২০১৯ সালে সারা দেশে মোট ৫১ জন গৃহশ্রমিক নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে নিহত হয়েছেন ১৭ জন।
সোমবার (২ নভেম্বর) এই তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ- বিলস।
শ্রমিক বিষয়ক গবেষণা সংস্থাটি বলছে, বিদেশে কাজ করতে যাওয়া নারী শ্রমিকের অবস্থা আরও করুণ। প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে বিপুল সংখ্যক নারী শ্রমিক বিদেশে যান, যাদের বেশির ভাগই গৃহশ্রমিক। বিমান বন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের তথ্য, ২০১৬ থেকে ২০১৯; এই চার বছরে বিভিন্ন দেশে কাজ করতে গিয়ে লাশ হয়ে দেশে ফিরেছেন ৪১০ নারী শ্রমিক। এর মধ্যে সৌদি আরবেই প্রাণ হারিয়েছেন ১৫৩ জন। তাদের ৩৯ জন আত্মহত্যা করেন এবং ৬৯ জন মারা গেছেন দুর্ঘটনায়, তবে দুর্ঘটনার কোন কারণ কেউ জানে না বা কোথাও উল্লেখ নেই।
শ্রমিক প্রেরণকারী এবং গ্রহণকারী কোন দেশই আইএলও কনভেনশন-১৮৯ অনুসর্মথন না করায় এ সমস্ত শ্রমিকেরা কোথাও বিচার বা ক্ষতিপূরণও পান না। এমনকি তা দাবিও করতে পারেন না।
গৃহশ্রমিকদের জন্য শোভন কাজ সংক্রান্ত আইএলও কনভেনশন-১৮৯ বিগত ২০১১ সালের আইএলও কনফারেন্সে গৃহীত হয়। এখন পর্যন্ত সারাবিশ্বে গৃহশ্রমিক প্রেরণ ও গ্রহণকারী মোট ৩০টি রাষ্ট্র এই কনভেনশনটি অনুসমর্থন করেছে। বাংলাদেশ এই কনভেনশনে সাক্ষর করলেও এখনও অনুসমর্থন করেনি।
গৃহশ্রমিকদের নির্যাতন প্রসঙ্গে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য শামসুন্নাহার ভূঁইয়া বলেন, তাদের বেশিরভাগই শিক্ষিত মানুষদের ধারাই নির্যাতিত হচ্ছেন। এ অবস্থার পরিবর্তনের জন্য সকলের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে।
বিলস্ মনে করে, গৃহশ্রমিকরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত এবং নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত, শ্রমিক হিসেবে তাদের স্বীকৃতি এবং দক্ষ জনশক্তি হিসেবে তাদের সংগঠিত করতে আইএলও কনভেনশন-১৮৯ অনুসাক্ষর করা জরুরি।
বাংলাদেশ লেবার ফোর্স সার্ভে ২০১৬-১৭ অনুযায়ী দেশে গৃহস্থালি কাজে জড়িত শ্রমিকের সংখ্যা ১৩ লাখ এবং আইএলও’র হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে গৃহশ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৩২ লাখ, যার ৮০ শতাংশ নারী এবং বিদেশেও ৮ লাখেরও বেশি গৃহশ্রমিক নিয়োজিত আছে। এরা কোন দেশের শ্রম আইনেই শ্রমিক হিসাবে কোন প্রকার স্বীকৃতি ছাড়াই অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের এই বিপুল সংখ্যক শ্রমিক দেশের অর্থনীতিতে অবদান রেখে যাচ্ছে, রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে। আবার তাদের সঙ্গেই প্রতিনিয়ত নানা প্রকার হয়রানি ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটেই চলেছে।
বাংলা৭১নিউজ/এএম