বাচেভ এবং বরিস ইয়েলত্সিন ব্যর্থ হয়েছেন। কারণ তাঁরা ‘পশ্চিম’ অর্থের মর্ম বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন।

পুতিন নিজে অনেক ক্ষেত্রে পশ্চিমাদের কাছে একজন বুদ্ধিমান আবেদনময়ীর মতো কাজ করেছেন। তিনি ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক যুদ্ধ’-এ স্বাক্ষর করেন। পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে আফগানিস্তানে যুদ্ধের জন্য ঘাঁটি ব্যবহার করার অনুমতি দেন এবং এর মাধ্যমে দেশে একটি ‘সন্ত্রাসী’ বিদ্রোহের আগুন নেভাতে সক্ষম হন। ক্ষমতায় আসার পর থেকে পুতিন মস্কোকে আর্থিক শুদ্ধতার একটি প্যারাগন বানিয়েছেন এবং একজন প্রাক্তন সহকারীর মতে, তিনি রাশিয়ায় একটি আমেরিকান-কাঠামোর দ্বি-দলীয় ব্যবস্হা স্হাপনের ধারণাটি বাস্তবায়ন করেন।

কিন্তু অর্থনীতিতে পুতিনের সভাপতিত্বে একটি রাষ্ট্র-বিচ্ছিন্ন বোনানজায় বিপর্যস্ত হওয়ার হুমকির মুখে, তিনি রাষ্ট্রীয় খাতকে তীরে তোলার চেষ্টা করেন এবং ঘরে বসে ক্রমবর্ধমান কর্তৃত্ববাদী পদক্ষেপের দিকে মনোনিবেশ করেন। অতীতের ওয়ারশ চুক্তির দেশগুলি ন্যাটোর সম্প্রসারণকে স্বাগত জানায়।

আর তিনি বিশ্বে রাশিয়ার অবস্হান সম্পর্কে আরো সভ্যতাগত বোঝাপড়ায় স্হানান্তরিত হন, যা ‘পূর্ব’ মূল্যবোধের উপর ভিত্তি করে তৈরি: অর্থোডক্স চার্চ, পিতৃতান্ত্রিক শাসনতন্ত্র, সমকামিতাবিরোধী আদেশ, পাশাপাশি বৃহত্তর জাতিগত রাশিয়ান পরিচয়ের ধারণা। এজন্য বাধা কিয়েভ- ইউক্রেন। পুসি রায়ট এবং অন্যরা যারা এই নব্য-সভ্যতামূলক চিত্রটিতে সরাসরি আঘাত করেছিল তাদের মতো প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রতিশোধ নেওয়া হয়।

এরপর পুতিন কর্তৃত্ববাদী-নেতৃত্বাধীন উদারীকরণ অর্থনীতির পথ অনুসরণ করেন। চীনেও বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে সভ্যতাগত বোঝাপড়ার বিষয়টি ছিল। ফলে সেখানে চীনা সভ্যতার প্রচার-প্রসারে বিশ্বব্যাপী কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট বা সাংস্কৃতিক আত্মবিশ্বাসের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং আজো সেই কাজটি করে চলেছেন।

প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্েযপ এরদোগানের অধীনে তুরস্কও উত্তর আফ্রিকা থেকে মধ্য এশিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত একটি নব্য-অটোমান গোলকের দৃষ্টিভঙ্গিকে সামনে নিয়ে আসেন। এটা আতাতুর্কের তুর্কি জাতীয়তাবাদের দৃষ্টিভঙ্গির সরাসরি প্রত্যাখ্যান। অতি সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি হিন্দু আধিপত্যের ধারণাকে পুনরুজ্জীবিত করেছেন, তাঁর জাতির প্রাচীন অতীতকে মহিমান্বিত করেছেন—হিন্দুত্ববাদের বিরোধীদের শক্ত হাতে দমন করছেন।

এ অবস্হায় ইউক্রেন কেমন আছে— যুদ্ধক্ষেত্রে যাই হোক না কেন, এমন একটি ধারণা রয়েছে যে পুতিন ইতিমধ্যেই সংঘাতের আরেকটি স্তরে জয়ী হয়েছেন। পাশ্চাত্যের সংকল্পের কথা আমরা যতই শুনি, তত বেশি একটি উদার আন্তর্জাতিক ব্যবস্হার মূল্যবোধ একটি নির্দিষ্ট স্হানে, একটি নির্দিষ্ট জনগণের প্রাদেশিক নীতির মতো বলে মনে হচ্ছে। বিশ্বের ১০টি জনবহুল দেশের মধ্যে শুধুমাত্র একটি দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার বিরুদ্ধে বড় অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা সমর্থন করে।

ইন্দোনেশিয়া, নাইজেরিয়া, ভারত এবং ব্রাজিল সকলেই রুশ আক্রমণের নিন্দা করেছে, কিন্তু তারা পশ্চিমাদের পছন্দের পালটা ব্যবস্হা অনুসরণ করতে প্রস্তুত বলে মনে হয় না। উত্তর আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্য সার থেকে গম পর্যন্ত মৌলিক পণ্যগুলির জন্য রাশিয়ার উপর নির্ভর করে; মধ্য এশিয়ার জনগণ এর রেমিটেন্সের উপর নির্ভর করে। এই অর্থনৈতিক নেটওয়ার্কগুলিতে প্রধান বাধাগুলি ইউক্রেনের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দেওয়ার সম্ভাবনা কম বলে মনে হচ্ছে।

লেখক: বার্লিনের হামবোল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক
দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস থেকে

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com