বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: তীব্র শীত উপেক্ষা করে টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমায় ইবাদত, বন্দেগি ও বয়ানের মধ্য দিয়ে প্রথম দিন অতিবাহিত করে দ্বিতীয় দিনও শেষের পথে। আজ রবিরার সকাল ১১টার আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হবে ইজতেমার প্রথম পর্ব।
এদিকে, আয়োজকদের একাংশের প্রতিবাদের মুখে ইজতেমায় যোগ না গিয়ে শনিবার দুপুরে ঢাকা ছেড়েছেন দিল্লীর মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্ধলভি।
বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের দ্বিতীয় দিনে শনিবার ফজরের নামাজের পর থেকে শুরু হয় ইসলাম ধর্মের নানা বিষয়ের বয়ান। কনকনে শীত ও হিমেল হওয়া উপেক্ষা করে লাখো মুসল্লি আলেমদের বক্তব্য শোনেন। প্রথম পর্বে ৮৮টি দেশের প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বিদেশি এবং দেশের ১৪টি জেলার মুসল্লিরা অংশ নিচ্ছেন।
রবিবার সকাল ১১টার দিকে শুরু হবে প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত। প্রতিবছর দিল্লীর মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্ধলভি আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করলেও, এবার আয়োজকদের একংশের প্রতিবাদের মুখে ইজতেমায় যোগ না দিয়ে ফিরে গেছেন। কে আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
তবে শুনা যাচ্ছে, এবার ইজতেমায় মুনাজাত পরিচালনা করবেন কাকরাইল মারকাজরে শুরা সদস্য হাফেজ মাওলানা মুহাম্মাদ যুবায়ের।
এদিকে আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে শনিবার মধ্যরাত থেকে ঢাকা সিলেট মহাসড়কের মীরেরবাজার থেকে আব্দুল্লাহপুর, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বাইপাইল থেকে আব্দুল্লাহপুর এবং ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভোগড়া বাইপাস থেকে উত্তরা পর্যন্ত যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এছাড়াও ইজতেমায় আসা মেহমানদের চিকিৎসা দিতে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের তত্ত্ববাবধানে চালু আছে ৩৪টি ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প। তীব্র শীত উপেক্ষা করে বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দিতে এসে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অন্তত ২২ জন মুসল্লি। গত দুই দিনে ময়দানে স্থাপিত ২৯টি ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প থেকে কমপক্ষে ১৫ হাজার মুসল্লি চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন।
প্রথম পর্ব শেষ হওয়ার চার দিন পর ১৯ জানুয়ারি শুরু হবে দ্বিতীয় পর্ব। একইভাবে ২১ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে দ্বিতীয় পর্ব তথা এবারের বিশ্ব ইজতেমা।
বিশ্ব ইজতেমার আয়োজক কমিটির সদস্য মুরব্বি প্রকৌশলী মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন মাওলানা হাফেজ জোবায়ের। হেদায়েতি বয়ান করবেন মাওলানা আব্দুল মতিন। গত শুক্রবার রাতে তাবলিগ জামাতের মুরব্বিদের বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত হয়।
অন্যদিকে, সুষ্ঠুভাবে বিশ্ব ইজতেমা সম্পন্ন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়েছে ব্যাপক নিরাপত্ত ব্যবস্থা। ওয়াচ টাওয়ার, সিসি ক্যামেরা এবং পুলিশ ও র্যাবের কন্ট্রোল রুম থেকে ইজতেমা মাঠের সার্বিক নিরাপত্তা মনিটরিং করা হচ্ছে। ইজতেমা মাঠের বাইরে, অলিতে-গলিতে পোশাকে-সাদা পোশাকে পুলিশ-র্যাব সদস্য অবস্থান নিয়ে বিশ্ব ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের নিরাপত্তা বিধান করছেন। এ ছাড়া ময়দানের প্রতিটি খিত্তায় এবং বিদেশি নিবাস এলাকায় রয়েছে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, আখেরি মোনাজাতকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এ ছাড়া যান চলাচলেও কিছু নিয়ন্ত্রণ থাকবে। শনিবার মধ্যরাতের আগেই ঢাকা থেকে আসা যানবাহনগুলোকে আব্দুল্লাহপুর থেকে কামারপাড়া অভিমুখে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল থেকে ঢাকাগামী যানবাহনগুলোকে ভোগড়া চৌরাস্তা এবং সিলেট থেকে ঢাকাগামী যানবাহনগুলোকে টঙ্গীর নিমতলীতে আটকে দেওয়া হবে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা তথ্য কর্মকর্তা মো. রাহাত হাসনাত জানান, ইজতেমায় অংশগ্রহণকারীদের সুবিধার্থে ১৯টি বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে। এ ছাড়া সব আন্তনগর ট্রেন টঙ্গীতে যাত্রাবিরতি করবে। বিআরটিসি দুই শতাধিক বিশেষ বাস সার্ভিস চালু করেছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচবি