৪৫.২ ওভারে ১২৬ রানে অলআউট আফগানিস্তান। বাংলাদেশের বিপক্ষে এটি সর্বনিম্ন দলীয় স্কোর। এর আগে ২০১৬ সালে মিরপুরে দলটি ১৩৮ রানে অলআউট হয়।
স্রোতের বিপরীতে আজমতুল্লাহর লড়াই
একাই লড়ছেন আজমতুল্লাহ ওমরজাই। ৩২ রানে দলের ৫ উইকেটের পতনের পর ক্রিজে আসেন তিনি। এক প্রান্তে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়লেও আরেক প্রান্তে আজমতুল্লাহ দিয়েছেন ধর্য্যের পরীক্ষা। তাতেই দল রক্ষা পায় একশর আগেই অলআউটের লজ্জা থেকে। আজমতুল্লাহ তুলে নেন ফিফটি। ৬৭ বলে ১টি চার ও ২টি ছয়ে ফিফটি করেন তিনি। মুজিবের সঙ্গে গড়েন সর্বোচ্চ ৩৬ রানের জুটি। মিরাজকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মুজিব আউট হলে ভাঙে এই জুটি। ৩৪ বলে ১১ রান করেন মুজিব। আজমতকে দেন দারুণ সঙ্গ। ক্রিজে আজমতুল্লাহর সঙ্গী ফারুকি। এটি-ই আফগানদের শেষ জুটি।
অলআউটের পথে আফগানিস্তান
আবার তাইজুলের আক্রমণ। অফ স্ট্যাম্পে করা লেন্থ বল। ব্যাকফুটে গিয়ে জিয়া খেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই সময়টা পাননি তিনি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বল গিয়ে আঘাত হানে উইকেটে। ৩০ বলে ৫ রান করেন এই ব্যাটসম্যান। তাইজুলের এটি দ্বিতীয় শিকার। ৮৯ রানে অষ্টম উইকেট হারালো আফগানিস্তান। একশর আগেই যেন অলআউটের দ্বারপ্রান্তে সফরকারী দল। ক্রিজে আজমতুল্লাহর সঙ্গী মুজিব।
শরিফুলের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে বিধ্বস্ত আফগানিস্তান
শরিফুল ইসলামকে পুল করতে গিয়ে ফাইন লেগে তাইজুলের হাতে ধরা পড়েন আব্দুর রহমান। ২০ বলে চার রান করেন এই ব্যাটসম্যান। এই উইকেটের মাধ্যমে শরিফুলের নামের পাশে ৪ উইকেট জমা হয়। শুরু থেকে দুর্দান্ত বোলিং করতে থাকা শরিফুল ৮ ওভারে মাত্র ১৬ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। এটি এখন পর্যন্ত শরিফুলের ক্যারিয়ারসেরা বোলিং। এর আগে শরিফুল ৩৪ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন। ক্রিজে আজমতুল্লাহ ওমরজাইয়ের সঙ্গী জিয়াউর রহমান।
সাকিবের পর তাইজুল, আফগানদের আসা যাওয়ার মিছিল
এক প্রান্তে যখন আসা যাওয়ার মিছিল আরেক প্রান্তে হাল ধরেন অধিনায়ল হাশমতুল্লাহ শাহীদি। রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে তাইজুলের ঘূর্ণিতে কাটা পড়েন হাশমতুল্লাহ। বল সরাসরি আঘাত করে উইকেটে। ৪টি চারে ৫৪ বলে ২২ রান করেন হাশমতুল্লাহ। তার আউটে ভেঙে যায় ৩৪ বলে ২১ রানের জুটি। এটি আফগানদের ইনিংসে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ জুটি। ক্রিজে আজমতুল্লাহ ওমরজাইয়ের সঙ্গী আব্দুর রহমান।
আক্রমণে সাকিব
সাকিবের ঘূর্ণিতে পরাস্ত নাজিবুল্লাহ জাদরান। সুইপ করতে গিয়ে বলের লাইন মিস করেন তিনি। পায়ে লাগতেই সাকিবদের জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। রিভিউ নেন জাদরান, কিন্তু লাভ হয়নি। এটি আফগানদের শেষ রিভিউ ছিল। ২২ বলে ১টি চারে ১০ রান করেন জাদরান। ৩২ রানে ৫ উইকেট হারালো সফরকারী দল। ক্রিজে আজমতুল্লাহ ওমরজাই-হাশমতুল্লাহ শাহীদি।
৪ উইকেট তুলে দুর্দান্ত পাওয়ার প্লে’ বাংলাদেশের
বৃত্তের সুবিধা একটুও কাজে লাগাতে পারেনি আফগানিস্তান। টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে স্রেফ এলোমেলো অতিথিরা। প্রথম ১০ ওভারে ২১ রান তুলতেই হারিয়েছে ৪ উইকেট।
পাওয়ার প্লে’ দুর্দান্ত কেটেছে বাংলাদেশের। দুই পেসার শরিফুল ও তাসকিন গতির ঝড়ে তাদের নাকানিচুবানি খাইয়েছেন। শরিফুল ৩টি ও তাসকিন নিয়েছেন ১ উইকেট। দশ ওভারে বাউন্ডারি এসেছে মাত্র ২টি। দশম ওভারে আফগান অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহিদি বাউন্ডারি মেরে ১৫তম বলে রানের খাতা খোলেন। এর আগে রহমানউল্লাহ গুরবাজ চতুর্থ ওভারে তাসকিনকে পুল করে একটি চার হাঁকান।
শুরুর ১০ ওভারেই ম্যাচ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে স্বাগতিকরা। হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর লড়াইয়ের শুরুটা দুর্দান্ত হলো।
পেসারদের তোপে ধুঁকছে আফগানিস্তান
শরিফুলের জোড়া আঘাতে শুরুতে এলোমেলো হওয়া আফগানিস্তান শিবিরে তাসকিন আহমেদ নিজের কারিশমা দেখালেন। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে তাদেরকে চাপে রাখলেও প্রথম দুই ওভারে উইকেট পাননি। তৃতীয় ওভারে মিলে যায় কাঙ্খিত সাফল্য।
আফগানিস্তানের দ্বিতীয় ম্যাচের নায়ক রহমানউল্লাহ গুরবাজকে ড্রেসিংরুমের পথ দেখালেন ডানহাতি পেসার। তাসকিনের শর্ট বল জায়গায় দাঁড়িয়ে পুল করতে গিয়েছিলেন গুরবাজ। বল ছিল তার কাঁধেরও ওপরে। ঠিকঠাক টাইমিং মিলাতে পারেননি। বল হাওয়ায় ভেসে যায় মুশফিকের গ্লাভসে। ২২ বলে ৬ রানে গুরবাজের ইনিংসটি থেমে যায় সেখানেই।
উদযাপনের রেশ কাটতে না কাটতেই শরিফুল নিজের তৃতীয় উইকেট নিয়ে নেন পঞ্চম ওভার করতে এসেছে। এবার তার শিকার অভিজ্ঞ আফগান ক্রিকেটার মোহাম্মদ নবি। বাঁহাতি পেসারের ভেতরে ঢোকানো বল এলবিডব্লিউ হয়ে নবি ফিরেছেন ড্রেসিংরুমে। রিভিউ নিয়েছিলেন আফগান তারকা। কিন্তু চ্যালেঞ্জে হেরে ১ রানে থেমে যান।
শুরুতেই শরিফুলের জোড়া আঘাত
নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসে জোড়া আঘাত হানলেন আগের দুই ওয়ানডেতে বিশ্রামে থাকা শরিফুল। পিচ করেই বেরিয়ে যাচ্ছিল বল, খোঁচা দিয়ে বসেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান ইবরাহীম জাদরান। উইকেটের পেছনে মুশফিক ক্যাচ ধরতে ভুল করেননি। ১ রান করেন ইবরাহীম। এরপর ২ বল ডট দিয়ে চতুর্থ বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়েও নাঈম শেখের ভুলে বেঁচে যান রহমত। পরেই বলেই রহমত খোঁচা দিয়ে ফেরেন সাজঘরে। রানের খাতাই খুলতে পারেননি তিনি। এবারও ভুল করেননি মুশফিক। ৩ রানে ২ উইকেট নিলো বাংলাদেশ। ক্রিজে গুরবাজের সঙ্গী হাশমতুল্লাহ।
ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ
ঘরের মাঠে আফগানদের কাছে ধবলধোলাইয়ের মুখে সিরিজের তৃতীয় ওয়াডে খেলতে নেমছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আজ মঙ্গলবার দুপুর ২টায় মুখোমুখি হয় দুই দল। টস হেরে এই ম্যাচে বোলিং করছে বাংলাদেশ।
একাদশে তিন পরিবর্তন
বাংলাদেশ নেমেছে একাদশে তিন পরিবর্তন নিয়ে। তিন পরিবর্তনটাই এসেছে পেস বিভাগে। মোস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ ও ইবাদত হোসেন চৌধুরী। বাংলাদেশ আজ খেলছে দুই পেসার ও এক স্পিনার। তাদের পরিবর্তে খেলছেন শরিফুল ইসলাম ও তাসকিন আহমেদ। এ ছাড়া আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সবশেষ ওয়ানডে খেলা তাইজুল ইসলাম ফিরেছেন একাদশে।
বাংলাদেশ একাদশ, লিটন দাস (অধিনায়ক(, মোহাম্মদ নাঈম, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, তাওহীদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম, মেহেদী হাসান মিরাজ, আফিফ হোসেন ধ্রুব, শরীফুল ইসলাম, তাইজুল ইসলাম ও তাসকিন আহমেদ।
আফগানিস্তান একাদশ
আফগানিস্তান নেমেছে দুই পরিবর্তন নিয়ে। রশিদ খান ও সেলিম সাফিকে বিশ্রাম দেওয়া হয়ে। তাদের পরিবর্তে খেলবেন জিয়া আকবর ও আব্দুর রহমান।
একাদশে যারা, রহমতউল্লাহ গুরবাজ, ইব্রাহিম জাদরান, রহমত শাহ, হাসমতউল্লাহ শহীদি, মোহাম্মদ নবী, নাজিবুল্লাহ জাদরান, মুজিবউর রহমান, ফজলহক ফারুকী, আজমতউল্লাহ ওমরজাই, জিয়া আকবর ও আব্দুর রহমান।
৯ বছর পর হোয়াইটওয়াশের মুখে
২০১৪ সালের পর বাংলাদেশ এই নিয়ে চতুর্থ সিরিজ হেরেছে। সেবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অবশ্য সিরিজের সবগুলো ম্যাচই হারতে হয়েছিল। সব-মিলিয়ে ১৮টি সিরিজের মধ্যে বাংলাদেশ জয়ের হাসি হেসেছে ১৪টি। আফগানদের কাছে এই সিরিজ হারের আগে ওয়ানডেতে সব শেষ সিরিজ হারে বছর শুরুতে ইংল্যান্ডের কাছে।
টিম ম্যানেজম্যান্টের ভরসা
টানা হেরে সিরিজ খোয়ালেও টিম ম্যানেজম্যান্ট ভরসা হারাচ্ছে না টাইগারদের উপর। সহ-কারী কোচ নিক পোথাস জানিয়েছেন শিষ্যদের উপর তাদের সেই আস্থা রয়েছে। ‘আমরা এখানে পেশাদার ক্রিকেটারদের ব্যাপারে কথা বলছি৷ নিজেদের কাজ সম্পর্কে তারা খুবই পেশাদার। তো আমাদের তরফ থেকে খুব বেশি অনুপ্রাণিত করতে হয় না। তারা সবসময় প্রস্তুত। এটি দারুণ সব খেলোয়াড়ের দল।‘
আত্মবিশ্বাসী আফগানিস্তান
আফগানিস্তান তৃতীয় ম্যাচেও নামছে জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে। এমনটাই ভাবছেন বোলিং কোচ হামিদ হাসান। ‘বাংলাদেশের মাঠে বাংলাদেশকে হারানো সহজ নয়। আমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি। অনুশীলনে ৫-৬ ঘণ্টা ধরে খেটেছি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, দলের ভেতরের বিশ্বাস। এটি যে কারও জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যদি নিজের ওপর বিশ্বাস থাকে, তাহলে যে কাউকে হারানো সম্ভব।‘
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচবি