সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৫:১২ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
টস জিতে জিম্বাবুয়েকে ব্যাটিংয়ে পাঠালো বাংলাদেশ ছয় মাসে রাজস্ব আহরণ বেড়েছে ১৩.৯ শতাংশ: অর্থমন্ত্রী সোনার দাম আরও বাড়লো ব্যর্থতা ঝেড়ে বিশ্বকাপ রঙিন করার প্রত্যাশা জ্যোতির পালিয়ে বাংলাদেশে এলেন আরও ৮৮ বিজিপি সদস্য এবি ব্যাংক পিএলসি যশোরে স্মার্ট কার্ডে নারী উদ্যোক্তা ঋণ স্মরণে বঙ্গবন্ধু ঢাকায় আইওএম মহাপরিচালক অ্যামি পোপে তীব্র তাপপ্রবাহের পর হবিগঞ্জে ঝড়-শিলাবৃষ্টি গুচ্ছের বি ইউনিটের ফল প্রকাশ তাপপ্রবাহ এবারই শেষ নয়, প্রস্তুতি শুরুর পরামর্শ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর হাওরের প্রায় শতভাগ বোরো ধান কাটা শেষ ২৪ ঘণ্টায়ও নেভেনি সুন্দরবনের আগুন, সময় লাগবে ২-৩ দিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়ছে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ সরকারি সফরে অস্ট্রেলিয়া গেলেন বিমান বাহিনী প্রধান সরকার তৃণমূল মানুষের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে : প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকের উপর হামলা, প্রতিবাদে ক্র্যাবের মানববন্ধন উপজেলা নির্বাচনও বর্জন করুন: রিজভী গ্যাস পাচ্ছেন গোপালগঞ্জবাসী অপারেশনের নামে হাত-পা কেটে পৈশাচিক আনন্দ পেতেন মিল্টন সমাদ্দার আশ্রমকাণ্ডে দায় এড়াতে পারেন না মিল্টনের স্ত্রী

অস্বাভাবিক হারে নামছে ভূগর্ভস্থ স্তর, গভীর নলকূপেও মিলছে না পানি

রাজশাহী প্রতিনিধি:
  • আপলোড সময় বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
  • ৫ বার পড়া হয়েছে

তীব্র দাবদাহে রাজশাহীর তানোর ও বাঘা উপজেলার বেশকিছু গ্রামে দেখা দিয়েছে পানি সংকট। নিচে নেমে গেছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর। এ অবস্থায় দেড় থেকে দুই কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে টিউবওয়েল থেকে পানি আনতে হচ্ছে তাদের।

সাম্প্রতিক সময়ে বরেন্দ্র অঞ্চলে কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। তিনটি মৌসুমের পুরো চাষাবাদ হয়েছে ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহারে। গবেষকরা বলছেন, বৃষ্টির অভাবে বর্ষা মৌসুমে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর স্বাভাবিক না হওয়া ও নির্বিচারে পানি তোলায় এ অঞ্চলে তাপপ্রবাহের সময়সীমা বেড়েছে। এতে কৃষিকাজ ও খাওয়ার পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার (ওয়ারপো) তথ্য বলছে, রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলের ৭১ শতাংশ এলাকা মাঝারি, উচ্চ ও অতিউচ্চ পানি সংকটাপন্ন। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে কম বৃষ্টিপাত, দীর্ঘস্থায়ী খরা ও ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের কারণে পানির স্তর ক্রমশ নিচে নামছে। গত গ্রীষ্মে রাজশাহীর তানোর এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমেছে ১১৩ ফুট পর্যন্ত। ভূগর্ভস্থ পানির পুনর্ভরণ (স্বাভাবিক) না হওয়ায় গড়ে এ অঞ্চলে চার ফুট করে নেমেছে পানির স্তর। সেইসঙ্গে অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে তাপমাত্রা।

গবেষণার তথ্যে বলা হয়, ১৯৮৫ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত বরেন্দ্র অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানির গড় স্তর ছিল ২৬ ফুট নিচে। খাওয়ার পানি ছাড়াও কৃষিজমিতে সেচ এবং মাছচাষে অতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করায় ২০১০ সালে পানির গড় নিম্নস্তর ছিল ৫০ ফুট। ২০২১ সালে ভূগর্ভস্থ পানির গড় নিম্নস্তর আরও নিচে নেমে দাঁড়ায় ৬০ ফুটে।

খরায় তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নে পানি সংকট সবচেয়ে বেশি। এখানকার বাসিন্দারা প্রায় এক কিলোমিটার দূর থেকে পানি সংগ্রহ করছেন তাদের গৃহস্থালি কাজ ও খাওয়ার জন্য। একই চিত্র বাঘা উপজেলার কয়েকটি গ্রামে। টিউবওয়েল ও ডিপ টিউবওয়েলেও উঠছে না পানি। এসব গ্রামের মানুষকেও পানি সংগ্রহের জন্য ছুটতে হচ্ছে দূর-দূরান্তে।

এদিকে পানির অভাবে ও চৈত্রের খরতাপে কৃষিজমি ফেটে চৌচির। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় সেচ দেওয়াও সম্ভব হচ্ছে না।

পাঁচন্দর ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুর সবুর বলেন, ‘খাবার পানি ও গৃহস্থালির কাজের জন্য পানি সংকট চরমে। ফসলের ফলন নিয়েও শঙ্কার শেষ নেই। গত ১০ দিন ধরে পানি নিতে যেতে হচ্ছে পাশের গ্রামে।’

তানোরের মাহালিপাড়ার বাসিন্দা মর্জিনা বেগম। তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে পানি পাওয়া যায় না। পাশে যাদের ডিপ (ডিপ টিউবওয়েল) আছে, ট্যাংক আছে তাদের কাছে থেকে খাবার পানি নিয়ে আসছি। প্রতিদিন সময় করে ৪-৫ বার পানি আনতে হচ্ছে।’

একই এলাকার ইদ্রিস আলী বলেন, ‘এমন গরম পড়ছে যে, মনে হচ্ছে আগুনের হলকা শরীরে ফুটছে। তীব্র লোডশেডিং আর দাবদাহে ফসল নিয়ে শঙ্কার শেষ নেই। পানি তো নেই-ই। আশপাশের ডিপ টিউবওয়েলেও পানি উঠছে না।’

বাঘা উপজেলার চক রাজাপুর এলাকার বাসিন্দা মো. মোস্তাকিম। তিনি বলেন, ‘আমাদের এলাকায় পানি পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতিদিনই খাবার পানির জন্য অন্য এলাকায় ছুটতে হচ্ছে। আসলে পানির স্তর আনেক নিচে নেমে গেছে। ফলে আমাদের এখানে পানি উঠছে না। তাই বাধ্য হয়েই পাশের এলাকা থেকেই পানি আনতে হচ্ছে।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. চৌধুরী সারওয়ার জাহান বলেন, অনাবৃষ্টি, তাপপ্রবাহ, প্রচণ্ড খরায় রাজশাহী অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নামছে দ্বিগুণ হারে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী ২৫-৪০ বছরের মধ্যে এ অঞ্চলে মাটির নিচে পানি থাকবে না।

সমস্যা সমাধানে পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, বরেন্দ্র অঞ্চলের সব বিল খনন করে পানির আধার তৈরি করতে হবে। ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহার করে চাষাবাদ করলে ভূগর্ভস্থ পানির চাপ কমবে। অধিক সেচনির্ভর বোরোর পরিবর্তে কম সেচের ফসল আবাদ করতে হবে। বরেন্দ্র এলাকায় প্রচুর বৃক্ষরোপণ করতে হবে, তাহলে বার্ষিক বৃষ্টিপাত বাড়বে। বৃষ্টিপাত বাড়লে পানির স্তর স্বাভাবিক থাকবে।

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com