সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ায় পটুয়াখালীর দূর্গম চর রাঙ্গাবালী উপজেলার মানুষের মধ্যে এখন উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ায় এসব এলাকায় মানুষের জীবন জীবিকায় ইতিবাচক পরিবর্তন শুরু হয়েছে। অর্থনৈতিক কার্যক্রমে এসেছে প্রাণচাঞ্চল্য।
এ বছর বিজয় দিবসের আগেই পূরো রাঙ্গাবালী উপজেলার শতভাগ পরিবারকে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে যাচ্ছে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন উত্তাল আগুনমুখা নদী পাড়ি দিয়ে যেতে হয় দূর্গম রাঙ্গাবালী উপজেলায়। এই উপজেলাটি এমন একটি এলাকা যেখানে রাস্তাঘাট থাকলেও পুলিশ এবং উপজেলা প্রশানের দুটি গাড়ি চলে এই রাস্তায়।
এতদিন বিদ্যুতের আলোর সংস্থান হতো জেনারেটর কিংবা সোলার প্যানেল থেকে। তবে সেসব দিনের এখন পরিবর্তন হয়েছে। সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে ভোলা থেকে নদীর তলদেশ দিয়ে বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন করায় প্রায় ১৮ হাজার পরিবার বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়েছে। বাকিদেরও সংযোগ প্রদানের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে এই উপজেলার মানুষ এখন বৈদ্যুতিক সরঞ্জামসহ বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য কিনছেন।
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চর মন্তাজ ইউনিয়নের ব্যবসায়ী আইয়ুব খান বলেন, বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ায় এখন মানুষ আয়রন, টিভি, ফ্রিজসহ ইলেক্ট্রিক পণ্য সামগ্রী কিনছেন। অনেকে নগদ টাকার পাশাপাশি কিস্তিতেও এসব পণ্য ক্রয় করছেন। সাম্প্রতিক সময় এসব পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রত্যন্ত এই চরেও বেশ কয়েকটি ইলেক্ট্রনিক্স পণ্যের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।
এদিকে এ উপজেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ায় মৎস্য ও কৃষি নির্ভর অর্থনীতিতে একটি নতুন ধারার সূচনা হলো বলে মনে করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাশফাকুর রহমান। এ কারণে এই অঞ্চলে এখন আইসপ্লান্টসহ অটো রাইসমিলের মতো শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে বলে মনে করেন তিনি।
এ বছর ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে উপজেলার সব পরিবারের কাছে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কাজ চালানো হচ্ছে বলে জানান পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজার শাহ্ মো. রাজ্জাকুর রহমান।
‘শেখ হাসিনার উদ্যোগ, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ এই স্লোগানকে ধারণ করে দেশের প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে সরকার বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার যে প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করছিল তা এখন বাস্তব রূপ লাভ করলো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলা৭১নিউজ/বিএফ