বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: রাজধানীর উত্তরখানের ময়নারটেকের একটি বাসা থেকে উদ্ধার করা মা ও দুই সন্তানের মরদেহ সুরতহাল করেছে পুলিশ। পুলিশের ধারণা ২/৩ দিন আগে তাদের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। তবে ওই বাসা থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করেছে পুলিশ।
চিরকুটে লেখা ‘আমাদের মৃত্যুর জন্য ভাগ্য ও আত্মীয়-স্বজনদের অবহেলাই দায়ী।
রোববার (১২ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উত্তরখান থানাধীন ময়নারটেক এলাকার ভেতর থেকে বন্ধ করা একটি বাসা থেকে পচন ধরা মা ও দুই সন্তানের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। মা ও মেয়ের মরদেহ ছিল বিছানায় আর ফ্লোরে পড়েছিল ছেলের মরদেহ।
নিহত মায়ের নাম জাহানারা খাতুন মুক্তা(৪৭)। ছেলের নাম মুহিব হাসান রশ্মি(২৮) এবং শারীরিক প্রতিবন্ধী মেয়ের নাম আফিয়া সুলতানা মিম(২০)। দুই সন্তানের বাবার নাম মৃত ইকবাল হোসেন। তাদের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরব থানার জগন্নাথপুর গ্রামে।
উত্তরখান থানার ওসি হেলাল উদ্দিন জানান, পচা গন্ধ পেয়ে আশপাশের মানুষ থানায় খবর দিলে পুলিশ মরদেহগুলো উদ্ধার করে। তিনটি মরদেহেই পচন ধরেছে। শরীরে আঘাত রয়েছে কিনা তা এখনও নিশ্চিত নয়। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
উত্তরা বিভাগের এডিসি এএসএম হাফিজুর রহমান রিয়েল বলেন, পুলিশ ময়নারটেকে ৩৪/বি বাসায় গিয়ে প্রথমে ভেতর থেকে দরজার বন্ধ করা অবস্থায় দেখতে পায়। দরজা ভেঙে ভেতরে দেখা যায়, মা ও মেয়ের মরদেহ ছিল বিছানায় আর ফ্লোরে উপুড় হয়ে পড়ে থাকা অবস্থায় দেখা যায় ছেলের মরদেহ। ঘরের মেঝেতে প্রচুর রক্ত। রক্ত কালো রঙ ধারণ করেছে। প্রচণ্ড দুর্গন্ধ। পাশে ড্রইং রুমের টেবিলে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। চিরকুটটি মোবাইলফোন দিয়ে চাপা দেয়া ছিল।
চিরকুটে লেখা ছিল, ‘আমাদের মৃত্যুর জন্য ভাগ্য ও আমাদের আত্মীয়-স্বজনের অবহেলাই দায়ী।’ আমাদের মৃত্যুর পর আমাদের সম্পদ গরিবদের মাঝে বিলিয়ে দেয়া হোক। ইতি জাহানারা বেগম।
হাফিজুর রহমান বলেন, ‘মৃত্যুর কারণ তদন্ত সাপেক্ষ। ঘর ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। দরজা ও জানালাও ভাঙা দেখা যায়নি। তাই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট জানতে ময়না তদন্ত করতে হবে।
পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, দ্বিতীয় রোজায় ওই তিনজন বাসাটি ভাড়া নিয়েছিলেন। গত কয়েকদিন আগে ৪০তম বিসিএস পরীক্ষায়ও অংশ নেয় মুহিব হাসান রশ্মি।
হাফিজুর রহমান বলেন, সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটকে খবর দেয়া হয়েছে। সুরতহাল শেষে মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে।
বাংলা৭১নিউজ/এম.এস