মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৪৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
বাংলাদেশে মানবাধিকার সুরক্ষিত দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র: মিলার সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে: ড. ইফতেখারুজ্জামান শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকে প্রবেশনারি অফিসারদের ফাউন্ডেশন ট্রেনিং কোর্স শুরু দুর্গাপূজার ছুটি বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন মন্ত্রী-এমপিরা কার ইঙ্গিতে পালালো তাদের শ্বেতপত্র প্রকাশ করুন: ফারুক মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনেই চলবে হেলিকপ্টার! তাপসী তাবাসসুমকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ নেত্রকোণায় লাখ মানুষ পানিবন্দি, এক মৃত্যু আন্দোলন দমাতে অস্ত্র ব্যবহার, যুবলীগ কর্মী আরাফাত গ্রেপ্তার সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ করার তাগিদ আসিফ নজরুলের পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন হপফিল্ড ও হিন্টন ইসির ১৬ কর্মকর্তাকে বদলি সংস্কার করলে করেন কিন্তু মালগাড়ির মতো চলবেন না প্রশাসনে থাকা স্বৈরাচারের কীটপতঙ্গ দেশকে বিপদে ফেলবে: রিজভী একটা ইলিশ ৭ হাজার টাকা! গ্রিসে পুলিশি হেফাজতে বাংলাদেশি যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু সেই ম্যাজিস্ট্রেটের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি আবু সাঈদের পরিবারের খালেদা জিয়াসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন ২০ অক্টোবর ঊর্মির বিরুদ্ধে মামলার আবেদন হারিকেন ‘হেলেনের’ পর এবার ‘মিল্টন’ আঘাত হানতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

শুল্ক না দিয়েই ২৭ কোটি টাকার রোলস রয়েলস গাড়ি ছাড়!

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
  • আপলোড সময় বুধবার, ৬ জুলাই, ২০২২
  • ৩০ বার পড়া হয়েছে

রোলস রয়েলস ব্রান্ডের সম্পূর্ণ নতুন একটি দামি গাড়ি শুল্কায়ন না করেই চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছাড় করে নিয়েছেন চট্টগ্রাম ইপিজেডের এক গার্মেন্ট মালিক বাংলাদেশি শরীফ জহির। বাংলাদেশ-হংকং যৌথ মালিকানার ‘জেড অ্যান্ড জেড ইনটিমেটস’ নামের প্রতিষ্ঠানের ওই মালিক শুল্কমুক্ত সুবিধার অপব্যবহার করে অবৈধভাবে এই গাড়ি আমদানি করেছেন। আর শুল্ক পরিশোধ না করেই বন্দর ছেড়ে ছাড় নিয়ে ব্যবহার শুরু করেছেন।

গাড়িটি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছাড় না নেওয়ায় নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই নজর রাখছিলেন শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তারা।

কিন্তু তাদের অগোচরেই গাড়িটি ছাড় পেয়ে যায় বন্দর থেকে। পরে ওই প্রতিষ্ঠানের মালিকের ছেলে নিজের ফেসবুক পেজে ছবিসহ গাড়িটি পোস্ট করলে বিষয়টি ধরা পড়ে যায়। এরপরই শুল্ক গোয়েন্দা দল গত ৪ জুলাই ঢাকার বারিধারায় ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে গাড়িটি আটক করেন। কিন্তু বিষয়টি প্রকাশ পায় আজ বুধবার বিকালে।

যুক্তরাজ্যের বিশ্বখ্যাত রোলস রয়েস ব্র্যান্ডের গাড়িটির বাজারমূল্য ২৭ কোটি টাকা। বাংলাদেশে এই ব্রান্ডের হাতেগোনা গাড়ি ব্যবহার করেন মাত্র কয়েকজন। স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকেল ধরনের এ গাড়ি উৎপাদনের সাল ২০২১। মডেলের নাম কুলিনান এসইউভি আর এই গাড়িটি ৬ হাজার ৭৫০ সিলিন্ডার ক্যাপাসিটির।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের উপ পরিচালক একেএম সুলতান মাহমুদ  বলেন, ‘গাড়িটি চট্টগ্রাম বন্দরের এসেছে গত এপ্রিলে। চালানটি খালাসের জন্য কাস্টমসে বিল অব এন্ট্রি জমা হয় ২৭ এপ্রিল ২০২২ সালে। এরপর থেকেই মুলত আমরা নজর রাখছিলাম; কারণ আগে থেকেই আমাদের কাছে এ বিষয়ে গোপন তথ্য ছিল। ’

তিনি বলেন, বেশ কমাস পড়ে থাকার পর আমরা খোঁজ নিচ্ছিলাম। এরইমধ্যে খবর আসলো গাড়িটি বন্দর থেকে ছাড় করে ঢাকার বারিধারার এক বাসায় লুকানো আছে। কিন্তু কাস্টমসে খোঁজ নিয়ে দেখা গেল বিল অব এন্ট্রি জমা হয়েছে ঠিকই কিন্তু শুল্কায়ন পরিশোধ হয়নি।

শুল্কায়ন পরিশোধ ছাড়া গাড়িটি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কিভাবে ছাড় পেল সেটি নিয়ে রহস্য দেখা দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে সেটি বন্দর থেকে ছাড় করা হয়েছে। আর গাড়িটি কখন বন্দর থেকে ছাড় নেওয়া হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ধারনা করা হচ্ছে জুলাইয়ের ১/২ তারিখের মধ্যে ছাড় পেয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে শুল্কমুক্ত সুবিধার গাড়িগুলোর শুল্কায়ন হয় চট্টগ্রাম কাস্টমসের ৮বি সেকশনে। আবার এই গাড়িটি যেহেতু ইপিজেডের প্রতিষ্ঠানের নামেই আনা হয়েছে সেজন্য ইপিজেড কাস্টমস থেকেও অনুমোদন নিতে হয়। জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার মো. ফখরুল আলম বলেন, ‘গাড়িটির বিল অব এন্ট্রি জমা পড়েছে ঠিকই কিন্তু অ্যাসেসমেন্ট বা শুল্ক পরিশোধের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়নি। সেটি শেষ না করাটা বিধিসম্মত হয়নি। আর কিভাবে আমদানিকারক গাড়িটি ছাড় নিয়েছেন সেটিই এখন তদন্তের বিষয়।

তিনি বলেন, আমরা শুল্ক গোয়েন্দা দলের দলের সিজার লিস্ট পেলে রাজস্ব বোর্ডের কাছে আইনি মতাত চাইব। এরপরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।

শুল্ক গোয়েন্দা দলের অনুসন্ধান বলছে, গাড়িটি শুল্কমুক্ত সুবিধার নামে আমদানি হয়েছে। আর বিল অব এন্ট্রিতেই এসআরও/১০১ এর সিপিসি ১৭০ ধারা মতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়ার উল্লেখ আছে। কিন্তু এই ধারার অপব্যবহার করেছে আমদানিকারক জেড অ্যান্ড জেড ইনটিমেটস। কারণ শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানিকারক এই ধরনের গাড়িতে সর্বোচ্চ ২ হাজার সিলিন্ডার ক্যাপাসিটি (সিসি)র গাড়ি আনতে পারবেন। বাস্তবে গাড়িটি হচ্ছে ৬ হাজার ৭৫০ সিসি’র। ফলে এখানে বড় ধরনের জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে।

অভিযানে নেতৃত্বে থাকা শুল্ক গোয়েন্দা দলের যুগ্ম পরিচালক মো. শামসুল আরেফিন খান বলেন, ‘আমদানিকারক বেআইনিভাবে শুল্কায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করেই গাড়িটি গ্যারেজে লুকিয়ে রেখে শুল্ক আইনের বিধান ভঙ্গ করেছেন। এ ক্ষেত্রে চোরাচালান হিসেবে গণ্য হওয়ার অপরাধ হয়েছে। জব্দ করা গাড়িটি ঢাকা কাস্টম হাউসের শুল্ক গুদামে জমা দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আটককৃত গাড়িটি ২ হাজার সিসির বেশি হওয়ায় শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রাপ্ত হবেন না। সে হিসেবে অন্তত ২৪ কোটি টাকার রাজস্বহানি হবে সরকারের। এ বিষয়ে তদন্তের পরই আরো নিশ্চিতভাবে বলা যাবে।

এ বিষয়ে জানতে গাড়িটির আমদানিকারক হচ্ছে জেড অ্যান্ড জেড ইনটিমেটস। এই প্রতিষ্ঠানটি অনন্ত গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরীফ জহিরকে ফোন দিলে সাড়া না দেয়ায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com