বাংলা৭১নিউজ, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: চলতি বছরের দু’দফা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার চাকসা গ্রামের কৃষকেরা আগাম খিরার আবাদে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। আগাম এ খিরা আবাদে বেশি লাভ হওয়ায় প্রতি বছরই এ গ্রামের কৃষকেরা খিরার চাষ করে থাকেন। এই গ্রামসহ পাশের এলাকার মাটি খিরা চাষের জন্য উপযোগী। বন্যার ক্ষতি পোষাতে এবার তারা আগাম খিরা চাষ করছে বলে জানালেন ওই এলাকার কৃষকেরা। বিগত কয়েক বছর ধরে খিরা চাষে চাকসা গ্রামের চাষীরা লাভবান হচ্ছেন বলেও জানা যায়।
জানা যায়, উল্লাপাড়া উপজেলার চাকসা গ্রামের উৎপাদিত খিরা স্থানীয় আড়তদারের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, বগুড়া, রংপুর, ঝিনাইদহ, মাগুরাসহ বিভিন্ন স্থানে ট্রাক যোগে পাঠানো হয়। এবং অন্যান্য উপজেলার চেয়ে এখানে খিরা বেশী উৎপাদন হয়।
কথা হয় চাকসা গ্রামের কৃষক আব্দুল হামিদের সাথে। তিনি জানান, বন্যার ক্ষতি পোষাতে এবার ৫০ শতক বাড়তি জমিতে খিরা লাগিয়েছি। গেল বন্যায় তার ৩ বিঘা জমির ধান ধুয়ে মুছে গেছে। এজন্য আগাম খিরা চাষে উদ্যোগী হয়েছেন তিনি।
এই জমিতে সকল খরচ বাদে নূন্যতম দেড় লাখ টাকা লাভ করবেন বলে তিনি আশাবাদী।
একই গ্রামের কৃষক শাহজাহান আলী মিয়া বলেন, এবার খিরার চারাগাছ গুলো রোগে আক্রান্ত হয়েছে। লালচে হয়ে যাচ্ছে পাতা। এজন্য তিনি বেশ চিন্তিত। তবে এ ব্যাপারে কৃষি বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তিনি মনে করছেন, সকল সমস্যা সমাধান করেও এবার বেশী লাভবান হবেন।
খিরা চাষী নুরুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন ধরে খিরা চাষ করে আসছি। এবার ৭০ শতাংশ জমিতে আগাম খিরা লাগিয়েছি। পরিচর্যাও হচ্ছে ভালভাবে। অনুকূল আবহাওয়া থাকলে তিনি খিরা বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ধরেছেন প্রায় ২ লাখ টাকা। উৎপাদিত খিরা প্রতি মণ ৯শ থেকে ১ হাজার টাকা করে বিক্রি করা যায়। গত বছরের খরচের তুলনা হিসাবে তার সব মিলিয়ে খরচ হবে প্রায় ৩০ হাজার টাকা।
তিনি আরো বলেন, ২ লাখ টাকার উপরে আয় করেছি গত বছরে। খিরা উৎপাদন ও বিক্রির অর্থই উপার্জনের প্রধান উৎস আমার। এছাড়াও ধান চাষ করে থাকি। এ বছর বন্যায় সমস্ত ধান ডুবে যাওয়ায় চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তিনি। বন্যার ক্ষতি পোষাতে এবার আগাম খিরা চাষই তার কাছে বেশি লাভজনক বলে মনে করেন তিনি।
উল্লাপাড়া উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আজমল হক জানান, এ বছর উপজেলায় খিরা চাষের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৬শ হেক্টর। লাহিড়ীমোহনপুর ইউনিয়নের চাকসা এলাকায় সবচেয়ে বেশি খিরা উৎপাদিত হয়ে থাকে। এলাকার প্রায় ৫ শতাধিক কৃষক নিয়মিত খিরা চাষ করেন।
খিরা গাছ রোগাক্রান্ত হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এজন্য কৃষকদের দুশ্চিন্তার কারণ নেই। সাধারণত মাকড়পোকার আক্রমণ দেখা দেয় খিরা ক্ষেতে। কৃষকদেরকে রোগ প্রতিরোধে ভার্টিমেক্স ও এ্যকামাইট কীটনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
খিরা চাষীসহ উপজেলার সবজি চাষীদেরকে ১৩০টি দলে ভাগ করে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে এনএটিপি’র প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে বলে জানালেন এই কর্মকর্তা।
বাংলা৭১নিউজ/সিএইস