কোনো দলের নির্বাচন অংশগ্রহণ করার প্রক্রিয়া কিংবা মাঠে ফেরার প্রক্রিয়া সরকার বাতলে দেবে না বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর গ্রিন রোডের বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি ভবনে আয়োজিত এক কর্মশালার উদ্বোধন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, বিএনপি বা অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে যে কথাগুলো বলা হচ্ছে সেটির ব্যাপারে আমার মন্তব্য হচ্ছে — রাজনৈতিক দল হিসেবে তারা সতর্কতামূলক বার্তা দিতেই পারেন। কিন্তু উপদেষ্টা পরিষদের কেউ উপদেষ্টা পরিষদে থেকেই রাজনৈতিক দল গঠন করছেন সেটি আমার জানা নেই।
আর শিক্ষার্থী উপদেষ্টা যারা আছেন তারা বলেছেন, যদি রাজনৈতিক দল গঠন করেন তবে সরকারের উপদেষ্টা পদ ছেড়ে দিয়েই তা করা হবে। কাজেই এখানে আমি সন্দেহের বা আশঙ্কার কোনো জায়গা দেখছি না। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের অবস্থান থেকে এ কথাগুলো বলতেই পারে। সেটাও অন্তর্বর্তী সরকার বিবেচনায় রেখেছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এক ধরনের অনাস্থা তৈরি হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় যে রাজনৈতিক দল বিএনপি বলেছে, এখনো অনাস্থার কোনো পরিবেশ তৈরি হয়নি। কাজেই অনাস্থা তৈরির মতো কোনো পরিবেশ আমি দেখতে পাচ্ছি না।
নির্বাচন নিয়ে কি পরিকল্পনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন যে, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি সে কথা জাতীয় পর্যায়ে ভাষণ দিয়ে জনগণসহ সবাইকে জানিয়েছেন। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গিয়েও একই কথা বলেছেন। এর থেকে ভিন্ন কোনো কথা সরকারের পক্ষ থেকে বলার আর কোনো সুযোগ নেই। প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের যে সময়সীমা জানিয়েছেন সেই সময়সীমার মধ্যেই এখনো আমরা স্থির রয়েছি।
এই সময়ের মধ্যে সংস্কার এবং বিচার সম্ভব কি না জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, এ বিষয়গুলো প্রক্রিয়াকেন্দ্রিক। এগুলো কখন শুরু হয়ে শেষ হবে আর কখন শেষ হবে সেটি আগে থেকে বলে দেওয়া যায় না। এখন ছয়টি সংস্কার কমিশনের প্রধানরা তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন ৩১ জানুয়ারির মধ্যে দেবেন।
তারপর এই চূড়ান্ত প্রতিবেদন নিয়ে সরকার কেমন করে কাজ করবে বা কেমন করে রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তুলবে অথবা কতদিনের মধ্যে সংস্কার কাজ শেষ হবে সেই সময় নির্ধারিত করে বলা সম্ভব নয়। তাছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের এমন কোনো ম্যান্ডেট নেই যে, আজকেই সরকার গঠন করে কালকেই সব সংস্কার শেষ করে পরশুদিন নির্বাচন করব।
এভাবে সম্ভব না। তাছাড়া সংস্কার প্রক্রিয়াটি যেন স্বচ্ছ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হচ্ছে। তবে আমরা যে সময়সীমার কথা বলছি, সেই সময়ের মধ্যেই কিছু বিচারের কার্যক্রম সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।
আওয়ামী লীগ যদি নির্বাচনে অংশ নিতে চায় সেটি সম্ভব কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে আমরা বলেছি, কোন দল নির্বাচন করবে বা কেমন করে রাজনীতির মাঠে ফিরবে সেটি সেই দলের ওপর নির্ভর করে। এটার প্রক্রিয়া সরকার বাতলে দেবে না।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ