বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ০৯:১৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
ওআইসিভুক্ত মিশন প্রধানদের কাছে ভোটের প্রস্তুতি তুলে ধরবেন সিইসি রোহিঙ্গাদের নিয়ে আইসিজে মামলায় আমরা সফল হতে চাই : প্রধান উপদেষ্টা ছাত্র ফেডারেশন-ছাত্র ইউনিয়ন নেতাসহ ১২ জনের নামে মামলা বালু ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যুবদল-বিএনপির সংঘর্ষ, আহত ৩০ রেলের মাফিয়া ম্যাক্সের আলমগীরের দুর্নীতির খোঁজে দুদকের অভিযান মাগুরার শিশুটির অবস্থার আরও অবনতি, দুবার ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ ‘যায়যায়দিন’ পত্রিকার ডিক্লেয়ারেশন বাতিল হত্যাচেষ্টা মামলায় জামিন পেলেন শমী কায়সার রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতার করবেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা কামাল রিমান্ডে, নেত্রী নদী গ্রেপ্তার সচেতন না করে ভ্যাট বাড়িয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণচেষ্টা ব্যর্থ : প্রেসসচিব যা ইচ্ছা করুন, ট্রাম্পকে ইরানের প্রেসিডেন্ট শাহবাগিদের আবির্ভাব কোনোভাবেই বরদাশত করা যায় না: ইশরাক রাজধানীতে সাঁড়াশি অভিযানে ২৪ ঘণ্টায় গ্রেফতার ১৯৭ জাতিসংঘ মহাসচিব আসছেন বৃহস্পতিবার, যাবেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পরিচয় মিলেছে জয়ন্তী নদীর পাড়ে পড়ে থাকা নারী-শিশুর বৃহস্পতিবার ২ ঘণ্টা বন্ধ থাকবে এনআইডি সেবা ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে ভোগান্তিতে রোগীরা মসজিদে ঢুকে ৩ ভাইকে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি গ্রেপ্তার অনুমতি ছাড়া সড়ক কাটাকাটি-খোঁড়াখুঁড়ি করলে ব্যবস্থা

মিরসরাইয়ে পানি সংকটে অনাবাদি দেড় হাজার একর জমি

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
  • আপলোড সময় মঙ্গলবার, ১১ মার্চ, ২০২৫
  • ১৩ বার পড়া হয়েছে

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের ওয়াহেদপুর ইউনিয়নে পর্যাপ্ত পানির অভাবে দেড় হাজার একর জমিতে বোরো ধান চাষ করতে পারছেন না কৃষকেরা। পানির ব্যবস্থা করা গেলে বোরো মৌসুমেও ধান চাষের আওতায় আসতে পারে পরিত্যক্ত থাকা এসব কৃষিজমি। গভীর নলকূপ, ছড়া ও খাল খননের মাধ্যমে বাওয়াছড়া সেচ প্রকল্প থেকে পানি সরবরাহের দাবি কৃষকদের। পানি পেলে শস্য উৎপাদন বাড়ার পাশাপাশি বাড়বে আবাদি জমির পরিমাণ।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, ওয়াহেদপুর ইউনিয়নে মোট কৃষিজমির পরিমাণ প্রায় ২ হাজার একর। যার মধ্যে তিন ফসলি জমির পরিমাণ ৪২৫ একর। বোরো ধান আবাদি জমির পরিমাণ ১২০ একর। শাক-সবজি আবাদি জমির পরিমাণ ৫০০ একর। বাকি ৯৫৫ একর কৃষিজমিতে পানির অভাবে চাষাবাদে বেগ পেতে হয় কৃষকদের।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৫ সালে ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন সেলিমের প্রচেষ্টায় ৩, ৫, ৬, ৭ ও ৯ নং ওয়ার্ডের ২ হাজার কৃষককে নিয়ে সমিতি করা হয়। তাদের নিয়ে পাহাড়ের পাদদেশে একটি বাঁধ নির্মাণ ও স্লুইচ গেইট স্থাপন করে। সেখানে বর্ষা মৌসুমে পানি ধারণ করে শুষ্ক মৌসুমে কৃষিকাজের জন্য সরবরাহ করে বাওয়াছড়া পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেড।

এ প্রকল্পের আওতাধীন ছড়া ও খালগুলো অবৈধ দখলমুক্ত করে কিছু জায়গায় সরকারিভাবে খননের মাধ্যমে ওয়াহেদপুর বিলের সাথে মাইজগাঁও গঙ্গার বিলকে সংযুক্ত করে স্লুইচ গেইট নির্মাণ করা গেলে গঙ্গার বিল ও তার পাশের কয়েকটি খালের মাধ্যমে এ পানি ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের সিংহভাগ কৃষিজমিতে পৌঁছানো সম্ভব হবে। ফলে আমন, বোরো ধান, শাক-সবজিসহ কৃষিপণ্য আবাদ তিনগুণ বাড়ার সম্ভাবনা আছে।

ইউনিয়নের নিজামপুর বারোমাসি ছড়া ও গাছবাড়িয়া খাল ঘুরে দেখা গেছে, অবৈধ স্থাপনা ও পলি জমে ২টি ছড়া ও খালে গতিপথ পাল্টে গেছে। বর্ষাকালে সঠিকভাবে পানি প্রবাহিত না হওয়ায় ছড়া, খাল পাড় ও আশেপাশের সড়ক ভাঙনের কবলে পড়ছে। নষ্ট হচ্ছে ক্ষেত খামার ও মাছের ঘের। অন্যদিকে দেখা গেছে গঙ্গার বিল ছড়ার অস্তিত্বই প্রায় বিলীনের পথে।

নিজামপুর ছড়া ও গাছবাড়িয়া খাল খননের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। খালগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানির গতিপথ পাল্টে গিয়ে সৃষ্টি হচ্ছে জলবদ্ধতা। বিপর্যস্ত হচ্ছে জনজীবন। ক্ষতি হচ্ছে আমন ধানসহ নানা কৃষি ক্ষেতের।

খাল ও ছড়া খননের মাধ্যমে একদিকে জলবদ্ধতা নিরসন হবে; অন্যদিকে কৃষিতে বাড়বে উৎপাদন। এ সমস্যা সমাধানে সরকারিভাবে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়ার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন চাষিরা।

মধ্যম ওয়াহেদপুরের কৃষক আবুল কাশেম বলেন, ‘গ্রামের প্রায় ২ শতাধিক কৃষক কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। শুষ্ক মৌসুমে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় আমাদের কৃষিকাজে বেগ পেতে হয়। অনেক দূর থেকে পানি সংগ্রহ করে এনে ক্ষেতে সেচ দিতে হয়। ফলে উৎপাদন খরচও অনেক বেড়ে যায়।

পানির অভাবে নষ্ট হয় ক্ষেত। বোরো ধান তো আবাদ করা সম্ভবই হয় না। পানি পেলে বোরো ধানের পাশাপাশি অন্য শাক-সবজি আবাদ করা যাবে। এর জন্য বাওয়াছড়া থেকে পাইপ লাইন স্থাপন করে বা ছড়াগুলো খননের মাধ্যমের পানির ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।’

ইছামতি গ্রামের কৃষক সাইফুদ্দিন ও আবুল হাশেম বলেন, ‘মধ্যম ওয়াহেদপুর বিলের সাথে গঙ্গা বিলের সংযোগস্থলের ছড়া ও খাল খনন করে বাওয়াছড়া সেচ প্রকল্প থেকে পানি এনে সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়নের মাধ্যমে বণ্টন করা গেলে সিংহভাগ কৃষিজমিতে বোরো ধানসহ নানা ধরনের শাক-সবজি অবাদের আওতায় আনা যাবে।

কেননা এটি হলো ইউনিয়নের মধ্যবর্তী স্থান। এ বিলের খাল ও ছড়ার সাথে বেশিরভাগ বিলের সংযোগ আছে। বর্ষাকালে এ বিল দিয়ে ইউনিয়নের বেশিরভাগ পানি নিষ্কাশিত হয়।’

গাছবাড়িয়া গ্রামের কৃষক মো. জাকারিয়া, মো. ইকবাল, নুরুদ্দিনসহ একাধিক কৃষক অভিযোগ করে বলেন, ‘নিজামপুর বারোমাসি ছড়া দীর্ঘদিন খনন না হওয়ায় কৃষক পানি পান না। খনন করে পানির গতিপথ ঠিক করে একটি স্লুইচ গেট নির্মাণ করা গেলে বর্ষাকালে জলাবদ্ধতা নিরসন ও শুষ্ক মৌসুমে কৃষিতে উৎপাদন বাড়বে। আবাদের আওতায় আসবে প্রায় ৫০০ একর কৃষিজমি।’

বাওয়াছড়া সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘বাওয়াছড়া সেচ প্রকল্পের পানি ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের মোট কৃষিজমির এক তৃতীয়াংশ জমি আবাদের আওতায় আনা সম্ভব। এর জন্য সরকারিভাবে সঠিক দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন প্রয়োজন।’

মিরসরাই উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কাজী নুরুল আলম বলেন, ‘ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের কৃষক যেন চাষাবাদ করতে পারে এ ব্যাপারে আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করবো। কিভাবে পানির ব্যবস্থা করা যায়; সে বিষয়ে পরিকল্পনা করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com