বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা : বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ব্যবসায় প্রশাসনের চতুর্থ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী অমিত সাহা হত্যা মামলায় দুজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত।
আজ ঢাকার ১নং দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি হলেন- আফতাব আহমেদ শিহাব এবং আল আমিন ইসলাম পিন্টু। অপর আসামি রুহুল আমিন রুবেলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত তিনজনই অমিতের বন্ধু।
দণ্ডবিধির ৩৯৪/৩৪ ধারায় শিহাব, পিন্টু এবং রুবেলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তাদেরকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে তাদেরকে আরো ছয় মাসের সশ্রম কারাভোগ করতে হবে।
দণ্ডবিধির ৪১১/৩৪ ধারায় এ তিনজনকে তিন বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। জরিমানা অনাদায়ে তাদেরকে তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, ‘বন্ধু’ শব্দটির অর্থ যে কিনা শত্রু নয় এবং যার ওপর বিশ্বাস রাখা যায়। বন্ধুত্ব হচ্ছে মমত্ব, আনুগত্য, ভালবাসা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা, আস্থা ও গভীর বিশ্বাসের মিশ্রণ। বন্ধুত্বের মধ্যে লোভ-লালসা থাকবে কেন? কি অপরাধ ছিল অমিত সাহার এবং তার পরিবারের? বন্ধু নির্বাচনই কি তার অপরাধ ছিল? নাকি অমিত সাহার পরিবারের ভুল ছিল বন্ধু নামীয় শত্রুদের সঙ্গে অমিত সাহাকে মিশতে দেওয়া। বন্ধু নির্বাচন কখনই ভুল হবে না যদি বন্ধুটির মাঝে মানবিক গুণাবলি ও মূল্যবোধ থাকে, যদি বন্ধুটির মনের মাঝে লোভ-লালসা না থাকে। এক বন্ধু অন্য বন্ধুর জীবনের হুমকি হয়ে দাঁড়াবে সেই বন্ধুত্ব নাইবা হোক। নিহত অমিত সাহার বন্ধুদের দ্বারা নৃশংসভাবে হত্যা ‘বন্ধুত্ব’ শব্দটিকে কলঙ্কিত করেছে।
পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, আসামিরা বন্ধুত্বের পরিচয় দিয়ে যে নৃশংস ঘটনার অবতারণা করেছে তার পুনরাবৃত্তি না হোক আদালত তা কামনা করে। সে কারণে আসামিদেরকে তাদের কৃতকর্মের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান যুক্তিসম্মত। এতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে বলে আদালত মনে করে।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ২১ নভেম্বর আসামিরা অমিত সাহাকে তাদের পল্লবীর ভাড়া বাসায় খুন করে। হত্যার পর তার লাশ সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়। ওই হত্যাকাণ্ডের পর অমিতের বাবা শ্যামল চন্দ্র ভূঁইয়া পল্লবী থানায় মামলা করেন।
বাংলা৭১নিউজ/এন