বাংলা৭১নিউজ, রবিউল কবির মনু, গাইবান্ধা প্রতিনিধি : গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নে সরকারী প্রকল্পের আওতায় সংস্কার করা রাস্তার উপর দিয়ে অবৈধ্য ট্রাক্টর (মহেন্দ্র) চলাচলে গর্তের সৃষ্টিসহ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে ট্রাক্টর মালিকের বিরুদ্ধে জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার মেলেনি। এতে করে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে, ট্রাক্টর মালিক সাইফুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে অভিযোগটি ধামাচাপাসহ ভিন্নদিকে প্রবাহিত করতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান ম-লের সাথে দ্বন্ধ-সংঘাতের চেষ্টা চালাচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে বিচ্ছিন্ন ভাবে চেয়ারম্যান ও সাইফুলের পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনাও দেখা দেয়।
স্থানীয় একাধিক নারী-পুরুষ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ‘জামালপুর বাজারস্থ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছনের কাঁচা রাস্তাটি সংস্কার কাজ চলছিলো। সংস্কার চালাকালে সাইফুলের মাটি বহনকারী ট্রাক্টর অবাধে আসা যাওয়া করায় রাস্তার সম্পন্ন মাটি উঠে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বারবার ট্রাক্টর চলাচলে বাঁধা দেওয়া হলেও ট্রাক্টর চলাচল বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। ফলে বেহাল রাস্তা দিয়ে চলাচলে দূর্ভোগ পোহাতে হয় শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীকে। তাছাড়া ট্রাক্টর চলাচলে স্কুলে আসা-যাওয়ার সময় কয়েকবার দূর্ঘটনার সম্মখিন হতে হয় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। সেই সাথে ধুলাবালি উড়ে পরিবেশ নষ্টসহ জামা-কাপড় নষ্ট হওয়ায় বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষসহ শিক্ষার্থীরা। এসব বিষয়ে কেউ প্রতিবাদ করলে তাদের দেওয়া হয় হুমকি। দ্রুত অভিযুক্ত ট্রাক্টর মালিক সাইফুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের নিকট দাবি জানিয়েছেন ভূক্তভোগীরা’।
জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান ম-ল বলেন, ‘কর্মসৃজন প্রকল্পের আওতায় ওই রাস্তা সংস্কার করা হচ্ছিলো। কিন্তু সাইফুল তার ট্রাক্টর দিয়ে অবাধে মাটি আনা নেওয়া করায় সম্পন্ন মাটি উঠে গর্তসহ ক্ষতিগ্রস্ত হয় রাস্তাটি। সম্প্রতি ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার গর্তে মাটি বোঝাই ট্রাক্টরটি পড়ে গেলে সাইফুলের উপর ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেন শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। স্থানীয়দের কাছে মৌখিক অভিযোগ পেয়ে তাৎক্ষণিক বিষয়টি পুলিশ ও প্রশাসনকে জানানো হয়। পরে পুলিশ এসে ট্রাক্টরটি আটক করে ইউপি সদস্য মনজুর জিম্মায় রাখেন। এ নিয়ে সাইফুল তার পক্ষের লোকজন নিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে পরিষদ গিয়ে তার উপর হামলার চেষ্টা করেন। শুধু তাই নয়, সাইফুল বিষয়টি ভিন্নখাতে নিতে উল্টো দ্বন্ধ-সংঘাতে জড়ানোর অপচেষ্টা করছে। ঘটনার সম্পর্কে পুলিশ ও প্রশাসন অবগত থাকলেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি’।
এ বিষয়ে সাদুল্যাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘উভয় পক্ষ বসে বিষয়টি সমাধান করার কথা। সমাধান না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাদুল্যাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রহিমা খাতুন জানান, এ উপজেলায় চলাচলকারী ট্রলি, ট্রাক্টরসহ অবৈধ্য সকল যানবাহন আটকসহ মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অভিযান অব্যহত আছে।
তবে অভিযোগের বিষয়ে ট্রাক্টর মালিক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘শুধু তার ট্রাক্টর নয়, বিভিন্ন সড়কে অসংখ্য ট্রলি ও ট্রাক্টর চলাচল করে। কিন্তু তারপরেও শুধুতার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে। এছাড়া হামলা ও দ্বন্দ-সংঘাতে জড়ানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি’।
এদিকে, শুধু জামালপুর ইউনিয়নে নয়, অবৈধ্য ট্রলি ও ট্রাক্টরের (স্থানীয়ভাবে দানব নামে পরিচিত) ভয়াল থাবায় শহর থেকে গ্রামীণ জনপদের প্রত্যেক কাঁচা-পাকা সড়কগুলোর এখন বেহাল অবস্থা। অদক্ষ চালকের হাতে এসব চলাচল করায় ঘটছে দূর্ঘটনাও। অথচ পুলিশ ও প্রশাসন দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা না নেওয়ার দিনদিন সংখ্যা বেড়েই চলেছে। পুলিশকে ম্যানেজ করেই এসব চলাচল করে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস