বুধবার, ০১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:১৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
পুলিশের জ্যাকেট পরে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে সাংবাদিক সজীবকে সিলেটের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ে রংপুর রিজার্ভ চুরির অর্থ দেশে ফেরাতে ফিলিপাইনের সহযোগিতা চাইলেন রাষ্ট্রপতি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে কমিশন বদ্ধপরিকর: সিইসি ছাত্রশিবিরের নতুন কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি পেলেন ১২ কর্মকর্তা ১৯ জন উদ্ধার না হতেই ফের ৭ অপহরণ! স্লোগানে উত্তাল শহীদ মিনার, শেখ হাসিনার ফাঁসি দাবি নতুন বছরে দেশবাসীর জন্য তারেক রহমানের বার্তা ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে শামীমের লড়াই, তবু খুলনার কাছে হার চট্টগ্রামের দেশ কোনো দলকে ইজারা দেওয়া হয়নি : ধর্ম উপদেষ্টা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিলামের পণ্য কেনা নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে মেরামত করতে আরেকবার যুদ্ধে অংশ নিতে হবে ৫৫ বছরে বাগদান সারলেন সোহেল তাজ, জানা গেল পাত্রীর পরিচয় পদ্মা সেতু দুর্নীতির মামলা পুনরায় তদন্তের সিদ্ধান্ত থার্টিফার্স্ট নাইটে বন্ধ থাকবে বার, করা যাবে না নাচ-গান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাড়িবহরে হামলা, আহত ২০ গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো শেখ মুজিব ও জাতীয় চার নেতার ম্যুরাল চব্বিশের অভ্যুত্থানে অন্যতম সহযোদ্ধা ছিল ছাত্রশিবির: সারজিস আলম বিপ্লব নস্যাৎ করতে ষড়যন্ত্র থেমে নেই: মঞ্জুরুল ইসলাম

১০ লাখ মানুষ ঘুমিয়েই মারা গিয়েছিল যে মহামারিতে

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক:
  • আপলোড সময় শুক্রবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২১
  • ৫১ বার পড়া হয়েছে

করোনা মহামারি অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। বিশ্বব্যাপী এ পর্যন্ত করোনায় মৃতের সংখ্যা প্রায় ৩২ লাখ। ইতিহাসে এমন অনেক মহামারির উল্লেখ আছে। যুগে যুগে বিশ্ব বিভিন্ন মহামারিতে আক্রান্ত হয়েছে। মারণযজ্ঞ চলেছে, লাখ লাখ মানুষ অজানা রোগে চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করেছে।

ইতিহাসের পাতা ওল্টালে এ রকম প্রাণঘাতী অনেক মহামারির উদাহরণ পাওয়া যাবে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়েও অজানা এক ভাইরাসের কবলে পড়েছিল বিশ্ব। ১০ লাখেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল ঘুম মহামারিতে। অজানা এক ভাইরাস কাবু করেছিল পুরো ইউরোপকে।

তখন সবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের দামামা বেজে উঠেছে। তার মধ্যেই নতুন এই ভাইরাসের আতঙ্ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল ইউরোপজুড়ে। গবেষণা বলছে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশ নিয়ে মারা যাওয়া মানুষের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি মারা যায় এই মহামারিতে। ১৯১৬ সালে এই মহামারির সাক্ষী হয়েছিল বিশ্ব।

jagonews24

১৯১৪ সালের ২৮ জুলাই ইউরোপে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয় এবং ১১ নভেম্বর ১৯১৮ পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ার পর ভাইরাসটি নিউ ইয়র্কেও প্রবেশ করে। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছি। তবে অজানা এ রোগের উপসর্গ তেমন ভযঙ্কর ছিল না।

ঘুমের মধ্যেই প্রাণ যেত আক্রান্তদের। ইতিহাসে ঘুম রোগ নামেও পরিচিত এই মহামরি। আক্রান্তরা ঘুমে আচ্ছন্ন থাকত সবসময়। কোনো কাজ করতে পার না তারা। কোনোভাবেই তাদেরকে জাগিয়ে রাখানো যেত না। দিনের পর দিন ঘুমাতে ঘুমাতে মৃত্যু হতো আক্রান্তদের।

ইতিহাসের তথ্য অনুসারে, এ রোগে আক্রান্ত পুরোপুরি সচেতন আবার অচেতনও থাকত না। তারা চেয়ারে সারাদিন অবিচ্ছিন্ন এবং নির্বাক হয়ে বসে থাকত। পুরোপুরি শক্তিহীন ছিল তারা। ক্ষুধাবোধও করত না তারা। সবচেয়ে কষ্টকর বিষয় হলো, এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর রোগীরা তাদের কোনো অসুবিধার কথাই বলতে পারেনি। তারা কোনো অনুভূতি প্রকাশের মতো অবস্থাতেও ছিল না।

jagonews24

এ রোগের নাম দেওয়া হয় এনসেফালাইটিস ল্যাথারজিকা। স্লিপিং সিকনেস নামেও পরিচিত এ রোগটি। এই রোগটি মস্তিষ্কে আক্রমণ করায় আক্রান্তরা মূর্তির মতো বাকরুদ্ধ এবং গতিহীন হয়ে যায়। ১৯১৫-১৯২৬ সাল মস্তিষ্কপ্রদাহ এ রোগটি সারাবিশ্বে লাখো মানুষকে সংক্রমিত করে। এ রোগে যারা বেঁচেছিলেন, তারাও আগের মতো জীবন আর ফিরে পাননি। অনেকটা প্রতিবন্ধীর মতো বাকি জীবন কাটান তারা।

এই রোগের লক্ষণ ছিল জ্বর, গলা ব্যথা, মাথাব্যথা, অলসতা, ডাবল ভিশন, মানসিক প্রতিক্রিয়াহীন এবং অতিরিক্ত ঘুম। গুরুতর ক্ষেত্রে রোগীরা কোমায় চলে যেতেন। ঘুমের মধ্যেই রোগীরা চোখ অস্বাভাবিকভাবে নড়তে থাকত। এ চাড়াও তারা স্মৃতিভ্রষ্ট হয়ে যেত। শরীরের পেশিতে ব্যথা, কাঁপুনি, ঘাড় সোজা রাখতে না পারাসহ আক্রান্তরা জড়বস্তুতে পরিণত হত।

১৯১৬ সালে ভের্ডনের যুদ্ধ ফেরত এক সৈনিকের শরীরে প্রথম এই রোগটি খুঁজে পাওয়া গিয়েছিলো। সেনাবাহিনীর সদস্য হওয়ার কারণে স্বাভাবিকভাবেই তারা সবল ছিলেন। তবে হঠাৎ করেই তাদের মধ্যে অদ্ভুত পরিবর্তন দেখা দেয়। তারা অলস হয়ে পড়েন।

স্থিরভাবে একদিকে তাকিয়ে থাকলেও মনোযোগ ছিল না তাদের। কিছুদিনের মধ্যেই শোনা যায় যে তার মতোই আরো অনেক সৈনিক এই রোগে ভুগছেন। পুরো সেনাবাহিনীর সদস্যরা নিষ্প্রাণ হয়ে যান। সবাই ঘুমের ঘোরে দিন কাটাতে থাকেন। কেউ চেয়ারে, কেউ বিছানায়, মাটিতে- যেখানে সেখানে পড়ে ছিল সেনাবাহিনীদের শরীরগুলো।

jagonews24

ভিয়েনার এক স্নায়ুবিদ পরীক্ষা করে দেখেন, স্লিপিং সিকনেসের কারণে মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস অংশটি ক্রমশ শুকিয়ে যাচ্ছে বলেই ঘুমের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে। ভাইরাল এবং ব্যাকটেরিয়া এ রোগের জন্য দায়ী। ধারণা করা হয়, ১৯১৮ সালের স্প্যানিশ ফ্লুর সঙ্গেও এই রোগের ঘনিষ্ঠতা আছে।

জার্মান নিউরোলজিস্ট ফেলিক্স স্টার, যিনি ১৯২০ সালে কয়েকশ এনসেফালাইটিস লেদারজিকার রোগীদের পরীক্ষা করেছিলেন। তিনি তার এপিডেমিস ইন্সেফালাইটিস বইয়ে উল্লেখ করেন, তাদের শরীরে এনসেফালাইটিস লেথারজিকা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিকশিত হয়েছিল। এর প্রাথমিক লক্ষণ ছিল নিদ্রাহীনতা, এরপর মস্তিষ্ক বিভ্রাট এবং পরবর্তী লক্ষণটি ছিল পার্কিনসন-জাতীয় সিনড্রোম।

২০১০ সালে, এনসেফালাইটিস লেদারজিকার সম্পর্কিত ঐতিহাসিক এবং সমসাময়িক দৃষ্টিভঙ্গি পর্যালোচনাকালে বলা হয়, ‘আমাদের অবশ্যই স্বীকার করতে হবে, এনসেফালাইটিস লেদারজিকার রোগটি এখনও প্যাথলজিকাল ধাঁধা হিসেবে অমীমাংসিতই রয়ে গেছে।’

বাংলা৭১নিউজ/এবি

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com