বাংলা৭১নিউজ,(বগুড়া)প্রতিনিধি: বগুড়ার শেরপুরে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সিয়াম আহম্মেদ তুহিন (১৪) বলাৎকারে বাধা পেয়ে প্রতিবেশী তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র শিশু আশিকুর রহমান আশিককে (৮) হাত-পা বেঁধে মাথায় লাঠির আঘাতে হত্যা করে। লাশ গুম করতে লাশ বস্তায় তুলে খাটের নিচে রেখে সে। পরে লাশ গুমে সহযোগিতা করেন তার বাবা, মা ও বড় ভাই।
বৃহস্পতিবার শেরপুর থানার ওসি হুমায়ুন কবীর জানান, গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তুহিন এ সব তথ্য দিয়েছে।
নিহত শিশুর বাবা মঞ্জু মণ্ডল শেরপুর থানায় গ্রেফতার তুহিন তার বাবা, মা ও বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন।
পুলিশ জানায়, নিহত শিশু আশিক শেরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর পূর্ব যমুনাপাড়ার মঞ্জু মণ্ডলের ছেলে। সে স্থানীয় শেরুয়া আদর্শ স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ত। বুধবার বিকাল ৩টার দিকে শিশু আশিক নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজি করে তার সন্ধান পাওয়া যায়নি।
পরে সন্ধ্যার দিকে পাশে তুহিনদের বাড়ির একটি ঘরে খাটের নিচে আশিকের বস্তাবন্দি লাশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে সন্ধ্যা ৭টার দিকে আশিকের লাশ উদ্ধার ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তুহিন, তার বাবা সুরুজ্জামান, মা হামিদা পারভিন ও ভাই সোহাগকে থানায় আনা হয়।
শেরপুর থানার ওসি হুমায়ুন কবীর জানান, স্থানীয় ধরমোকাম উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সিয়াম আহম্মেদ তুহিন বলাৎকারে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। সে সুযোগ পেলে অন্য শিশুদের বলাৎকার করে। তুহিন প্রতিবেশী আশিককে বেশ কয়েকবার বলাৎকারের প্রস্তাব দিয়েছিল।
বুধবার বিকালে তুহিন আবারও আশিককে এ কুপ্রস্তাব দেয়। শিশু আশিক রাজি না হওয়ায় তুহিন কৌশলে তাকে নিজ বাড়ির একটি ঘরে নিয়ে যায়। এরপর সে হাত-পা বেঁধে আশিককে বলাৎকারের চেষ্টা করে।
বাধা দিলে সে আশিকের গলাটিপে ধরে। এতেও কাজ না হওয়ায় ‘মানসিক বিকারগ্রস্ত’ কিশোর তুহিন বাঁশের লাঠি দিয়ে শিশু আশিকের মাথায় ২-৩টি আঘাত করে। কিছুক্ষণের মধ্যে আশিক মারা গেলে তার লাশ বস্তায় তুলে খাটের নিচে লুকিয়ে রাখে।
ওসি আরও জানান, সিয়াম আহম্মেদ তুহিন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। বলাৎকারে রাজি না হওয়ায় সে শিশু আশিকুর রহমান আশিককে মাথায় আঘাতের মাধ্যমে হত্যার দায় স্বীকার করেছে।
জবানবন্দি রেকর্ড শেষে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম তাকে বগুড়ার জেল সুপারের মাধ্যমে যশোরের পুলেরহাটে শিশু কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো নির্দেশ দিয়েছেন।
এছাড়া তার বাবা সুরুজ্জামান, মা হামিদা পারভিন ও ভাই সোহাগকে বগুড়া জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তদন্তকারী কর্মকর্তা শেরপুর থানার এসআই পুতুল মোহন্ত।
বাংলা৭১নিউজ/পিআর