পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে সরকার আলুর দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পর জয়পুরহাটের অধিকাংশ হিমাগারে আলু বিক্রি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) জেলার হিমাগারগুলো ঘুরে এ তথ্য পাওয়া যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি বছর জেলার ১৯টি হিমাগারে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা ১ লাখ ৬৫ হাজার মেট্রিক টন আলু মজুত করেছেন। জেলায় আলুর বাৎসরিক চাহিদা ৫৫-৬০ হাজার মেট্রিক টন। বর্তমানে হিমাগারে আলুর মজুত আছে প্রায় ৭০ হাজার মেট্রিক টন।
হিমাগারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ব্যবসায়ীরা যদি আলু বিক্রি না করেন, তাহলে হিমাগার কর্তৃপক্ষের করার কি আছে। আমরা সর্বোচ্চ যেসব ব্যবসায়ীরা আলু বিক্রি করছেন না, তাদের তালিকা দিতে পারি।
ভোক্তা অধিকার বলছে, খুব দ্রুত সরকার নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি শুরু করতে হবে। তা না হলে, হিমাগার সিলগালা করে সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে আলু বিক্রি করে ব্যবসায়ীদের নিকট টাকা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হবে।
আলু ব্যবসায়ী মাসুদ আলী বলেন, সরকার ২৭ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রির ঘোষণার পর থেকে বেশিরভাগ হিমাগারে আলু বিক্রি হচ্ছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ী জানান, বিগত বছরের লোকসানের ভার থেকে ব্যবসায়ীরা আজও মুক্ত হতে পারেননি। ব্যাংক ঋণ আজও জট বেঁধে আছে। তখন সরকার কোথায় ছিল। ব্যবসায়ীরা আজ একটু লাভ করছে, তা সহ্য হচ্ছে না। সবাই উঠেপড়ে লেগেছে।
ব্যবসায়ীরা আরও বলেন, প্রশাসনের চাপাচাপির কারণেই আলু বিক্রি বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া, হিমাগারে আলু সংরক্ষণের সময়ও আছে। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কি হয়।
নর্থপোল কোল্ড স্টোরেজ ব্যবস্থাপক মনোয়ার হোসেন বলেন, আলুর দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পর থেকেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ব্যবসায়ীরা আলু বিক্রি না করলে আমাদের করার কি আছে।
তিনি আরও বলেন, কয়েকদিন আগেও প্রতিদিন ৭-৮টি ট্রাকে আলু লোড হতো। কিন্তু এখন আলু বিক্রি বন্ধ থাকায় সেড ফাঁকা পড়ে আছে। এছাড়া, আলু সংরক্ষণের মেয়াদও আগামী ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত আছে।
বগুড়া আঞ্চলিক ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের সহকারী পরিচালক ইফতে খারুল আলম বলেন, ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণেই আলুর দাম এত বেশি। হিমাগারগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে আলু রয়েছে।
জেলা প্রশাসক সালেহীন তানভীর গাজী বলেন, যেসব উপজেলায় হিমাগার রয়েছে, সেসব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা নিয়মিত হিমাগার পরিদর্শনে যাচ্ছেন। সেখানে সব কিছু কঠোরভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে পাইকারি ও খুচরা বাজারে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। আশা করছি শিগগিরই সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে আলু বিক্রি হবে।
উল্লেখ্য, গত রোববার আলু ২৬ থেকে ২৭ টাকা কেজি দরে পাইকারি ও এবং খুচরা ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা নির্ধারণ করে দেয় সরকার। বর্তমানে জেলায় প্রতি কেজি আলু খুচরা ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ