টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে দ্রুত বাড়ছে সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি। সেইসঙ্গে ডুবে যাচ্ছে নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ২ লাখেরও বেশি মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সপ্তাহখানেক ধরে সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি কখনো কমছে আবার কখনো বাড়ছে। এতে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন সুনামগঞ্জের ২০ লাখেরও বেশি মানুষ। তবে সেই দুশ্চিন্তা যেন গতকালের বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল আরও বাড়িয়ে দিলো।
সোমবার (৩ জুন) সকাল থেকে সুনামগঞ্জে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। সেইসঙ্গে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় নামছে পাহাড়ি ঢল। ফলে দ্রুত গতিতে বাড়ছে জেলার সুরমা, কুশিয়ারা, বৌলাই, রক্তি ও যাদুকাটা নদীর পানি। এতে বন্যার আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠায় সময় পার করছেন ভাটির জেলার বাসিন্দারা।
এদিকে পাহাড়ি ঢলের পানিতে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর, ছাতক ও দোয়ারা বাজারসহ বেশ কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। বিশেষ করে সুনামগঞ্জের দোয়ারা বাজারের শরীফপুর গ্রামের প্রধান সড়ক ঢলের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দোয়ারাবাজার উপজেলার সঙ্গে সরাসরি সড়ক পথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে সুরমা, লক্ষ্মীপুর, বাংলাবাজারসহ তিন ইউনিয়নের।
এছাড়াও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার দূর্গাপুর সড়ক ডুবে যাওয়ায় সুনামগঞ্জ জেলা শহরের সঙ্গে তাহিরপুর উপজেলার সরাসরি সড়ক পথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এতে ছোট নৌকায় করে বাড়তি ভাড়া দিয়ে গন্তব্যস্থলে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
সেইসঙ্গে পানির কারণে রাস্তার পাশে আটকে পড়েছে ছোট-বড় প্রায় ৫০টি যানবাহন। এমনকি ঢলের পানিতে নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় প্রায় ২ লক্ষাধিক মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন।
ভোগান্তিতে পড়া মানুষরা জানান, পাহাড়ি ঢলের পানিতে রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে, এখন গন্তব্যস্থলে যেতে আমাদের বাড়তি ভাড়া যেমন গুণতে হচ্ছে তেমন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, সুনামগঞ্জে গত ২৪ ঘণ্টায় ৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সেইসঙ্গে সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি ৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢল অব্যাহত থাকলে সুনামগঞ্জের সকল নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করবে। এতে এই জেলায় স্বল্প মেয়াদী একটা বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ