বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: পোশাক শ্রমিকদের মজুরি কাঠামোর গ্রেডে সমন্বয় করার পরও আজ সকালে আশুলিয়ায় শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছে। বিক্ষোভ করলে কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হবে- পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ এমন আল্টিমেটাম দেওয়ার পরও হামীম গ্রুপের পোষাক শ্রমিকরা এই বিক্ষোভ করে।
পোশাক শ্রমিকদের গত এক সপ্তাহের টানা বিক্ষোভ বন্ধে শ্রমিক-মালিক-সরকার ত্রিপক্ষীয় একটি সমঝোতাও হয়েছে গতকাল। এরপরও আজ সকালে সাভারের আশুলিয়ায় শ্রমিকরা বিক্ষোভ করে এবং বেশ কিছু গাড়ি ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ এসে শ্রমিকদের রাস্তা থেকে সরাতে গেলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক। তবে পুরো এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এদিকে, গতকাল পোশাক শ্রমিকদের মজুরি কাঠামোর গ্রেডে সমন্বয় করেছে সরকার। যৌক্তিক হারে বেতন বৃদ্ধি করে গ্রেডগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্তে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি কাঠামোর ছয়টি গ্রেডে বেতন বাড়িয়েছে সরকার। গতকাল শ্রম মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মালিক-শ্রমিক ও প্রশাসনের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এই সিদ্ধান্ত জানান। নতুন কাঠামোতে চিকিৎসা, যাতায়াত, বাড়িভাড়া বাড়ানো ছাড়াও মূল মজুরির সঙ্গে ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট ঘোষণা করা হয়েছে। পর্যালোচনা কমিটির ঘোষিত কাঠামোতে দেখা গেছে, এক নম্বর গ্রেডে শ্রমিকদের মজুরি ৭৪৭ টাকা, দুই নম্বর গ্রেডে ৭৮৬ টাকা, তিন নম্বর গ্রেডে ২৫৫ টাকা, চার নম্বর গ্রেডে ১০২ টাকা ও পাঁচ নম্বর গ্রেডে মজুরি ২০ টাকা বেড়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, প্রথম গ্রেডের একজন কর্মী সব মিলিয়ে ১৮ হাজার ২৫৭ টাকা বেতন পাবেন। ২০১৩ সালের বেতন কাঠামোতে এই গ্রেডের মজুরি ছিল ১৩ হাজার টাকা।
এদিকে, বিজিএমইএ’র সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান গতকাল রোববার শ্রমিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা সোমবারের (আজ) মধ্যে কর্মস্থলে ফিরে যান।এসময় সিদ্দিকুর রহমান বলেন, পোশাকশিল্পকে ধ্বংস করার জন্য একটি মহল শ্রমিকদের সরলতার সুযোগ নিয়ে কারখানায় ভাঙচুর-হামলা করেছে।এ ঘটনায় তিনি সরকারের কাছে জানমালের নিরাপত্তা চেয়ে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানান।
ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইদুর রহমান বলেন, টানা শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনায় রোববার শিল্পাঞ্চলের পাঁচ শতাধিক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে মালিকপক্ষ। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা রাস্তা অবরোধের চেষ্টা করলে তাদের সরিয়ে দেয়া হয়। এছাড়া যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও বিজিবির টহলের পাশাপাশি প্রতিটি কারখানার সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচবি