বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমায় বাংলাদেশে চলতি বছর দ্বিতীয়বারের মতো দাম সমন্বয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। অক্টোবরের মধ্যেই দাম কমানোর কথা জানিয়েছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।
আজ রাজধানীর শাহবাগে মেঘনা পেট্রল পাম্পে ভ্রাম্যমাণ আদালতের পরিচালনা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান প্রতিমন্ত্রী। তবে কী হারে তেলের দাম কমানো হবে সে বিষয়ে কিছু জানাননি তিনি। মন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরলেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশন ও কানাডা সফরে দুই সপ্তাহের সফরে গত ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ২৬ সেপ্টেম্বর তার দেশে ফেরার কথা থাকলেও চারদিন পিছিয়েছে ফেরা। শুক্রবার দেশে আসবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের নির্ধারিত সূচি রয়েছে।
গত দুই বছর ধরেই বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম পড়তির দিকে। গত তিন মাসে দাম কিছুটা বাড়লেও অশোধিত তেলের দাম এখনও ব্যারেলপ্রতি ৫০ ডলারের নিচে। আগামী দুই বছরে তেলের দাম খুব বেশি বাড়বে না বলেও পূর্বাভাস মিলেছে।
তেলের দাম কমায় দুই বছর ধরেই সরকারের ব্যাপক লাভ হচ্ছে। বাংলাদেশ পেট্রলিয়াম করপোরেশন দুই বছরে ১২ হাজার কোটি টাকারও বেশি লাভ হয়েছে। তবে বিপিসির পুঞ্জিভূত লোকসান এখনও রয়ে গেছে কয়েক হাজার কোটি টাকা।
বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমায় বাংলাদেশেও মূল্য সমন্বয়ের দাবি জানিয়ে আসছিলেন অর্থনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ীরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকার গত এপ্রিলে ধাপে ধাপে তেলের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
এর আগে গত ২৪ এপ্রিল তেলের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়। সেদিন পেট্রল ও অকটেনের দাম লিটারে ১০ টাকা এবং ডিজেল ও কেরসিনের দাম কমানো হয় তিন টাকা।
সে সময় তেলের দাম কমিয়ে এর প্রভাব পর্যালোচনা করে দাম কমানোর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানিয়েছিল সরকার। তবে এই তেলের দাম কমানোর সুফল পায়নি সাধারণ মানুষ। দূরপাল্লার বাস ভাড়া কিলোমিটার প্রতি তিন পয়সা করে কমানোর সিদ্ধান্ত হলেও ভাড়া কমেনি এতটুকু।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন,‘পরিবহন মালিকদের বলবো, তারা যেন ভাড়া অ্যাডজাসমেন্টে যান। আমরা তেলের দামের অ্যাডজাসমেন্টে যাবো, কিন্তু সাধারণ মানুষ তো সে সুফল পাচ্ছে না।’
পেট্রল পাম্পে তেলে ভেজাল দেয়া হয় কি না, তা শনাক্ত করতেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের এই অভিযান চলে। তবে মেঘনা পেট্রল পাম্পে কোনো ভেজালের প্রমাণ মেলেনি। জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী জানান, আগামী তিন মাসে দেশের সব পেট্রল পাম্পেই ভেজালবিরোধী অভিযান শুরু হবে।
পেট্রল পাম্পে পরিশোধন করা জ্বালানি তেল বিক্রির কথা থাকলেও কোনো কোনো পাম্প মালিক অতিরিক্ত লাভের আশায় অশোধিত তেল মিশিয়ে বিক্রি করেন বলে বিপিসির তদন্তে পাওয়া গেছে। এই তেল ব্যবহার করলে যানবাহনের যেমন ক্ষতি হয়, তেমনি ব্যাপক পরিবেশ দূষণ ঘটে। বেসরকারি তেল শোধনাগার থেকে কৌশলে এই তেল পাম্পে পাঠানো হয় বলে জানতে পেরেছে বিপিসি।
জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন,‘যত ডিলারশিপ আছে যারা ভেজালে জড়িত, তাদের সবাইকে বাতিল করে দেয়া হবে।’
বাংলা৭১নিউজ/এস এন সি