টানা দরপতনের সঙ্গে লেনদেন খরা দেখা দিয়েছে দেশের শেয়ারবাজার। ধারাবাহিকভাবে লেনদেন কমতে কমতে বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সাড়ে ১০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন হয়েছে। সেইসঙ্গে কমেছে সবকটি মূল্যসূচক।
ডিএসইর পাশাপাশি অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। সেইসঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। তবে, দুই বাজারেই লেনদেনে অংশ নেওয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে বেড়েছে তার থেকে বেশি।
দিনের লেনদেন শেষে সূচকের পতন হলেও এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। এতে লেনদেন শুরুতে ১৩ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে সূচকের এ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বেশি সময় স্থানীয় হয়নি।
লেনদেনের সময় ১০ মিনিট না গাড়াতেই দরপতন হতে থাকে একের পর এক প্রতিষ্ঠানের। ফলে লেনদেনের ৩৬ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৫২ পয়েন্ট পড়ে যায়। এতে দিনের লেনদেন শেষ আবারও বড় পতন হবে এমন আশঙ্কা পেয়ে বসে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে।
তবে এ পরিস্থিতিতে খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক, ওষুধ ও রসায়ন এবং বস্ত্র খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায়। পতনের মধ্যেই এ তিন খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নেয়। ফলে বড় পতনের হাত থেকে রক্ষা পায় শেয়ারবাজার। অবশ্য এরপরও লেনদেনের খরা থেকে বের হতে পারিনি বাজার।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ১৬৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪০টির এবং ৭৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এরপরও দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৬৯৬ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪৪১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ৭ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৪৬২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
দিনভার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৬৪৪ কোটি ৫৫ টাকা। যা গত বছরের ১৮ এপ্রিলের পর সর্বনিম্ন। ২০২১ সালের ১৮ এপ্রিল ডিএসইতে ৬০২ কোটি ৭৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়। এরপর ডিএসইতে আর সাড়ে ছয়শ কোটি টাকার কম লেনদেনে হয়নি।
লেনদেন কমার দিনে ডিএসইতে টাকার অংকে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে সোনালি পেপারের শেয়ার। কোম্পানিটির ৬৩ কোটি ৩২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ৪৩ কোটি ৯ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৩৭ কোটি ২৩ টাকার শেয়ার লেনদেনের তৃতীয় স্থানে রয়েছে বেক্সিমকো।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ফরচুন সুজ, ওরিয়ন ফার্মা, ইউনিয়ান ব্যাংক, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সাইফ পাওয়ারটেক এবং ব্র্যাক ব্যাংক।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২০ কোটি ৯২ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৮২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১৩টির এবং ৫১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ