জাতীয় জাদুঘর ও এর অধীন অন্যান্য জাদুঘরের আধুনিকায়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ কাজের জন্য জাতীয় জাদুঘরের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি নিয়োগ পেয়েছেন স্থপতি মেরিনা তাবাসসুম। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) জাতীয় জাদুঘর নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, কোনো দেশে গেলে আমরা প্রথম জাদুঘর পরিদর্শন করি। জাদুঘরে গেলে আমরা জানতে পারি জাতি কতটা সমৃদ্ধ, কোন পথ দিয়ে জার্নি করে জাতিটা এখানে এসে পৌঁছেছে। যে কোনো কারণেই হোক জাদুঘরটা আমাদের এখানে আসলে অনেকটা অবহেলিত।
জাদুঘরে যাওয়া যে জরুরি, সেখানে গেলে যে আমি কিছু জিনিস জানতে পারবো, একবার গেলে আমার কাজ শেষ হয়ে যাবে না, প্রতিনিয়ত নবায়ন চলতে থাকবে। এজন্য আমি প্রায়ই যেতে উৎসাহ বোধ করব এই জিনিসগুলো আমাদের জাদুঘরের ক্ষেত্রে আসলে কখনো হয় না।
তিনি বলেন, আমি যোগ দেওয়ার পর জাদুঘরটা আমাদের অগ্রাধিকারের মধ্যে ছিল। সাতটি অগ্রাধিকার প্রকল্প হাতে নেওয়াতে এটা নিয়ে আমরা ভেতরে ভেতরে কাজ করছিলাম। কি করে আমরা এটাকে একটা সেইপে আনতে পারি।
প্রথমে আমরা একটা জিনিস চিহ্নিত করলাম- জাদুঘরগুলোকে যে আধুনিকায়ন হবে। শুধু জাতীয় জাদুঘর না এর অধীনে আরও অনেকগুলো জাদুঘর আছে, এই কাজে নেতৃত্ব দেবে কে? আমাদের আগে লিডার খুঁজে বের করতে হবে। আমিতো এটার বিশেষজ্ঞ না, এটা আমার কাজও না।
এজন্য আমরা খোঁজার চেষ্টা করেছি কাকে পেলে আধুনিক জাদুঘর সারাবিশ্বে কীভাবে পরিচালিত হচ্ছে এবং আমাদের এখানে যা আছে সেটা আধুনিকায়ন করতে হলে কি কি লাগবে? কোন কোন মর্ডানাইজেশনের জায়গায় আমরা পিছিয়ে আছি, এই জিনিসগুলো নিয়ে কাজ করার জন্য আমাদের একজন লিডার প্রয়োজন ছিল।
ফারুকী বলেন, আমরা অনেকদিন ধরে এটার পেছনে লেগেছিলাম। আমরা খুবই আনন্দিত যে আমরা আপনাদের বলতে পারছি, স্থপতি মেরিনা তাবাসসুম, তিনি আমাদের জাতীয় জাদুঘরের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হিসেবে যোগ দিতে সম্মত হয়েছেন।
উপদেষ্টা বলেন, আমি মনে করি মেরিনা এবং তার পর্ষদ মিলে আমাদের এমন একটা ভিশন দেবেন সেখানে আমাদের জাতীয় জাদুঘরটা একটা ম্যাস ভিজিটের জায়গা হয়ে উঠবে। বিদেশ থেকে কেউ যখন আসে জাদুঘরে যায় বেরিয়ে এসে খুব ভালো প্রতিক্রিয়া আমাদের দেয় না। আমরা চাই এটা বদলে যাক।
নাগরিকরা নিজেরা যেমন যাবে, তেমনি অন্য দেশ থেকে যখন বন্ধুরা আসবে বা পর্যটকরা আসবে তারা যাতে জাদুঘরে ঘরে বাইরে এসে একটা ভালো প্রতিক্রিয়া দেয়। আমার বিশ্বাস তারা সেটা করতে পারবেন।
মেরিনা তাবাসসুমকে জাতীয় জাদুঘর পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি নিয়োগ দিয়ে গত ১৮ ডিসেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন উপদেষ্টা।
মেরিনা তাবাসসুম সাংবাদিকদের বলেন, এটা একটা বড় দায়িত্ব, যেটা মাথা পেতে গ্রহণ করলাম। যতদিন দায়িত্বে থাকে ভালো কিছু করার চেষ্টা করব। একটা জাতির জন্য জাদুঘর একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। আমাদের জাতীয় জাদুঘর এবং এর অধীনে আরও অনেকগুলো জাদুঘর আছে।
প্রথমে যেটি চাই তা হচ্ছে একটা পরিকল্পনা তৈরি হয়ে গেলে আমরা সবগুলো জাদুঘর ঘুরে দেখতে চাই। সংগ্রহগুলো কি অবস্থায় আছে, জিনিসগুলো যাতে একটা সুন্দর পরিকল্পনার মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়- এটি একটি প্রধান উদ্দেশ্য হবে আমাদের।
তিনি বলেন, সংগ্রহগুলো সঠিক উপায়ে সংগ্রহ করা এবং সেগুলো নিয়ে গবেষণা করা- এসবগুলোই একটা জাদুঘরের কাজের মধ্যে পড়ে। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যাতে আকর্ষণ জাদুঘরে থাকে। ভালো কিছু করার ইচ্ছা আছে এবং সবাইকে নিয়ে কাজ করলে আমরা সেখানে পৌঁছে যাবো।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ