অর্থপাচারকারীর তালিকায় শুধুমাত্র ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী নেতাদের নাম প্রকাশ হচ্ছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বুধবার (১০ মে) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন তিনি।
রিজভী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংকসহ দেশের সব ব্যাংক গিলে ফেলেছে ক্ষমতাসীন দলের রাঘব-বোয়ালরা। অর্থপাচারকারীদের নাম প্রকাশ হচ্ছে কেবলমাত্র ক্ষমতাসীন দলের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং আওয়ামী নেতাদের।
এসময় রিজভী প্রশ্ন রেখে বলেন, ঋণের নামে ব্যাংক খালি করলো কারা? বিপুল রিজার্ভের তথ্য দিয়ে জোরেশোরে ঢোল বাজালেন প্রধানমন্ত্রী, সেই রিজার্ভ এখন তলানিতে ঠেকলো কীভাবে?
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল মিথ্যাচার করছেন বলে দাবি করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব।
তিনি বলেন, ক্ষণে ক্ষণে তাদের বক্তব্য পরিবর্তন হলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আগামী নির্বাচন হবে না। দেশ-বিদেশের মানুষও তা মেনে নেবে না।
রিজভী বলেন, ক্ষমতাসীন দলের লুটেরা ও দুর্নীতিবাজ চক্র আয়েশি জীবন কাটালেও সাধারণ মানুষের এখন ‘নুন আন্তে পান্তা’ ফুরায় অবস্থা। সরকারের লোকজনের সীমাহীন দুর্নীতির কারণে দ্রব্য, সার-বীজ, কীটনাশকসহ জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। তাপদাহে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে জনজীবন নাভিশ্বাস।
তিনি আরও বলেন, এই তীব্র দাবদাহে শহরে ৫-৬ ঘণ্টা এবং গ্রামাঞ্চলে ১২-১৪ ঘণ্টা লোডশেডিং চলছে। নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের জীবন বিপর্যস্ত। এরমধ্যে আবারও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা চলছে। এরইমধ্যে দেড় বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে প্রায় ৭৪ শতাংশ। ডলারের বিনিময় হার অস্বাভাবিক বেড়েছে। ব্যাংকগুলো লুটপাট করে দেউলিয়া করে দেওয়া হয়েছে।
বিএনপির এ নেতা বলেন, দেশকে একটি পারিবারিক জমিদারিতে পরিণত করে ১৮ কোটি মানুষকে দ্বিতীয় শ্রেণির প্রজা বানানো হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে নির্বিচারে দলীয়করণ, মানবাধিকার হরণ, নানা কালাকানুনের মাধ্যমে কণ্ঠের টুঁটি চেপে ধরা হয়েছে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সমালোচনা করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, এই আইনে নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীসহ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের অসংখ্য শিক্ষার্থী এখনো কারাগারে। কেবলমাত্র সরকারের সমালোচনা করার জন্য গত কয়েক মাসে প্রায় দুই শতাধিক গণমাধ্যম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে দেশে মানুষ ন্যায়বিচার পাচ্ছে না দাবি করে তিনি বলেন, দলীয়করণের রাজনীতি গণতান্ত্রিক রাজনীতি নয়। সুবিচার নিশ্চিত করতে হলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিরোধীরা শত্রুদল নয়।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ