আফগানিস্তানের চলমান সংকটময় পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেছে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন (ওআইসি)। ওআইসি-এর ৫৭টি সদস্য দেশের শীর্ষ প্রতিনিধিরা বৈঠকে আফগানিস্তানের ভবিষ্যত নেতৃবৃন্দকে জাতীয় পুনর্গঠন ও জাতিসংঘের সনদ ও নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন।
রবিবার (২২ আগস্ট) ইসলামিক সামিটের বর্তমান অধিবেশনের সভাপতি সৌদি আরবের আহ্বানে জরুরি এ বৈঠকে অনুষ্ঠিত হয়। সৌদির জেদ্দায় অবস্থিত ওআইসির জেনারেল সেক্রেটারিয়েট কার্যালয়ে স্থায়ী প্রতিনিধিদের নিয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ওআইস-এর মহাসচিব ড. ইউসুফ আল উসাইমিন আফগান নেতৃবৃন্দকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে বর্তমান ক্ষমতাসীন দলকে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি সতর্ক করে বলেন যে, আফগানিস্তান যেন কোনো সন্ত্রসাী দলের স্থান হিসেবে ব্যবহৃত না হয়।
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তি অনুযায়ী জীবন ও নিরাপত্তার অধিকার এবং আফগান জনগণের মর্যাদার সুরক্ষা ও সম্মান করার আহ্বান জানাই। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও ওআইসির আশা করে যে, জাতীয় সমন্বয় গঠনে আফগান কর্তৃপক্ষ সমাজের সব স্তরের সঙ্গে অন্তর্ভূক্তিমূলক সংলাপ করবে।
আফগান নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তাঁরা যেন আন্তর্জাতিক চুক্তির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মানদণ্ড অনুসরণ করে জাতিসংঘের সনদ ও রেজুলেশন মেনে চলে।
সৌদির আল হাদাস টিভি নিউজ চ্যানেল-কে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে ওআইসিতে নিযুক্ত আফগানিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. শফিক সামিম তাঁর দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনে আশাবাদী বলে জানান। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ বন্ধ হয়েছে। দীর্ঘ ২০ বছর পর রক্তের স্রোত থেমেছে। দেশটিতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে। তাদের দখলের পর রাজধানীতে আমরা কোনো বুলেটের শব্দ শুনিনি।’
সামিম আরো জানান, ‘এবারই প্রথম আফগানিস্তানের একটি বিরোধী শক্তি কোনো ধরনের ‘ধ্বংস বা প্রতিরোধ’ ছাড়াই রাজধানীতে পৌঁছেছে। বর্তমানে সেখানের যুদ্ধে বাস্তুচ্যুত আফগানদের জন্য মানবিক সাহায্য সংগ্রহ করা আলোচনার অপরিহার্য ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
জরুরি বৈঠকে ওআইসিভূক্ত সদস্য দেশগুলো আফগানিস্তানে শান্তি, নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। এছাড়াও আফগানিস্তান ইস্যুতে ওআইসি-এর গৃহীত নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নে সদস্য রাষ্ট্রগুলো গুরুত্বারোপ করে। ইসলামী শীর্ষ সম্মেলন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের কাউন্সিলসহ বিভিন্ন সভায় গৃহীত প্রস্তাবনা বাস্তবায়নের কথা বলা হয়। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ১১ জুলাই অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক উলামা সম্মেলনে আফগানিস্তানের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিয়ে ‘মক্কা ডিকলারেশন’ ঘোষিত হয়।
এদিকে ওআইসি-তে নিযুক্ত সৌদির স্থায়ী প্রতিনিধি ড. সালেহ বিন হামাদ আল সুহাইবানি আফগান জনগনের প্রতি সৌদির সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘আফগানিস্তানের ঐক্য, শান্তি ও স্থিতিশীলতার সমর্থনের সৌদির ঐতিহাসিক অবস্থান রয়েছে। আফগানিস্তানে তালেবানসহ সব দল সমন্বিতভাবে মানবতার নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে কাজ করে।
সূত্র : আরব নিউজ
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ