সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ে বসতঘরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মা ও মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ওই পরিবারের আরও চারজন আহত হয়েছেন।
রোববার (২০ আগস্ট) দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার জাফলংয়ের রসুলপুর গ্রামের ইয়াকুব মিয়ার দোকান ও বসতঘরে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আগুনে পুড়ে নিহতরা হলেন ইয়াকুব মিয়ার স্ত্রী জেসমিন আক্তার (৩০) ও মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (১৩)। একই ঘটনায় দগ্ধ হয়েছেন ইয়াকুব মিয়া, তার মা এবং দুই সন্তান জুবাইর ও জুনাইদ।
স্থানীয়রা আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। বর্তমানে তারা সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয়রা জানান, ইয়াকুব মিয়া একই ঘরের একটি কক্ষে মুদির দোকান এবং অপর কক্ষে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন। রোববার রাতে যথারীতি দোকান বন্ধ করে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে হঠাৎ করে তার ঘরে আগুন ধরে যায়। আগুন দোকানে মজুত রাখা গ্যাস সিলিন্ডারের সংস্পর্শে এলে আগুনের তীব্রতা ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। মুহূর্তেই পুরো ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে পরিবারের সবাই দগ্ধ হন।
অগ্নিকাণ্ডের পরপরই স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যরা প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে ইয়াকুব মিয়ার স্ত্রী জেসমিন বেগম ও মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ইয়াকুব মিয়ার প্রতিবেশী জোলহাস মিয়া বলেন, ‘আমরা পরিবার নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ চিৎকার শুনে উঠে দেখি ইয়াকুবের পুরো ঘরে আগুন ধরে গেছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে। স্থানীয়দের প্রচেষ্টায় অল্পের জন্য আমার নিজের বসতঘরও আগুন থেকে রক্ষা পেয়েছে।’
স্থানীয় ইউপি মেম্বার ও পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা ঘটনাস্থলে গেছি। ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যরা এসে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিলুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে নিহত প্রত্যেককে দাফনের জন্য ২০ হাজার টাকা এবং আহত প্রত্যেককে চিকিৎসার জন্য ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
গোয়াইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম নজরুল ইসলাম বলেন, কিভাবে আগুনের সূত্রপাত হলো বিষয়টি নিয়ে দমকল বাহিনী ও পুলিশ তদন্ত করে দেখছে। তবে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে এটি একটি দুর্ঘটনা।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ