সোমবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:০৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা হবে রাজবাড়ীতে শীতার্তদের পাশে সেনাপ্রধান অসচ্ছল শিক্ষার্থীরা চিকিৎসা সহায়তায় পাবেন ১০-৫০ হাজার টাকা কমিশনের সুপারিশের পর স্বাস্থ্যের সংস্কার শুরু হবে : উপদেষ্টা বিএনপি নেতা এস এ খালেক মারা গেছেন সিরিয়ায় তুরস্ক সমর্থিত গোষ্ঠী ও কুর্দি বাহিনীর সংঘর্ষ, নিহত শতাধিক সরকারি কলেজের শিক্ষকদের সম্পদের তথ্য জমা দিতে হবে মাউশিতে মুন্সীগঞ্জে অতিরিক্ত সচিবের বাড়িতে ডাকাতি আরও পাঁচ ব্যাংকের এমডিকে বাধ্যতামূলক ছুটি পাট-পর্যটন-ফার্মাসিউটিক্যালস-টেলিকমে বিনিয়োগের আহ্বান নদী দূষণ রোধ-বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় এডিবির সহযোগিতা চাইলেন উপদেষ্টা ভারতে প্রশিক্ষণে যাওয়া হচ্ছে না বিচার বিভাগের ৫০ কর্মকর্তার টেকনাফে ৩৬ রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ, হেফাজতে নিয়েছে বিজিবি ৯ দফা দাবি আদায়ে চবি শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান পদে রেজানুর রহমানের যোগদান সেনাবাহিনীর মূল লক্ষ্যই হলো বিজয়ী হওয়া : প্রধান উপদেষ্টা সাবেক মন্ত্রী লতিফ বিশ্বাস আটক স্ত্রীসহ তাপসের ৮০ কোটির সম্পদ, ৬১৫ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেন সৌদিতে ১৯ হাজারেরও বেশি অভিবাসী গ্রেফতার শেখ রেহানার ছোট মেয়ে আজমিনাও ফ্ল্যাট উপহার নিয়ে বিতর্কে

আটকে গেছে ৩০০ কোটি টাকার চিংড়ির শিপমেন্ট, ক্ষতি ১০০ কোটি টাকা

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক:
  • আপলোড সময় সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০২৪
  • ২১ বার পড়া হয়েছে

করোনা মহামারির ধাক্কা সামলানোর পর কোটা আন্দোলন ঘিরে চলমান সংকটে দেশের অন্যতম রপ্তানি পণ্য হিমায়িত চিংড়ি সেক্টরে নেমে এসেছে বড় ধরনের বিপর্যয়। ইন্টারনেট সেবা বিঘ্নিত হওয়ায় বন্ধ শিপমেন্ট, অন্যদিকে চিংড়ির কনটেইনার সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে আটকে থাকায় বিপুল অর্থ লোকসান গুনতে হচ্ছে রপ্তানিকারকদের। 

বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএফই) সূত্র বলছে, ইন্টারনেট সেবা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে না আসায় প্রায় ২০০ টন হিমায়িত চিংড়ি শিপমেন্ট করা যাচ্ছে না। যার মূল্য ৩০০ কোটি টাকা।  ১০ দিন ধরে রপ্তানিযোগ্য এসব চিংড়ির কনটেইনার আটকে রয়েছে। ফলে ১০০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন তারা।

এ তথ্য নিশ্চিত করে বিএফএফই প্রেসিডেন্ট কাজী বেলায়েত হোসেন বলেন, ইন্টারনেটের অচলাবস্থার কারণে সব সেক্টরে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। বিদেশি বায়ারদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। পাশাপাশি ব্যাংকের মাধ্যমে ক্রেতাদের টাকা পাঠানো হলেও অ্যাকাউন্টে ঢুকছে না। পুরোপুরি নেট ঠিক না হওয়ায় ব্যাংকের সার্ভারগুলো ধীরগতিতে কাজ করছে।

রপ্তানিকারক ও ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ঘেরে পর্যাপ্ত মাছ আছে। কিন্তু ক্রেতা নেই। বিক্রি করতে না পারায় মাছের জন্য প্রতিদিন অতিরিক্ত খাবার জোগাতে হচ্ছে। ফলে লোকসান বাড়ছে। কেউ কেউ ঘেরকে চিংড়ি পোনা ছাড়ার উপযোগী করতে বাধ্য হয়ে অর্ধেক দামে মাছ বেচে দিচ্ছেন। তারাও গুনছেন লোকসান। অন্যদিকে সরবরাহ কমের অজুহাতে মাছ চাষের উপকরণের দাম বাড়ায় আর্থিক ক্ষতিতে পড়েছেন চাষিরা।

খুলনার খামারি জাকির হোসেন বলেন, ‘কোটা আন্দোলন ঘিরে এই সংকটে পড়তে হয়েছে খামারিদের। দোকানে গিয়ে চিংড়ির খাবার পাওয়া যাচ্ছে না। এখনও খাবার সরবরাহ ঠিক হয়নি। ফলে বেশি দামে খাবার কিনতে হচ্ছে। আবার মাছও বিক্রি করা যাচ্ছে না। কারণ রপ্তানি বন্ধ আছে।’

খুলনার মডার্ন সি ফুড ও ব্রাইট সি ফুডের সেলস ম্যানেজার সাইফুদ্দিন তনু জানান, চলমান সংকটের কারণে তাদের দুটি প্রতিষ্ঠানের চার কনটেইনার চিংড়ি শিপমেন্টের অপেক্ষায় রয়েছে । চার কনটেইনারে ৮০ টন রপ্তানিযোগ্য চিংড়ি রয়েছে; যার মূল্য প্রায় ৮০ কোটি টাকা। তবে গত বুধবার থেকে ইন্টারনেট চালু হলেও নেটের গতি কম এবং মাঝেমধ্যে নেটওয়ার্কে সমস্যার ফলে সংকট কাটছে না।

এদিকে, বেনাপোলের কাস্টমস অ্যান্ড ক্লিয়ারিং এজেন্ট মেসার্স মিলন এন্টারপ্রাইজের পক্ষে রজলুর রহমান জানান, সাম্প্রতিক অচলাবস্থায় তাদেরও সংকটে পড়তে হয়েছে। বেনাপোলের ভারতীয় অংশে পেট্রাপোলে এক সপ্তাহ ধরে পড়ে ছিল ৫০ টন চিংড়ির খাবার। বুধবার ওই খাবারগুলো বেনাপোল সীমান্ত পার হয়ে দেশে ঢুকেছে।

এ বিষয়ে খুলনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল বলেন, সাম্প্রতিক অচলাবস্থার ফলে শুধু ব্যাংকে লেনদেনে কিছুটা সমস্যায় পড়তে হয়েছে রপ্তানিকারকদের। ইন্টারনেট চালু হওয়ায় এখন আর সে সংকট থাকবে না। তবে খুলনার চিংড়ি উৎপাদনকারীদের কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি বলে উল্লেখ করেন তিনি। 

বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএফইএ) তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানিতে আয় হয়েছে ১৪ কোটি ৫৯ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে তা ছিল ১৮ কোটি ৩২ লাখ ডলার। এক বছরের ব্যবধানে আয় কমেছে ২০ শতাংশের বেশি।

মৎস্য অধিদপ্তরের খুলনা অঞ্চলের মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা লিপটন সরদার জানান, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি হয়েছে প্রায় ৯ হাজার ৭১ টন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ছিল ১৩ হাজার ২৭১ টন। অর্থাৎ প্রায় ৩ হাজার টন রপ্তানি কম হয়েছে।

বিএফএফইএর পরিচালক এস হুমায়ুন কবির বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করা চিংড়ির যথাযথ মূল্য পাচ্ছি না। ফলে চিংড়ির উৎপাদন খরচও উঠাতে পারছি না।’ 

তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে ভেনামি চিংড়ির চাহিদা ৭৮ শতাংশ। সেখানে বাগদা চিংড়ির বাজার ১১ শতাংশে নেমে এসেছে। আর গলদা চিংড়ির বাজার মাত্র ৬ শতাংশ। আন্তর্জাতিক বাজার ধরতে গেলে ভেনামি চিংড়ি চাষের বিকল্প নেই।

ফিশ ফার্ম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি মোল্লা শামসুর রহমান শাহীন বলেন, প্রাকৃতিক চিংড়ির উৎপাদন কমে গেছে। চাষের চিংড়ি তেমন কমেনি। রপ্তানি কমায় চাষিরা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে চিংড়ি চাষ থেকে অনেক চাষি মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। 

তিনি বলেন, চিংড়িখাতে সব সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন রপ্তানিকারকেরা, চাষি পর্যায়ে কোনো সুবিধা সরকারের নীতিমালায় নেই। তিনি আন্তর্জাতিক বাজারে দেশীয় চিংড়ির ব্র্যান্ডিং করার ওপর জোর দেন।

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com