বাংলা৭১নিউজ, মাহবুব রহমান সুমন, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : ‘মোদের গরব মোদের আশা আ মরি বাংলা ভাষা।’ প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি এলে গোটা বাঙ্গালী জাতি শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ এবং নানা আয়োজনের মাধ্যমে ভাষা শহীদদের স্মরণ করে ।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ দিবসে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। অথচ কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে বেশির ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই কোন শহীদ মিনার। ফলে ভাষা আন্দোলনসহ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে অজানা থেকে যাচ্ছে।
ভাষা শহীদের স্মৃতি নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্য একটি মাধ্যম আছে সেটি হল শহীদ মিনার। প্রতি বছরে এই শহীদ মিনারে বিভিন্ন জাতীয় দিবসে ফুল দিয়ে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় ও স্বরণ করি তাদের আত্মত্যাগের মহিমাকে।
উপজেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সুত্রে জানা গেছে, মোট ২০৮ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৪৯টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৪ টি, মাদ্রাসা ১৫ টি, কলেজ ১৩টি। এর মধ্যে ১৫ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে তারা বিভিন্ন জাতীয় দিসবসহ সভা সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পালন করে থাকে।
পানিমাছকুটি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাধান শিক্ষিকা মুক্তা শেখ বলেন, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকলে এ প্রজন্মের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা জাতীয় দিবসগুলো পালনের মাধ্যমে এদেশকে জানতে পারবে। শহীদ মিনার নির্মানে স্থানীয় ও প্রশাসনিক সাহায্য সহযোগীতা কামনা করি।
পূর্ব চন্দ্রখানা বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিনোদ চন্দ্র রায় জানান,প্রতিষ্ঠানের অর্থের অভাবে শহীদ মিনার করা সম্ভব হচ্ছে না । তবে প্রতি বছর অস্থায়ী ভাবে শহীদ মিনার তৈরী করে শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো হয়।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার অধিকারীর জানান,যে সব বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার আছে পাশ্ববর্তী প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সেই শহীদ মিনারে গিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে। তিনি আর বলেন, সরকারি বাজেট আসলে প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মান করা হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডা মজিবর রহমান বাংলা৭১নিউজ-কে জানান, আমাদের উপজেলায় দুই শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। উপজেলা সদরের নাম ধারী তিনটি প্রতিষ্ঠান যেমন, জছিমিয়া মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, ফুলবাড়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও ফুলবাড়ী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের মত প্রতিষ্ঠানেও শহীদ মিনার নেই যা দেখে মফস্বলের প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা দেখে শিখবে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নিবার্হী অফিসার দেবেন্দ্র নাথ ঊরাঁও বাংলা৭১নিউজ-কে জানান, যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই সেই সব প্রতিষ্ঠানের তালিকা শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে নেওয়া হবে এবং এ তালিকাটা নিয়ে মাসিক সমন্বয় মিটিংয়ে আলোচনা করা হবে।
ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্য ও গৌরবের ইতিহাস জানতে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার গড়ার দাবি ফুলবাড়ীবাসীর।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস