সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় অপহরণের প্রায় একমাস পর ফারকুল রহমান (১৩) নামের এক শিশুকে ধানের গোলার ভেতর থেকে শিকলে বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে জেলার ছাতক উপজেলার দক্ষিণ খুরমা ইউনিয়নের হরিশ্বরণ গ্রাম থেকে শিশুকে উদ্ধার করা হয়। এসময় নারীসহ ছয় অপহরণকারীকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
অপহৃত শিশু ফারকুল উপজেলার দরগাপাশা ইউনিয়নের আসামপুর গ্রামের মো. আব্দুল গফুরের ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ আগস্ট দুপুরে ফারকুলকে অপরিচিত কয়েক ব্যক্তি অপরহণ করে। ওইদিন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধ্যান না পেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন ফাইজুরের বাবা। এরই মধ্যে অপহরণকারীরা শিশুটিকে নির্যাতন করা হচ্ছে এমন ভিডিও ধারণ করে তা ফারকুলের স্বজনের ইমো নন্বরে পাঠায় এবং ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
এরপর পুলিশের একটি টিম ছদ্মবেশে দাবিকৃত মুক্তিপণের টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। অপহরণকারীরা ছাতক থানার একটি নির্জন হাওরে দাবিকৃত টাকা রাখার জন্য বলে। ছদ্মবেশী পুলিশ অপহরণকারীদের কথামতো গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় টাকা রেখে ফাঁদ পেতে ধান ক্ষেতের আইলের চার পাশে শুয়ে থাকে।
রাত সাড়ে ৮টার দিকে অপহরণকারী দলের সদস্য জুনায়েদ টাকা নিতে আসলে পুলিশ সদস্যরা তাকে গ্রেপ্তার করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাতভর অভিযান চালিয়ে জুনায়েদের বাড়ির দ্বিতীয় তলার ধানের গোলায় ফারকুলকে শিকল দিয়ে বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ছাতক উপজেলার হরিশ্বরণ গ্রামের আব্দুল সালামের ছেলে অউত্র জুনায়েদ (২৫), আব্দুল কাদিরের ছেলে মো. জিয়াউর রহমান (২২), মৃত মদরিছ আলীর ছেলে মো. আব্দুল সালাম (৫২), আব্দুল সালামের মেয়ে মোছা. খাদিজা বেগম (১৮), অপহরণের মূল পরিকল্পনাকারী শান্তিগঞ্জ উপজেলার আসামপুর গ্রামের মৃত তৈয়ব আলীর ছেলে বিলাল মিয়া (৪২) ও মো. বিল্লাল মিয়ার স্ত্রী বেগম (৪৮)।
শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালেদ চৌধুরী বলেন, শিশুটিকে উদ্ধার করে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ