আলোচিত ‘ক্যাসিনো ব্রাদার্স’ এনামুল হক এনু ও রূপন ভূঁইয়াকে ১৭ লাখ ১৬ হাজার টাকা পাচারের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। এছাড়া অন্য ৭ জনকে ৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন একই আদালত।
দণ্ডপ্রাপ্ত এনামুল হক এনু রাজধানীর গেন্ডারিয়া আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি এবং রূপন সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
৪ বছর করে কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- তাদের ৩ ভাই শহিদুল হক ভূঁইয়া, রাশিদুল হক ভূঁইয়া ও মেরাজুল হক ভূঁইয়া, মতিঝিল ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জয় গোপাল সরকার এবং তাদের সহযোগী তুহিন মুন্সী, নবীর হোসেন সিকদার ও সাইফুল ইসলাম।
রায় ঘোষণার সময় জামিনে থাকা জয় গোপাল, সাইফুল ও তুহিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
একইসঙ্গে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক মাসুদ পারভেজ এনু ও রূপনকে ৩৪ লাখ ২৬ হাজার ৬০০ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন। অন্য ৭ জনকে ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৩০০ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রায়ে বিচারক বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে এবং এ ধরনের অপরাধের জন্য তাদের সাজা দেওয়া হয়েছে।
এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো অর্থ পাচারের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেন এনু ও রূপন।
তদন্তকালে তুহিন মুন্সি, সাইফুল ইসলাম ও নবীর হোসেন অর্থপাচারের ঘটনায় এনু ও রূপনের নাম উল্লেখ করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
প্রসিকিউশন অনুযায়ী, এনু ও রূপন স্বীকার করেছেন তাদের বাসা থেকে জব্দ করা অর্থ ক্যাসিনো গেম ও জুয়ার মাধ্যমে আয় করা।
বিচার চলাকালে আদালত মামলার বাদীসহ রাষ্ট্রপক্ষের ১১ জন সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অবৈধ ক্যাসিনো, বার, স্পা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করলে এনামুল ও রূপন আত্মগোপনে চলে যান।
২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর র্যাব ঢাকার সূত্রাপুরা এলাকার বানিয়ানগরে তাদের বাসায় অভিযান চালিয়ে দুটি লোহার সিন্দুক থেকে মোট ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৩০০ টাকা এবং ৫ হাজার ১৬৩ গ্রাম বা ২ কোটি ৫ লাখ মূল্যের স্বর্ণালঙ্কার জব্দ করে।
এ ঘটনায় এনু ও রূপনের বিরুদ্ধে সূত্রাপুর থানায় মামলা করে র্যাব।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক মেহেদী মাকসুদ ২০২০ সালের ২১ জুলাই এনু, রূপনসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
২০২১ সালের ২৬ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
তাদের নামে পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকা এবং মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান ও কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়ায় মোট ১২১টি ফ্ল্যাট ও প্লট পাওয়া গেছে বলে সিআইডির তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
সিআইডি আরও জানতে পেরেছে, এনু ও রূপনের ৯১টি ব্যাংক হিসাবে ২৬ কোটি টাকা এবং ঢাকায় ১২১টি ফ্ল্যাট রয়েছে।
সেই সঙ্গে ৫ কোটি টাকা পাচারের মামলায় ২০২৩ সালের ২৮ নভেম্বর এনু ও রূপনকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এছাড়া দুই কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ওয়ারী থানায় দায়ের করা অপর এক মামলায় ২০২২ সালের ২৫ এপ্রিল ঢাকার আরেক আদালত এনু ও রূপনসহ ১১ জনকে ৭ বছর করে কারাদণ্ড দেন।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ