শুরু থেকেই প্রাণবন্ত এবারের বইমেলা। যদিও এখন পর্যন্ত বেচাকেনা কম। তবে প্রতিদিনই লেখক-পাঠক-দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত থাকে মেলা প্রাঙ্গণ। এবছরও দুই ভাগে বসেছে মেলা। বড় অংশ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এবং অপর অংশ বাংলা একাডেমি চত্বরে। মেলার দুই অংশের চিত্র একেবারে ভিন্ন। প্রতিদিনই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মেলায় প্রাণোচ্ছল থাকলেও বাংলা একাডেমি চত্বর নিষ্প্রভ। সেখানে দর্শনার্থীদের আনাগোনা কম।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান বেড়ে যাওয়ায় মেলা যখন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পর্যন্ত বিস্তৃত হয় তখন ধীরে ধীরে একাডেমি চত্বরে মেলার আমেজ কমতে থাকে। দর্শনার্থীরা এখন ভিড় করেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে দেখা যায়, বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১২০টি প্রতিষ্ঠানের ১৭৩টি স্টল ও একটি প্যাভিলিয়ন রয়েছে। এই প্রাঙ্গণে সরকারি প্রতিষ্ঠান ও কিছু বিশ্ববিদ্যালয়কে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এসব স্টলে বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক বই থাকলেও নেই দর্শনার্থীদের ভিড়।
অবসর সময় কাটাচ্ছেন একাডেমি প্রাঙ্গণে থাকা স্টলের বিক্রয়কর্মীরা। কিছু দর্শনার্থী আসলেও তারা কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করে ছবি তুলে চলে যাচ্ছেন। একাডেমির পুকুরের পাড়ে কাউকে কাউকে বসে আড্ডা দিতে দেখা যায়।
বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে থাকা মুক্তধারা প্রকাশনীর স্টলের বিক্রয়কর্মী কাজল বলেন, ‘একটা সময় এই প্রাঙ্গণ খুবই জমজমাট ছিল। এখানে পাঠকদের আনাগোনা কম। দর্শনার্থীরা এসে ছবি তুলে চলে যান। বেচাকেনাও কম।’
তরজুমান প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী আলামিন বলেন, ‘এখন এমন অবস্থা অনেকেই জানে না বাংলা একাডেমিতে মেলা চলে। এখানে খাবারের দোকান নেই, সৃজনশীল বই কম, তাই পাঠকও কম। বেশিরভাগই সরকারি প্রতিষ্ঠানের স্টল। তবে শেষার্ধে বেচাকেনা বাড়বে।’
অন্যদিকে প্রাণবন্ত দেখা গেছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণ। এই অংশে রয়েছে ৫১৫টি প্রতিষ্ঠানের ৭৬৪টি স্টল। মেলার এই প্রাঙ্গণে শুরু থেকেই পাঠক-দর্শনার্থীদের ভিড়ে জমজমাট দেখা গেছে। বিকেল থেকেই থাকে হইহুল্লোড়। বেচাকেনা কিছুটা কম হলেও লোকসমাগমে সরব সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মেলা প্রাঙ্গণ।
স্বরবৃত্ত প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী জাকারিয়া বলেন, ‘আমাদের এখানে সব শিশুতোষ বই। এবার শুরু থেকেই মেলায় মানুষের আগ্রহ বেশি। গত এক সাপ্তাহে মোটামুটি বেচাকেনা হয়েছে। মানুষ আড্ডা দিয়ে টাইম পাস করে চলে যায়।’
জানা যায়, ২০১৪ সালের আগ পর্যন্ত বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ছিল প্রাণবন্ত। সেখানে লেখক, পাঠক ও সাংস্কৃতি কর্মীদের ভিড় ছিল। এরপর প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান বেড়ে যাওয়ায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেও মেলার একটি অংশ রাখে বাংলা একাডেমি।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ