সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ১২:২৭ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
সেতু বিভাগের সচিব হলেন ফাহিমুল ইসলাম ইসরায়েলি ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ প্রথম মাসের বেতন ত্রাণ তহবিলে দিলেন আসিফ মাহমুদ ধামরাইয়ে ৯ দাবিতে আকিজ ফুড শ্রমিকদের বিক্ষোভ নারায়ণগঞ্জে বাজারে আগুন, ৩০ দোকান পুড়ে ছাই পদ্মার চরে পানি, হতাশ চাষিরা এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান গ্রেফতার সরকার মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতকরণে বদ্ধপরিকর: প্রধান উপদেষ্টা আজ থেকে শুরু হচ্ছে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে ব্রাজিলের ‘হেক্সা’ দিল্লির সুপারশপে দেখা মিললো সাবেক এসবিপ্রধান মনিরুলের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত ৭৩৫ জনের খসড়া তালিকা প্রকাশ শিশুদের পরিপূর্ণ বিকাশে সমাজের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে : রাষ্ট্রপতি শিশুর বিকাশের অন্তরায়গুলো চিহ্নিত করে সমাধানে বদ্ধপরিকর সরকার ৭ অক্টোবর বিশ্ব বসতি দিবসে সরকারের নানা কর্মসূচি গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও প্রায় অর্ধশত ফিলিস্তিনি প্রধান উপদেষ্টা নিয়ে বিতর্কিত পোস্ট, ওএসডি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুন্নী সাহার ব্যাংক হিসাব তলব ভারতে পালানোর সময় সাবেক ভূমিমন্ত্রী আটক শুরুতেই দুই উইকেট হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ

রাষ্ট্রভাষা ইস্যুতে পতন ডেকে আনেন খাজা নাজিমুদ্দীন

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক:
  • আপলোড সময় রবিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
  • ৩৬ বার পড়া হয়েছে

রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত ফেব্রুয়ারি মাস এলে আমরা গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করি মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে জীবন উত্সর্গকারী শহীদদের। আমরা শ্রদ্ধা ও গর্বের সঙ্গে উচ্চারণ করি ভাষাসংগ্রামীদের কথা। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের অগ্রসেনানি তথা ইতিহাসের নায়কদের নাম যেমন আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে উচ্চারণ করি, তেমনি ঘৃণার সঙ্গে উচ্চারণ করি খলনায়কদের নাম। আজ আমরা তুলে ধরব রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের শীর্ষ বিরোধিতাকারী, উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার অপতত্পরতার প্রধান কুশীলব পাকিস্তানের তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দীনের কুখ্যাতির কথা।

পাকিস্তান সৃষ্টির পর মুসলিম লীগ সরকার উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার হীন চক্রান্তে লিপ্ত হলে তার প্রত্যক্ষ সহযোগিতাকারী হিসেবে মাঠে নামেন খাজা নাজিমুদ্দীন। তাঁর মাতৃভাষা ছিল উর্দু; বাংলা ভাষা ভালোভাবে জানতেন না।

১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার কংগ্রেসদলীয় গণপরিষদ সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত পাকিস্তান গণপরিষদে বাংলা ভাষাবিষয়ক সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপন করলে খাজা নাজিমুদ্দীনসহ মুসলিম লীগদলীয় সদস্যদের বিরোধিতার কারণে ২৫ ফেব্রুয়ারি তা নাকচ হয়ে যায়।

ওই সময় পূর্ববঙ্গের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খাজা নাজিমুদ্দীন গণপরিষদ বক্তৃতায় বলেন : ‘উর্দ্দুই একমাত্র পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হইতে পারে বলিয়া পূর্ব্ববঙ্গের অধিকাংশ লোকের অভিমত। বাংলাকে সরকারি ভাষা করিবার কোনোই যুক্তি নাই। তবে পূর্ব্ববঙ্গে শিক্ষা ও শাসনকার্যের ক্ষেত্রে যথাসময়ে বাংলা ভাষা ব্যবহূত হইবে। ’

তাঁর এই উদ্দেশ্যমূলক বক্তৃতার প্রতিবাদে পূর্ববঙ্গে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়, ছাত্ররা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। তাতেও তিনি কর্ণপাত না করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানের সঙ্গে সুর মিলিয়ে উর্দুর পক্ষে ওকালতি করে বলেন : ‘পূর্ব্ববঙ্গের সরকারি ভাষা বাংলাই থাকিবে’, তবে তা বাস্তবায়নে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।  

১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ছাত্ররা প্রদেশব্যাপী ধর্মঘট পালন করলে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন প্রবল রূপ ধারণ করে। এ অবস্থায় পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর পূর্ববঙ্গ সফরের দিনক্ষণ ঠিক হলে ১৯৪৮ সালের ১৫ মার্চ পূর্ববঙ্গের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দীন ছাত্রনেতাদের সঙ্গে আট দফা সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেন।

চুক্তির শর্তাবলিতে তিনি রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের বন্দিদের মুক্তিদানের কথা যেমন বলেন, তেমনি বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন, যা পরিষদে পরিষদে পাস করা হবে বলেও অঙ্গীকার করেন।  

১৫ মার্চ শেখ মুজিবসহ অন্য বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হলেও চুক্তির বেশির ভাগ শর্ত পূরণ করা হয় না। এর প্রতিবাদে ১৯৪৮ সালের ১৬ মার্চ শওকত আলী, অলি আহাদ ও শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ‘একটি অনির্ধারিত মিছিল সরকারের বিরুদ্ধে ও বাংলা ভাষার সমর্থনে ধ্বনি দিতে দিতে পরিষদ ভবনের দিকে অগ্রসর হয়। ’

তখন পরিষদের ভেতর অধিবেশন চলছিল এবং প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দীন বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। ছাত্ররা পরিষদ ভবনের গেটে গিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এবং খাজা নাজিমুদ্দীনের সাক্ষাৎ প্রার্থনা করে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে নাজিমুদ্দীন সেনাবাহিনী তলব করেন।

তাঁর আহ্বানে পূর্ববঙ্গের তখনকার জিওসি হিসেবে আইয়ুব খান সেনা দল নিয়ে সেখানে যান এবং প্রধানমন্ত্রীকে রান্নাঘরের ভেতর দিয়ে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেন। ওই দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে আইয়ুব খান তাঁর ‘ফ্রেন্ডস নট মাস্টারস’ গ্রন্থে বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন।  

১৯৪৮ সালের ১৫ মার্চ ভাষা আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে আট দফা চুক্তি করলেও পরবর্তীকালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হয়ে তিনি চুক্তির শর্তাবলি বেমালুম ভুলে যান। শুধু তা-ই নয়, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পূর্ববঙ্গ সফরে এসে ১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারি ঢাকার পল্টন ময়দানের জনসভায় ঘোষণা করেন : ‘প্রদেশের ভাষা কী হবে তা প্রদেশবাসীই স্থির করবেন, কিন্তু পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু। একাধিক রাষ্ট্রভাষা থাকলে কোনো রাষ্ট্র শক্তিশালী হতে পারে না। ’

এই বক্তৃতায় তিনি আওয়ামী লীগ নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর কুরুচিপূর্ণ সমালোচনা করেন। কয়েক দিন পরে ঢাকা ত্যাগের প্রাক্কালে তিনি বর্ধমান হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার বিরোধিতাকারীদের ‘দুশমন’ বলে অভিহিত করেন।  

এখানেই শুরু নয়, এর আগে ১৯৪৮ সালেও তিনি উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। ১৯৫১ সালের জুন মাসে মাহে-নও পত্রিকায় তিনি ‘উর্দু ভাষা ও পাকিস্তান’ শিরোনামের এক প্রবন্ধে উর্দুর পক্ষে নানা যুক্তি তুলে ধরে লেখেন : ‘আরবি ভাষার মর্যাদা, পার্সির মিষ্টতা এবং হিন্দির সৌন্দর্য মিলে এই ভাষাটিকে এমন করে গড়েছে যে এর জোড়া খুব কমই দেখা যায়।

তা ছাড়া পাশ্চাত্য শব্দ এবং চিন্তাধারা এতে অতি সুন্দরভাবে প্রকাশ করা যায়। … উর্দু কায়েদে আজমের মাতৃভাষা ছিল না। এমনকি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত কোনো দিন তিনি উর্দুতে অনর্গল বক্তৃতা করতে পারেননি। ইংরেজি ভাষার উপর তাঁর যথেষ্ট দখল ছিল। কিন্তু দূরদৃষ্টির ফলে তিনি এ কথা বুঝতে পেরেছিলেন যে উর্দু নিয়ে যে প্রশ্ন, তা কারও ব্যক্তিগত নয় অথবা প্রাদেশিকও নয়—তা জাতীয়তা-সম্পর্কিত।

যদি পাকিস্তান বিভিন্ন ভাষাভাষী লোকদের একতাবদ্ধ করতে চায় এবং যদি তাদের ভিত্তি মজবুত করে গড়তে চায়, তবে জাতীয় ভাষা একটিই হতে হবে। সাধারণ ভাষা একমাত্র উর্দু ছাড়া আর কিছুই হতে পারে না, কায়েদে আজম এ কথা স্পষ্ট করেই বলে গেছেন। আর তিনি যা বলে গেছেন তাই আমাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। ’ 

খাজা নাজিমুদ্দীনের পল্টন ময়দানের ঘোষণার পর ঢাকাসহ সমগ্র পূর্ববঙ্গে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। ওই দিনই ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় এক ছাত্রসভা আহ্বান করে। তারা ধর্মঘট পালন করে এবং খাজা নাজিমুদ্দীনের বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানায়।

‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ ৩০ জানুয়ারি ছাত্র ধর্মঘট ও সভা আয়োজন করে। এরপর ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা শহরে ছাত্র ধর্মঘট, ছাত্রসভা এবং বিক্ষোভ মিছিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মূলত খাজা নাজিমুদ্দীনের বক্তব্যের প্রতিবাদে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হয়, যার চূড়ান্ত প্রকাশ ঘটে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির ট্র্যাজিক ঘটনার মাধ্যমে। বস্তুত খাজা নাজিমুদ্দীনের উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার দূরভিসন্ধিমূলক প্রচেষ্টার কারণেই ঢাকার রাজপথ বাংলার দামাল সন্তানদের রক্তে রঞ্জিত হয়।  

১৯৫২ সালের এপ্রিল মাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর সঙ্গে দেখা করেন এবং রাজবন্দিদের মুক্তি ও ছাত্রহত্যার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবিসহ পাকিস্তানের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কথা বলেন। এ সময় নাজিমুদ্দীন বলেন : ‘প্রদেশের কোনো কাজে তিনি হস্তক্ষেপ করেন না, তবে তিনি চেষ্টা করে দেখবেন কী করতে পারেন। ’

বাস্তবে তাঁর অঙ্গুলি হেলনেই তখন পাকিস্তানের সব কিছু চলত। তাই এ কথা বলে তাঁর দায় এড়ানোর সুযোগ ছিল না। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের পরও তাঁর সরকার উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে এবং আরবি হরফে বাংলা চালু করতে প্রাণপণ প্রয়াস চালায়।

কিন্তু একুশের চেতনায় উজ্জীবিত পূর্ববঙ্গের মানুষের দৃঢ়তায় তা ব্যর্থ হয়। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগের পরাজয়ের ফলে খাজা নাজিমুদ্দীনের রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনবিরোধী অপরাজনীতির কবর রচিত হয়।  

বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ ও ভাষা আন্দোলনে বিরোধিতার কারণেই রাজনীতির মঞ্চ থেকে তাঁর বিদায় ঘটে। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের পর খাজা নাজিমুদ্দীনের রাজনীতি কঠিন চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়ে। বলা চলে, পাকিস্তানে মুসলিম লীগের রাজনীতির কবর তিনিই রচনা করেছিলেন।

১৯৫৩ সালের ১৭ এপ্রিল গভর্নর জেনারেল গোলাম মোহাম্মদ খাজা নাজিমুদ্দীনের মন্ত্রিসভা বাতিল করলে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন। এরপর প্রায় এক দশক রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে রেখে ১৯৬২ সালের ২৭ অক্টোবর গঠন করেন কাউন্সিল মুসলিম লীগ।

এ দলের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং সর্বজনীন ভোটাধিকার ও সংসদীয় পদ্ধতির সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলনে নামেন। সম্মিলিত বিরোধী দল বা কপ গঠন এবং ফাতেমা জিন্নাহকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী করার ব্যাপারে ভূমিকা রাখেন। তবে এ উদ্যোগে তাঁর রাজনীতির মরা গাঙে আর জোয়ার আসেনি।  

খাজা নাজিমুদ্দীনের জন্ম ১৮৯৪ সালের ১৯ জুলাই, জন্মস্থান ঢাকার আহসান মঞ্জিল। পড়ালেখা করেন আলীগড় ও লন্ডনে। লেখাপড়া শেষে মুসলিম লীগে যোগ দেন এবং ধাপে ধাপে দলের শীর্ষস্থান দখল করেন। ঢাকা পৌরসভার চেয়ারম্যান, অবিভক্ত বঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা এবং প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন। ১৯৪৬ সালে বঙ্গীয় বিধানসভা ও কেন্দ্রীয় আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন।

এরপর কেন্দ্রীয় মুসলিম লীগের পার্লামেন্টারি পার্টি ও কেন্দ্রীয় পরিষদের বিরোধী দলের সহকারী নেতা নির্বাচিত হন। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর পূর্ববঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী নিযুক্ত হন। এরপর পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল ও প্রধানমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত হন। পাকিস্তান আন্দোলনে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করলেও রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে বিরোধিতার কারণে তাঁর রাজনৈতিক ইমেজ শূন্যের কোটায় নামে।

ষাটের দশকে আইয়ুববিরোধী গণ-আন্দোলনে ভূমিকা রাখলেও রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে বিরোধিতাকারী হিসেবে জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারেননি। তিনি ১৯৬৪ সালের ২২ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন। ঢাকায় ‘তিন নেতার মাজার’ নামে পরিচিতি সমাধিসৌধে তিনি সমাধিস্থ আছেন। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের বিরোধিতাকারী হিসেবে পাকিস্তানের তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী, বায়ান্নর কুখ্যাত খাজা নাজিমুদ্দীন ইতিহাসের এক কলঙ্কিত অধ্যায়ের খলনায়ক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছেন।  

লেখক : গবেষক-প্রাবন্ধিক; অধ্যাপক, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

ইনসেট : বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ ও ভাষা আন্দোলনে বিরোধিতার কারণেই রাজনীতির মঞ্চ থেকে তাঁর বিদায় ঘটে। বলা চলে, পাকিস্তানে মুসলিম লীগের রাজনীতির কবর তিনিই রচনা করেছিলেন।

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচবি

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com