ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামোতে রাশিয়ার ব্যাপক হামলার ফলে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন ১০ লাখেরও বেশি মানুষ। দেশটির জ্বালানিমন্ত্রী জার্মান গালুশচেঙ্কো বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) ফেসবুকের এক পোস্টে জানান, ইউক্রেনজুড়ে জ্বালানি স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা চলছে। এ কারণে জাতীয় পাওয়ার গ্রিডের পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে ওডেসা, ক্রোপিভনিজকি, খারকিভ, রিভনে এবং লুটস্ক শহরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। কিয়েভের মেয়র ভিতালি ক্লিত্সকো টেলিগ্রামে বলেছেন, ইউক্রেনীয় রাজধানীতে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় রয়েছে। সবাই আশ্রয়ে অবস্থান করুন।
সুমি অঞ্চলের শোস্তকা এলাকার অবকাঠামোতেও রুশ ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। এ ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি মূল্যায়ন চলছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সামরিক প্রশাসন।
খারকিভ অঞ্চলে তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আঞ্চলিক সামরিক প্রশাসনের প্রধান ওলেগ সিনেগুবভ। তবে এখন পর্যন্ত কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইউক্রেনের জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিড পরিচালনাকারী সংস্থা উকরেনেরগো জানিয়েছে, কিয়েভ, ওডেসা, দনিপ্রো এবং দোনেৎস্ক অঞ্চলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। এর অনেক জায়গার তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও নিচে নেমে গেছে।
রুশ হামলার পর ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলীয় লভিভ এলাকায় পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে। রিভনে অঞ্চলে ২ লাখ ৮০ হাজার এবং ভলিন অঞ্চলে আরও ২ লক্ষ ১৫ হাজার মানুষ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।
ইউক্রেনের জ্বালানি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এটি চলতি বছরে রাশিয়ার একাদশ বড় ধরনের হামলা। মন্ত্রণালয় বলছে, বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনঃস্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে, তবে এটি নিরাপত্তা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে।
জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রোজমেরি ডিকারলো সম্প্রতি সতর্ক করেছেন, রাশিয়ার এমন আক্রমণের ফলে ইউক্রেনের জন্য এবারের শীতকাল যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সবচেয়ে কঠিন হতে পারে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পূর্ণমাত্রার আক্রমণ শুরুর পর থেকেই রাশিয়া ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে আসছে। এর ফলে দেশটিতে বারবার বিদ্যুৎ বন্ধ এবং লোডশেডিং পরিস্থিতি দেখা দিচ্ছে।
সূত্র: আল-জাজিরা
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ