মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন আরকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) শীর্ষ সন্ত্রাসী ও গান কমান্ডার রহিমুল্লাহ ওরফে মুছাকে (২৭) তিন সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৪৩ কেজি বিস্ফোরক দ্রব্য, একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ওয়ান শ্যুটারগান ও ৭ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার তেলখোলা-বরইতলী গহীন পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছেন র্যাব সদর দপ্তরের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়ন কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তাররা হলেন, উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প-১৮ এর গান কমান্ডার ও আরসার জিম্মাদার রহিমুল্লাহ প্রকাশ মুছা (২৭), বালুখালী ৪ নম্বর ক্যাম্পের আরসা কমান্ডার শামছুল আলম ওরফে মাস্টার শামসু (২৮) এবং উখিয়া উপজেলার পালংখালীর তেলখোলা-বরইতলী এলাকার বাংলাদেশি নাগরিক শফিক (২৮) ও সিরাজ (৩০)।
খন্দকার আল মঈন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের একটি দল ৬ কেজি ৫৩০ গ্রাম বিস্ফোরক দ্রব্যসহ স্থানীয় বাসিন্দা শফিক ও সিরাজকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের দেওয়া তথ্যমতে একই এলাকার গহীন পাহাড়ে অভিযান পরিচালনা করে রহিমুল্লাহ প্রকাশ মুছা ও শামছুল আলম প্রকাশ মাস্টার শামসুকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাবের এ মুখপাত্র বলেন, উখিয়া ও টেকনাফের আশ্রয়শিবিরে সাম্প্রতিক সময়ে খুন, অপহরণ, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, মাদক চোরাচালানসহ নানা অপরাধ বেড়েছে। এসব অপরাধে আরসাসহ কয়েকটি সন্ত্রাসী গ্রুপ জড়িত।
র্যাবের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, মুছা ও শামসু আরসার শীর্ষ নেতা। তারা বালুখালী শরণার্থী ক্যাম্প ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় খুন, অপহরণ, ডাকাতি, মাদক চোরাচালান, চাঁদাবাজি, আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন ধরণের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকে। গ্রেপ্তারদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছেন, মুছার নেতৃত্বে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা ছিল।
আল মঈন আরও বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য তারা পাশের দেশ থেকে দূর্গম সীমান্তবর্তী অঞ্চল দিয়ে অস্ত্র ও বিস্ফোরকদ্রব্য চোরাচালান করতেন। গ্রেপ্তার শফিক ও সিরাজ উদ্ধারকৃত বিস্ফোরকদ্রব্য নিজেদের কাছে সংরক্ষণ করতেন এবং সুবিধাজনক সময়ে আরসা’র সন্ত্রাসীদের কাছে সরবরাহ করতেন।
খন্দকার আল মঈন বলেন, সম্প্রতি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কয়েকটি বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আরসা বিস্ফোরকদ্রব্য ব্যবহার করেছে। গত ২২ জুলাই টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া-শামলাপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আরসার শীর্ষ সন্ত্রাসী হাফেজ নুর মোহাম্মদসহ ৬ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাজ্জাদ হোসেন।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ