মাত্র ২১ দিনের শিশুকন্যা। টিউমার ভেবে তার পেটে অস্ত্রোপচার করতে গিয়েই চিকিৎসকদের চক্ষু চড়কগাছ! ছোট্ট শরীরের মধ্যেই গজিয়েছে একাধিক ভ্রূণ। দুটো-তিনটে নয়, মোট আটটি ভ্রূণ পাওয়া গিয়েছে ওই শিশুকন্যার পেটের মধ্যে। বিরলের মধ্যে বিরলতম এই ঘটনা। চিকিৎসকদের মতে, বিশ্বের কোথাও এহেন ঘটনার উল্লেখ নেই। সেদিক থেকে দেখতে গেলে এক নয়া নজির গড়ে ফেলেছে এই শিশুকন্যাটি।
চমকে দেওয়া এই ঘটনাটি ভারতের ঝাড়খণ্ডের রামগড় জেলায়। গত ১০ অক্টোবর জন্ম হয় ওই শিশুটির। তারপরেই একরত্তির পেটে একটি অংশ ফুলে থাকতে দেখা যায়। প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষার পরে চিকিৎসকরা বুঝতে পারেন, শিশুটির পেটে টিউমার হয়েছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অস্ত্রোপচার করিয়ে টিউমার বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই মতোই শিশুটির বয়স ২১ দিন হয়ে যাওয়ার পরে তাকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়। তারপরেই শিশুটির পেটে অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকরা।
সেখানেই ঘটে এই অবাক করা ঘটনা। যে মাংসপিন্ডটিকে টিউমার ভেবেছিলেন চিকিৎসকরা, তার মধ্যে থেকেই একে একে বেরিয়ে আসে মোট আটটি ভ্রূণ। তবে ভ্রূণগুলি খুবই ছোট আর অপরিণত। সেভাবে কোনও আকৃতিও পায়নি ভ্রূণগুলি। দু’টি ভ্রূণ একসঙ্গে জড়িয়ে ছিল টিউমারটির মধ্যে। তবে ভ্রূণ-সহ টিউমারটি অস্ত্রোপচার করে বের করে দেওয়া হয়। আপাতত সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে শিশুকন্যাটি। সপ্তাহখানেক তাকে পর্যবেক্ষণে রাখবেন চিকিৎসকরা। তারপরে তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
ডাক্তারির ভাষায় এই সমস্যাকে বলা হয়, ফিটাস-ইন-ফিটু। পাঁচ লক্ষ শিশুর মধ্যে একজনের শরীরে এইরকম ভাবে ভ্রূণের অস্তিত্ব দেখতে পাওয়া যায়। তবে আজ পর্যন্ত শিশুর শরীরে কেবলমাত্র একটি ভ্রূণই পাওয়া গিয়েছে। ঝাড়খণ্ডের শিশুটির অস্ত্রোপচার করে ড. মহম্মদ ইমরান বলেছেন, “একটি শিশুর দেহে আটটি ভ্রূণ, এমন ঘটনার কথা বিশ্বের কোনও জার্নাল বা পেপারে উল্লেখ নেই।” রাঁচির এই হাসপাতালের প্রধান রাজেশ সিং বলেছেন, “এমন ঘটনা খুবই বিরল। আন্তর্জাতিক জার্নালে যেন এই ঘটনার কথা প্রকাশিত হয়, আমরা তার জন্য চেষ্টা করছি।”
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ