বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) পূর্বাঞ্চল ও সেন্ট্রাল যোনের সকল কর্মকর্তা কর্মচারি ঈদ ছুটি বাতিল করেছে। হঠাৎ করে পাহাড়ী ঢলে আকস্মিক বন্যা দেখা দেওয়ায় বুধবার এই ছুটি বাতিল করার নির্দেশ দেন পাউবো মহাপরিচালক মাহফুজর রহমান।সরকারি ছুটি থাকায় তিনি চট্রগ্রাম, কুমিল্লা ও সিলেট জোনের চীফ ইঞ্জিনিয়য়ারদের মৌখিক নির্দেশনা পাঠান। তবে আজ বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত দাপ্তরিক আদেশ জারি হবে বলে বাংলা৭১ নিউজকে তিনি জানান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবার আকস্মিক বন্যা দেরিতে হওয়ার কারণে হাওর এলাকা অনেকাংশে রক্ষা পেয়েছে। তা না হলে গত বছরের চেয়ে এবার পরিস্থিতি আরও খারাপ হতো। হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, সিলেট ও নেত্রোকোনার হাওর এলাকায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর কয়েকগুন বেশি অর্থ বরাদ্ধ দেয়া হলেও কাজের গাফিলতি ছিল প্রচুর।
বিশেষ করে সুনামগজ্ঞেই শুধুমাত্র মাটি কাটার কাজ নিয়ে যে ভয়াবহ অনিয়ম হয়েছে তার তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে অনেক অনিয়মের চিত্র। জানা যায়, নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দীকের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে সেখানে সরকারি অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহৃত হয়নি।
নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দীক অত্যন্ত গুয়ার প্রকৃতির হওয়ায় এবং তার স্টাফদের প্রকাশ্যে অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও মারধর করার কারণে সেখানে তার কাজের অনিয়ম নিয়ে কারো পক্ষে কথা বলা সম্ভব ছিল না। এরপরও যারাই কথা বলতে গেছে তাদেরকেই নানাভাবে নাজেহাল হতে হয়েছে।
জানা গেছে, সুনামগজ্ঞে শুধুমাত্র হাওর সার্ভের নামেই ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। অথচ এই পরিমান টাকা ব্যয় করার কোন কারণই ছিল না। কারণ, এখানকার হাওর সার্ভের ৫০ ভাগ কাজ আগেই করেছিল পাউবো’র এসও, এসডিরা।
শুধু তাই নয়, সরকারি অর্থ সাশ্রয় করতে এসওদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, এখানে পিএসআই এর মাধ্যমে টেন্ডারের প্রয়োজন নেই। যেহেতু এখানকার অর্ধেক সার্ভের কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে।বাকিটাও আমরাই করে দিতে পারবো।
কিন্ত নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দীক কোন কথাই শুনেনি। উল্টো তিনি একজন এসডিকে মারধর করেছেন। দু’জন সার্ভেয়ার ও ড্রাউভারকেও তিনি প্রহার করেছেন।যা সার্ভিস রুলের পরিপন্থী। তার এই অন্যায় বিষয়গুলো নিয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে কোন ধরণের ব্যবস্থা না নেওয়ায় এই নির্বাহী প্রকৌশলী এখন একেবারেই বেপোরোয়া।
জানা যায়, পাউবো’র এসওরা সার্ভে করায় সুনামগজ্ঞ হাওর এলাকায় প্রতি ক্রস সেকশনে খরচ যেখানে পড়েছে ২শ’ টাকা(১শ’ টটাকা প্রি ওয়ার্ক ও ১শ’ টাকা পোষ্ট ওয়ার্ক)। সেখানে টেন্ডারের মাধ্যমে প্রতি ক্রস সেকশনে খরচ দেখানো হয়েছে ১২৫০ টাকা। টেন্ডারের মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগ করে এলএসটি (ল্যান্ড সার্ভে টিম) মাধ্যমে এই কাজ করা হয়েছে।
এ ব্যপারে নির্বাহী প্রকৌশলীর বক্তব্য জানার জন্য তাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এছাড়াও সুনামঞ্জে বাঁধ নির্মাণের কাজ নিয়েও অনেক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। বাঁধের কাজ সম্পন্ন না করেও বিল উত্তোলন করার অভিযোগও রয়েছে। প্রকৃতির কারণে এবার সুনামগঞ্জ সহ হাওর এলাকা বড় ধরণের বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান। তারা বলেন, এসব বিষয় নিয়ে তদন্ত হলেই প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসবে।
পাউবো’র টাকা যে সঠিকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে না, মনু, খোয়াই ও ধলাই নদীর বাঁধ বিভিন্ন অংশে ভেঙ্গে যাওয়াটাও তার একটি বড় কারণ। প্রতিবছরই এসব বাঁধ মেরামতের নামে অর্থ বরাদ্দ করা হয়। কিন্ত কাজের কাজ কিছুই হয়না। বাড়ার মধ্যে বাড়ে শুধু পাউবো’র দূর্নাম।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে পাউবো মহাপরিচালক মাহফুজুর রহমান বলেন, কোন ধরণের অনিয়ম হয়ে থাকলে তা খতিয়ে দেখা হবে এবং কা্িুকে ছাড় দেয়া হবে না।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচবি