আজ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে মোকা। পূর্ব বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হতে যাচ্ছে। ধীরে ধীরে এটি আজ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া অফিস এমন পূর্বাভাস জানিয়েছে। তবে এই সুস্পষ্ট লঘুচাপের প্রভাব সাগরে এখনও পড়েনি বিধায় সমুদ্র বন্দরে এবং নদী বন্দরে এখনো কোনো সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলেনি বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আরও ঘনীভূত হতে পারে। যদি আরও ঘনীভূত হয় তাহলে এটি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এক্ষেত্রে আমাদের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস অনুযায়ী, এটি যদি আরও ঘনীভূত হয় তাহলে এটি ঘূর্ণিঝড়েও পরিণত হতে পারে।
আবহাওয়াবিদ ড. আবুল কালাম মল্লিক বলেন, আমাদের গাণিতিক মডেল আছে; সেটা কক্সবাজার, টেকনাফ এসব এলাকা এবং আশপাশে মিয়ামানের এলাকাগুলো নির্দেশ করছে। তবে এটি এখনো নিম্নচাপে পরিণত হয়নি। মধ্যরাতের দিকে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এরপর এটি ধীরে ধীরে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।
এদিকে ভারতের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বুধবার নিম্নচাপটি দক্ষিণ-মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং আন্দামান সাগরের কাছাকাছি দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে। এরপর প্রথম দিকে বৃহস্পতিবার এটি উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে। এরপর গতিমুখ পরিবর্তন করে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উপকূলের দিকে আসবে।
চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের উপপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ড. মো. ছাদেকুল আলম বলেন, যদি এটি এখন উত্তর-পশ্চিম দিকে যায়, তবে বাংলাদেশ-মিয়ানমার উপকূলে আসবে। আর যদি আরও উত্তর দিকে যাওয়ার পর গতিমুখ পরিবর্তন করে তবে বাংলাদেশের উপকূলে আসবে। এক্ষেত্রে আগামী রবিবার উপকূলে উঠতে পারে।
কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বলছেন, দুটি আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল বিশ্লেষণ করে তিনি দেখেছেন, ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানার সম্ভাবনাই বেশি এবং ভোলা থেকে কক্সবাজার জেলার মধ্যবর্তী স্থান দিয়ে উপকূলে আঘাত হানার আশঙ্কা রয়েছে।
গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বলছেন, ১২ মে ঘূর্ণিঝড়টি সর্বোচ্চ শক্তিতে থাকবে এবং আমেরিকান মডেল অনুযায়ী ১৩ মে দিন শেষে বা ১৪ মে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিসের বিশেষ সতর্কবার্তায় বলা হয়, পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও দক্ষিণ আন্দামান সাগর এলাকায় অবস্থান করা চাপটি ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আরও ঘনীভূত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’ নামটি ইয়েমেনের দেওয়া। কফির জন্য বিখ্যাত স্থানীয় একটি বন্দরের নাম মোকা। কালক্রমে সেখানকার কফির নামকরণও করা হয়েছে মোকা।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ