বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: রাজস্ব আদায়ে বিশ্বের সবগুলো দেশ থেকেই বাংলাদেশ তুলনামূলক পিছিয়ে মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ভালো সেবা পেতে হলে পর্যাপ্ত রাজস্ব দিতে হবে। বাজেটকে কেন্দ্র করে একটু রাজস্ব বেশি দিলে মন্দ হয় না।
আজ বিকেল ৪টার দিকে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা পৃথিবীর সব দেশের থেকে কম রাজস্ব আদায় করি। একটি না দুইটি দেশ আমাদের নিচে আছে। সরকার কী সেবা দিলো তা নিয়ে কথা বলি, কিন্তু ভালো সেবার জন্য যে পর্যাপ্ত রাজস্ব দরকার তা নিয়ে মাথা ঘামাই না। আর সে জন্য একটু রাজস্ব বেশি দিলে মন্দ হয় না।
তিনি বলেন, গতবছর রাজস্ব আদায় ‘নিম্ন মানের’ হলেও আগের বছর পুরো সময় তা দুই অংকের উপরে ছিল। আমি সাত বছর ধরে এই মন্ত্রণালয়ের আছি। গত সাত বছরে রাজস্ব আদায়ের সক্ষমতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে। নতুন নতুন অফিস হয়েছে, প্রত্যেক উপজেলায় অফিস হবে। ৩৫ শতাংশ অতিরিক্ত কর আদায়ের প্রস্তাব করেছি।
অর্থমন্ত্রী বাজেট উপস্থাপনের পর বৃহস্পতিবার রাতেই জাতীয় রাজস্ব বোর্ড একটি এসআরও জারি করে, যাতে মোবাইল ফোনের সেবায় সম্পূরক শুল্ক ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করার কথা বলা হয়। ওই এসআরও পাওয়ার পরপরই মোবাইল অপারেটররা গ্রাহকদের কাছ থেকে নতুন হারে টাকা কাটা শুরু করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে মুহিত বলেন, সব দেশের চেয়ে আমরা সব থেকে কম আদায় করি। আমাদের হ্যাবিটটা চেইঞ্জ করা দরকার। রাজস্বের দিকে নজর দিতে হবে। কারণ আমরা সব সময় সরকার কী সেবা দিল তা নিয়ে হৈ চৈ করি, দাবি করি। কিন্তু সরকার সেবা দিতে গেলে যে রাজস্ব প্রয়োজন সেটা নিয়ে মোটেই মাথা ঘামাই না। তাই একটু রাজস্ব বেশি দিলে মন্দ হয় না।
মোবাইল ফোনের ওপর রাজস্ব বাড়ানোর বিষয়ে তিনি বলেন, আগে যেমন ট্যাক্স আসতো, তেমন আসছে না এই খাত থেকে। মোবাইল ফোনে যারা কথা বলেন, এটি তেমন কিছু নয় বলে আমি মনে করি। এতে তাদের জন্য অতিরিক্ত কোনো প্রভাব পড়বে না।
২০১৬-১৭ বছরের অর্থবছরে ২ লাখ ৪২ হাজার ৭৫২ কোটি টাকা রাজস্ব খাত থেকে সংগ্রহ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা মোট বাজেটের ১২.৪ শতাংশ। এ বছরের লক্ষ্যমাত্রা ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের তুলনায় ৬৫ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা বেশি।
এছাড়া এনবিআর বহির্ভূত কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ হাজার ২৫০ কোটি টাকা। কর-বহির্ভূত রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩২ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা।
এদিকে, বাজেট ঘোষণার পর বিভিন্ন জিনিসের দাম বেড়ে যায় এটিকে ভিত্তিহীন উল্লেখ করে মুহিত আরো বলেন, তেলের দাম বিশ্বজুড়ে কমেছে। প্রত্যেকটি পণ্যের দাম বিশ্বজুড়ে কমছে। সেগুলোর দাম বাজেটের পর বেড়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
এ সময় মুহিতের সঙ্গে মঞ্চে চারজন মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। মুহিতের ডানপাশে ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আর বাঁ পাশে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, অর্থ প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নানকে বসিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন মুহিত।
এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সচিবরাও এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলা৭১নিউজ/সি এইস