রাত আড়াইটা। বেইলীরোড অগ্নিকাণ্ডের পাঁচ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও ঢাকা মেডিকেল কলেজে একের পর এক প্রবেশ করছিল আহতদের বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স। উৎসুক জনতার ভীড় ঠেলে সাইরেন বাজিয়ে প্রবেশ করা এসব এম্বুলেন্সের কোনটিতে ছটফট করছিলেন মারাত্মকভাবে দগ্ধ ব্যক্তি,কোনটিতে পড়েছিল নিথর দেহ।
ঘটনার পর থেকেই ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে অগ্নিদগ্ধ ও নিহতদের স্বজনেরা ঢাকা মেডিকেল কলেজে এসে ভিড় করছিলেন। প্রিয়জনের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন তারা। কোনভাবেই প্রিয়জনের এভাবে চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছিলেন না। স্বজনদের কান্না,আহাজারি আর চিৎকারে ভারী হয়ে উঠছে ঢাকা মেডিকেলের পরিবেশ।
এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ৪৫ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে আরও প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষকে । হতাহতের এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রাজধানীর বেইলী রোডে আগুন লাগা ভবনটি সাত তলার। এর দ্বিতীয় তলায় রয়েছে রেস্টুরেন্ট ‘কাচ্চি ভাই’। এখান থেকেই মূলত আগুনের সূত্রপাত।
আগুন লাগার সময় সেখানে খাবার খেতে আসা মানুষজন আটকা পড়েন।
এর মধ্যে ছিলেন তিন বোন রিয়া (২৫),আলিশা(২৩), নিহা(১৩)। তিনজনই অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা মেডিকেলে আসা এই তিনজনের মামাতো ভাই রাফি তাদের নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রাফি বলেন, তারা রাজধানীর কাকরাইলে থাকতেন। রাতে এই তিন বোন একসঙ্গে ‘কাচ্চি ভাই’ রেস্টুরেন্ট খেতে যান। আগুন লাগার সময় তারা সেখানেই আটকা পড়েছিলেন। পরে আমরা তাদের মৃত্যু সংবাদ পাই।
রাত আড়াইটায় পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ঢাকা মেডিকেলে পরিদর্শনে আছেন। ৪৫ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি বলেন, আহতদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিটি ইউনিট কাজ করে যাচ্ছে। ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ,র্যাব,বিজিবির বিপুল সংখ্যক সদস্য অগ্নিকাণ্ড স্থলে সার্বিক দিক তত্ত্বাবধান করছেন। এখন পর্যন্ত ৭৪ জনকে ওই ভবন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ