রং তুলি আর ক্যানভাস ফেলে চলে গেলেন যশোরের পরিচিত মুখ ও চিত্রশিল্পী সোহেল রানা প্রাণন। হাসপাতালের বেডে দেড়দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষ হেরে গেলেন মৃত্যুর কাছে।
সোমবার বিকেল পাঁচটার দিকে খুলনায় একটি হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। রোববার দুপুরে তিনি যশোর শহরে পুরাতন কসবা পালবাড়ি গাজীরহাট রোডের নিজ বাসভবনে অসুস্থ হয়ে পড়লে স্বজনরা তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
সোমবার বিকেল পাঁচটায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন বলে তার স্বজনরা জানান। মঙ্গলবার বাদ জোহর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে এই গুণী চিত্রশিল্পীকে।
সোহেল রানা প্রাণনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে যশোর জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার আলম খান জানান, এ মৃত্যুর খবর আমাদের জন্য খুবই কষ্টের। সর্বশেষ ওর সঙ্গে দেখা এই চারুপীঠে বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তির আর্ট ক্যাম্পে।
তিনি জানান, মঙ্গলবার বেলা ১১টায় চারুপীঠ প্রাঙ্গণে সোহেল প্রাণনের মরদেহ আনা হবে। এ সময় সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হবে।
তার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে বিবৃতি জানিয়েছেন বিবর্তন যশোরের সভাপতি নওরোজ আলম খান চপল ও সাধারণ সম্পাদক দীপংকর বিশ্বাস।
উল্লেখ্য, জীবনসান্নে সোহেল তার তুলির আঁচড়ে ক্যানভাসে গল্প শুনিয়েছেন, কবির মতো বয়ান দিয়েছেন, মানুষকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন, প্রণোদনা জুগিয়েছেন। তার তুলিতে বাংলার নৈসর্গিক চিত্র যেমন উঠে এসেছে, তেমনি অনেক মানুষের প্রতিকৃতি এঁকেছেন সযত্নে। এঁকেছেন গভীর মমতায় জাতির জনকের প্রতিকৃতিও। তার তুলিতে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে বহু বন্ধুর মুখ। এঁকেছেন পাবলো পিকাসোকে, এঁকেছেন জয়নুল আবেদীন, এসএম সুলতান, কামরুল হাসান রামকিংকর বেইজ, রবী ঠাকুর, কবি নজরুল, ভ্যানগঘ, চেগুয়েভারা, ফ্রিদা কালো, চিত্র নায়িকা সুচিত্রা সেন, ববিতাসহ বহু লিজেন্ডের মুখাবয়ব। এঁকেছেন নানা ঘরাণার ছবি।
তার চিত্রকলার বিষয় বাংলার প্রকৃতি, মানুষের মুখ, জনজীবনের কর্মিষ্ঠ ও অলসায়িত রূপ। এছাড়া নদী, খাল, বাড়ির আঙিনা, প্রাঙ্গণ, মাঠ, প্রাণনের পর্যবেক্ষণের বিশেষ দিক।
বাংলা৭১নিউজ/সিএফ