বাংলা৭১নিউজ, বি এম হান্নান, চাঁদপুর প্রতিনিধি: বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. আনম এহছানুল হক মিলন পাঁচ বছর পর দেশে ফিরে গুম আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। পরিবারের অভিযোগ, মিলন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে চাইলেও সেই সুযোগ তিনি পাচ্ছেন না। সশ¯্র ও সাদা পোশাকের পুলিশ চাঁদপুর আদালত এলাকা ঘেরাও করে রেখেছেন।
সাংবাদিকদের তারা বলেন, ‘আমরা আদালতে যেতে চাই। কিন্তু যেতে পারছি না। চাঁদপুর আদালত এলাকা পুলিশ ও ডিবি সদস্য ঘিরে রেখেছে’। ফোনালাপে চাঁদপুরের ক’ জন সাংবাদিককে এ কথা বলেন এহসানুল হক মিলন। গতকালও মিলন চাঁদপুর আদালতে হাজির হওয়ার কথা ছিলো। শেষ পর্যন্ত তিনি হাজির হননি।
আদালতে হাজিরার সময় নিরাপত্তা চেয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কাছে আবেদন করেছেন এহসানুল হক মিলন। গত ১৮ নভেম্বর রোববার বিকেলে আত্মগোপনে থাকা মিলনের স্বাক্ষরিত চিঠিটি ইসিতে নিয়ে যান তাঁর স্ত্রী নাজমুন নাহার বেবি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার কাছে চিঠিটি দেয়া হয়।
চিঠিতে এহছানুল হক মিলন উল্লেখ করেন, দীর্ঘদিন বিদেশে অবস্থানের কারণে আমার বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলাসমূহের হাজিরা দিতে দেশে আসলেও তাতে ব্যর্থ হই। কারণ হিসেবে তিনি তাঁর নির্বাচনী এলাকা কচুয়ার বাড়ি ও চাঁদপুরের আদালত প্রাঙ্গণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতাকে দায়ী করেন। চিঠিতে মিলন আরও উল্লেখ করেন, একাধিক বিশ্বস্তসূত্রে নিশ্চিত হতে পেরেছি যে, পুলিশ আমাকে আদালতে হাজির হওয়ার সুযোগ না দিয়ে বাইরে থেকে গ্রেফতার করবে। যেহেতু নির্বাচনী আইন অনুযায়ী বর্তমানে পুলিশসহ সমগ্র প্রশাসন ইসির নিয়ন্ত্রণাধীন, সে কারণে আমাকে ঘিরে পুলিশ প্রশাসনে এহেন বেআইনি তৎপরতা বন্ধে ইসির হস্তক্ষেপ কামনা করছি। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু পুলিশ পূর্বে আমাকে যেভাবে আটক করে নির্যাতন করেছিল এখন আবার পূর্বের ন্যায় আটক করার ও মিথ্যা মামলায় জড়ানোর পরিকল্পনা করেছে। আমি যেনো একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারি সেজন্যই এমনটা করছে। আমি আইনকে সম্মান জানিয়ে আদালতের শরণাপন্ন হতে গিয়েও হতে পারছি না।
চাঁদপুর-১ (কচুয়া) আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এহছানুল হক মিলন। তাঁর পক্ষে দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনে জমাও দেওয়া হয়েছে। ২০০১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী মিলন ২০০৮ সালের নির্বাচনে হেরে যান আওয়ামী লীগের ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরের কাছে।
স্থানীয় বিএনপি সূত্র জানায়, ২০০৮ সাল থেকে গত ১০ বছরে মিলনসহ কচুয়া উপজেলা বিএনপির ৫ শতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ২৬টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ৩টি মামলায় মিলন দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন। জামিন পেয়ে তিনি যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও মালয়েশিয়ায় প্রায় ৫ বছর কাটিয়ে স¤প্রতি দেশে ফেরেন।
কচুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড. হেলাল উদ্দিন জানান, মিলনের বিরুদ্ধে কচুয়ার ক্ষতিগ্রস্ত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও পুলিশ বাদী হয়ে একাধিক মামলা করেছে। ঐ সব মামলার পলাতক আসামি হিসেবে পুলিশ মিলনকে খুঁজছে।
চাঁদপুর কোর্ট পুলিশ সূত্র জানায়, মিলনের বিরুদ্ধে ২৬টি মামলাই বিচারাধীন। স্থানীয় আদালতে হাজির না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে পুলিশ খুঁজবে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, ‘আদালত চত্বরে বাড়তি নিরাপত্তার জন্যে পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস