বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা চালু করতে হবে। ভোটের আগে সংসদ ভেঙে দিতে হবে। সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে এবং ভোটের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মুখে গণতন্ত্র ও মানবতার কথা বলে। আর কর্মে তারা ভয়ংকর রকমের স্বৈরাচারী, মানবতাহীন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘কথায় মনে হয় যেন তাদের (আওয়ামী লীগ) মতো ভালো মানুষ, গণতান্ত্রিক, মানবতাবান মানুষ আর নেই। অথচ কাজে এই ১০ বছরের মধ্যে ভয়ংকর সমাজ তৈরি করেছে তারা। এমন সমাজ তৈরি করছে যেখানে সাংবাদিকদের বিভক্ত করে দিয়েছে। এই ডাবল স্টান্ডার্ডটি আমাদের শেষ করতে হবে।’
বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমাদের একটি জাতীয় ঐক্য তৈরি করতে হবে। তা না পারলে আমরা এই ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তি পাব না। যদি ঐক্যবদ্ধ হয় তাহলে মুক্তি পাব। সমগ্র গণতান্ত্রিক দল ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনি তো এমনিতে সবাইকে জেলে ঢুকিয়ে দিচ্ছেন। খুলনা সিটি নির্বাচনে প্রচারণার জন্য বাইরের লোক গেলে গ্রেপ্তার করা হবে। নির্বাচনের কোন বিধিতে এটা আছে? নির্বাচনী আইনে আছে ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে বহিরাগতরা থাকতে পারবে না।’
সরকারকে আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘আপনারা বসেন, কথা বলেন। সংকট সমাধান করেন। আমরা তো বলিনি আমাদের সব দাবি মেনে নিতে হবে। এটা না করে যদি নির্বাচনে যান, তাহলে জনগণ তা মেনে নেবে না। এবার ২০১৪ সালের মতো নির্বাচন মানুষ মেনে নেবে না। দেখেন কত গুম, খুন করবেন করেন। দেখি কতজনকে জেলে দিতে পারেন।’
গণমাধ্যমের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ হলো মুক্ত গণমাধ্যম। শরীরে যেমন অক্সিজেন না থাকলে শরীর বাঁচে না, তেমনিভাবে মুক্ত গণমাধ্যম না থাকলে গণতন্ত্র বাঁচে না। পাকিস্তান আমলেও লেখার জন্য, কথা বলার জন্য সংগ্রাম করতে হয়েছে। যে বিষয়টি নিয়ে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, আমার স্বাধীনতা সেই চিন্তা থেকে যুদ্ধ করেছি। সেই চেতনা, আশা আকাঙ্ক্ষার কী অবস্থা আজকে। এখানে কথা বললে জেলে যেতে হয়, গুম হতে হয়। দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়। প্রতিদিন নিহত হচ্ছে। হুমকি-ধমকি দিচ্ছে সাংবাদিকদের। সাংবাদিকরা এক হলে সরকার টিকে থাকতে পারবে না। এরশাদকে ছয়দিনের মধ্যেই ফেলে দিয়েছিলেন। সাংবাদিকরা যদি চায় এ সরকার পড়ে যাবে।’
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, বিএফইউজের মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি কাদের গানি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, সহসভাপতি শাহীন হাসনাত প্রমুখ।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস