বাংলা৭১নিউজ, সাখাওয়াত হোসেন বাদশা: টাঙ্গাইল সদর থেকে বিশ কিলোমিটার দূরে এলাসিনে ধলেশ্বরী নদীর উপর বর্তমান সরকার যে সেতুটি করেছে-তা নাগরপুর উপজেলাবাসীর যুগ যুগের স্বপ্নকে পূরণ করেছে। এই নদীর উপর এখন দু’টি সেতু। অপরটি কেদারপুর বাজার সংলগ্ন ধলেশ্বরী নদীর উপর।
যোগাযোগ ব্যবস্থার এমন অগ্রগতির সুবাদে এখানকার অধিবাসীরা আর বিচ্ছিন্ন কোন দ্বীপে বসবাস করছে-এমনটি আর মনে হবে না। কিন্ত তাই বলেতো আর নদী ভাঙ্গন থেমে নেই। বরং কয়েক শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতু দু’টি রক্ষার প্রয়োজনেও নদীর আশপাশের এলাকাগুলোকে ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষা করা জরুরি।
ধলেশ্বরীতে এলাসিনের ওপর যে সেতুটি রয়েছে-তার দুই কিলোমিটার ভাটিতে নদী যেভাবে ভাঙ্গছে, এই ভাঙ্গন রোধ করা না গেলে তা শুধু এখানকার এলাকাবাসীর জন্যই ক্ষতি বয়ে আনবে এমনটি নয়; এটি এলাসিন সেতুর জন্যও বিপদজনক। এ বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিয়েই প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, স্থানীয় সংসদ সদস্য খন্দকার আব্দুল বাতেন এবং স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সহায়তায় পানি উন্নয়ন বোর্ড টাঙ্গাইল একটি প্রকল্প প্রনয়ন করে। প্রকল্পটির টেন্ডার ইভ্যালুয়েশন শেষ পর্যায়ে।
সিদ্ধান্তের অভাবে ইভ্যালুয়েশন সম্পন্ন হচ্ছে না। জানা যায়, দরপত্রে অংশগ্রহকারিদের মধ্যে কাউকে এই কাজটি দেয়া হবে (ডিপিএম), নাকি এই কাজটি সরাসরি সেনাবাহিনীকে (ওটিএম) দিয়ে করানো হবে-সে সিদ্ধান্ত এখনও আঁটকে আছে। ফলে এলাসিন সেতুর ভাটিতে গাছকুমিল্লী থেকে ঘোনাপাড়া পর্যন্ত ২ দশমিক ১৩ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণে ১১৪ কোটি টাকার কাজটি করা সম্ভব হচ্ছে না।
এতে করে ঝুঁকির মুখে রয়ে গেছে এখানকার ঘনবসতিপূর্ন এলাকার লোকজন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠাণ ও এলাসিন বাজার। এই বাঁধটি হলে অত্র এলাকার ৫ লাখ হেক্টর আবাদি জমি ধলেশ্বরী নদী গর্ভে বিলীন হওয়া থেকে রক্ষা পাবে। এছাড়াও টাঙ্গাইল সদর থেকে এলাসিন সেতু সংলগ্ন বাজার হয়ে যে সড়কটি লাউহাটি, কেদারপুর হয়ে কালামপুর পর্যন্ত এসেছে সেই যোগাযোগ ব্যবস্থাও নষ্ট হয়ে যাবে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, গত বর্ষায় ভাঙ্গনে এখানকার অনেক কৃষি জমি, স্থ্পানা, বসতবাড়ী ও সড়কের একাংশ নদী গর্ভে চলে গেছে। প্রাথমিকভাবে এই ভাঙ্গন ঠেকানো হয় সিনথেটিক ব্যাগ দিয়ে। একাজে ব্যয় হয় সাড়ে ৭ লাখ টাকা। প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এই এলাকার কাজ সরজমিন পরিদর্শন করেন।
এব্যপারে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচারক মো. মাহফুজুর রহমান বাংলা ৭১নিউজকে জানান, কাজটির ব্যপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। তবে কোন পদ্ধতিকে এই টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে-সে ব্যপারে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
আর পানি উন্নয়ন বোর্ড টাঙ্গাইলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহজাহান রহমান বাংলা ৭১নিউজকে জানান, আমরা ৫টি দরদাতার মধ্যে কোন প্রতিষ্ঠাণটি সর্বনিম্ন হয়েছে তা জানিয়েছি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে। এখন বোর্ড থেকে সিদ্ধান্ত জানালেই আমরা এ মাসের মধ্যেই সংশ্লিষ্ট ঠিকা্দারকে কাজের ওয়ার্ক অর্ডার দিতে পারবো।
তিনি বলেন, বর্ষা আসার আগেই কাজটি শুরু করা না গেলে নতুন করে আরও ভাঙ্গন দেখা দিবে এবং ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার পরিধি বাড়বে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচবি