বাংলা৭১নিউজ, ডেস্ক: আমরা আল্লাহর যত গোলামিই করি যথাযথ হক আদায় করে তা করা সম্ভব নয়। কারণ আমরা সসীম আর আল্লাহর সত্তা হলো অসীম। কোনো মানুষ চাইলেও সার্বিক হক আদায় করে আল্লাহর ইবাদত করতে পারবে না। মানুষের ত্রুটি ও সীমাবদ্ধতা থাকাটাই হলো আল্লাহর বিশালত্বের প্রমাণ। এজন্য কেউ শুধু আমল দ্বারা নাজাত পাওয়ার আশা করতে পারে না। কারণ আমরা যত আমলই করি আল্লাহ সত্তা এর চেয়ে অনেক উঁচু স্তরের; যেখানে পৌঁছা কোনো মানুষের পক্ষে কখনো সম্ভব নয়। এজন্য মানুষের যাবতীয় ত্রুটি-বিচ্যুতি আল্লাহ সব সময় ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখেন।
আল্লাহ মানুষের কাছে অধিক পরিমাণে আমল চান না; তিনি চান মানসম্পন্ন আমল। গুণগতভাবে এগিয়ে যে আমল তা অল্প হলেও নাজাতের জন্য যথেষ্ট। রাসুল (সা.) হজরত মা’আজকে (রা.) উদ্দেশ্য করে বলেছেন, হে মা’ আজ, তুমি তোমার দীনকে খালেস কর, তাহলে তোমার অল্প আমলই নাজাতের জন্য যথেষ্ট হবে’ [বুখারি]। হাশরের ময়দানে কারো কারো ধারণা হবে, আমি তো দুনিয়াতে অনেক আমল করেছি, আমাকে আল্লাহ অবশ্যই নাজাত দেবেন। কিন্তু সে যখন আল্লাহর সামনে তার আমলের হিসাব-নিকাশ করতে যাবে তখন ধরা পড়বে আমলের নানা ত্রুটি-বিচ্যুতির বিষয়টি। শেষ পর্যন্ত তার ধারণা ভুল প্রমাণিত হবে। আল্লার অনুগ্রহে হয়তো শেষ পর্যন্ত তার নাজাত মিলবে।
কোনো মানুষই তার আমল গুণে নাজাতের আশা করতে পারে না। একমাত্র আল্লাহর অনুগ্রহই পারে মুক্তি দিতে। এ জন্য হজরত আদম (আ.) বলেছেন, হাশরের ময়দানে আল্লাহ যদি ঘোষণা করেন যে, পৃথিবীর সব মানুষকে নাজাত দিয়ে দিলাম একজন ছাড়া; তখন আমার ভয় হয় সেই একজন আমি হয়ে যাই কিনা। আবার আল্লাহ যদি ঘোষণা করেন, পৃথিবীর সব মানুষকে জাহান্নামে দিলাম একজন ছাড়া, তখন আমার এই আশাও জাগে, সেই একজন আমি হব। এটাকেই হাদিসের ভাষায় বলা হয়েছে, ইমান হলো আশা ও ভয়ের মাঝামাঝিতে।
প্রত্যেক মুমিনকে এই বিশ্বাস রাখতে হবে যে, আমি আমার আমলের জোরে কখনো মুক্তি পাব না। আমাকে মুক্তি পেতে হলে অবশ্যই আল্লাহর অনুগ্রহ লাগবে। বান্দা যখন আল্লাহর প্রতি মুখাপেক্ষী হবে তখন তার আমলের মাত্রা যেমন বাড়বে তেমনি পরকালে মুক্তিও নিশ্চিত হবে।
বাংলা৭১নিউজ/এন