সংস্কার শেষে ১৫ মাসের মাথায় কালুরঘাট সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। রোববার (২৭ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রেল সেতুটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেন।
৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটির সংস্কারের পর এখন সর্বোচ্চ ৮ ফুট উচ্চতার সবধরনের যানবাহন চলাচল করার অনুমোদন করা হয়েছে। তবে চলতে পারবে না ট্রাক-বাসের মতো ভারী যান। বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দল গাড়ি চলাচলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়ার পরেই সেতুটি চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়।
এ নিয়ে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী ও পটিয়া উপজেলার একাংশের মানুষের মধ্যে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘বুয়েটের পরামর্শ অনুযায়ী সেতু দিয়ে বড় ট্রাক ও বাস চলাচল করতে পারবে না। টোল ছাড়াই আপাতত যানবাহন চলাচলের জন্য কালুরঘাট সেতু উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। ভূ-সম্পত্তি বিভাগ শিগগিরই রেলসেতু দিয়ে চলা যানবাহন থেকে টোল আদায়ে উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করবে।’
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিয়া বলেন, ‘কালুরঘাট সেতুর নতুন সংযোজন হলো দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে। সেতুর পাটাতনের ওপর বিশেষ প্রযুক্তির কংক্রিটের ঢালাই দেওয়া হয়েছে। আগে সেতুতে পানি জমে থাকায় ঢালাই নষ্ট হয়ে যেতো। কংক্রিটের ঢালাই দেওয়ায় এখন আর সেখানে পানি জমে থাকবে না।’
৯০ বছরের পুরোনো এ সেতুর সংস্কার কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের ১ আগস্ট। প্রায় ৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুর সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে সম্প্রতি। গত ২৪ সেপ্টেম্বর কালুরঘাট সেতুর সংস্কার কাজ পরিদর্শন করেন বুয়েটের তিন সদস্যের বিশেষজ্ঞ দল। তারা সংস্কার কাজের অগ্রগতি ও গুণগত মান পরীক্ষা শেষে দ্রুত যান চলাচলের জন্য সেতু চালু করে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
মূলত দোহাজারী-কক্সবাজার নতুন রেলপথ নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে আসার পরও নতুন সেতু নির্মাণ না হওয়ায় পুরাতন কালুরঘাট সেতু সংস্কারের উদ্যোগ নেয় রেলওয়ে। ১৯৩১ সালে ব্রিটিশ আমলে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে নির্মিত কালুরঘাট সেতুটি বহু আগেই মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যায়। বুয়েটের পরামর্শে সেতুটি সংস্কার করা হয়।
ভারী ও দ্রুতগতির ট্রেন চলাচল করতে সেতুর পিয়ারগুলোর নদীর পানির নিচে প্রায় ৬০ হাজার জিও ব্যাগের মাধ্যমে বালি ফেলাসহ মানুষের যাতায়াতে ওয়াকওয়ে এবং রেলপথের ওপর সড়ক কার্পেটিং এ বিশেষ নকশা প্রণয়ন করে রেলওয়ে। নতুন পদ্ধতি বাস্তবায়নের কারণে একমুখী যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটবে না বলে জানিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
কালুরঘাট সেতু দিয়ে বর্তমানে কক্সবাজার পর্যন্ত দৈনিক তিন জোড়া ট্রেন ও দোহাজারী পাওয়ার প্ল্যান্টের জ্বালানীবাহী ট্রেন চলাচল করে। তবে কালুরঘাট সেতু সংস্কার ও কর্ণফুলী নদীতে নতুন সেতু নির্মাণের পর এই রুটে দৈনিক ২৩ জোড়া ট্রেন চলাচলের পরিকল্পনা রয়েছে। আগামী জানুয়ারিতে চালু হওয়া রেলওয়ের ওয়ার্কিং টাইম টেবিলে কক্সবাজার পর্যন্ত আপাতত আরও কয়েকটি ট্রেন যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে রেলওয়ের।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ