মাস্টারপ্ল্যান জটিলতায় আটকে আছে পর্যটন নগরী কুয়াকাটার সকল ধরনের বিনিয়োগ। অব্যবস্থাপনা, অপরিকল্পিত নগরায়ন এবং অব্যাহত ভাঙনে কুয়াকাটা হারাচ্ছে সৌন্দর্য। দ্রুত পরিকল্পিত মাস্টারপ্ল্যানের মাধ্যমে কুয়াকাটাকে সাজিয়ে তোলা না হলে দিন দিন পর্যটকদের আকর্ষণ হারাবে।
জানা যায়, দীর্ঘ সমীক্ষার পর ২০১৪ সালে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের বেলাভূমি সাগরকন্যা কুয়াকাটাকে একটি পরিকল্পিত পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে মাস্টারপ্ল্যান হাতে নেওয়া হয়। কিন্তু নানা জটিলতায় সেই প্রকল্প আলোর মুখ দেখেনি।
তবে, এবার কুয়াকাটাকে একটি পরিকল্পিত পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে নতুন করে মাস্টারপ্ল্যান হাতে নিয়েছে সরকার। কিন্তু ধীর গতিতে চলা সেই মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নের আগেই অপিরকল্পিতভাবে গড়ে উঠছে নানা স্থাপনা। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে নতুন বিনিয়োগসহ জমি কেনাবেচা।
এছাড়া, দর্শনীয় স্থানগুলোর সঙ্গে এখনো গড়ে উঠেনি উন্নত সড়ক যোগাযোগ। তৈরি হয়নি পাঁচ তারকা মানের কোনও হোটেল-মোটেল। কুয়াকাটাকে নতুনভাবে সাজিয়ে তোলার দাবি পর্যটকসহ বিনিয়োগকারীদের।
ঢাকার মাতুয়াইল থেকে আসা পর্যটক ইয়াসমিন সুমি বলেন, পরিবার পরিজন নিয়ে কুয়াকাটায় এসেছি। সমুদ্রের ঢেউ আমাদের বিমোহিত করেছে। কিন্তু এখানে যাতায়াত ব্যবস্থার তেমন উন্নয়ন ঘটেনি। গতকাল অটোরিকশায় গঙ্গামতি গিয়েছি। রাস্তা খারাপের কারণে বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।
খুলনা থেকে আসা পর্যটক রহমান মিয়া বলেন, সৈকতের মনোরম পরিবেশ ভালো লাগলেও অনেক স্থানে গাছের গোঁড়া পড়ে আছে। এসব দেখতে আসলে দৃষ্টিকটু লাগছে। এছাড়া, এখানে উন্নতমানের কোনও আবাসিক হোটেল এখনো গড়ে উঠেনি। কুয়াকাটাকে একটি মাস্টারপ্ল্যানের আওতায় সাজিয়ে তোলার দাবি জানাচ্ছি।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি শাহ-আলম হাওলাদার বলেন, একটি স্থায়ী মাস্টারপ্ল্যান দরকার। অনেক বিনিয়োগকারী কুয়াকাটায় হোটেল-মোটেলসহ নানা স্থাপনা করতে চান। কিন্তু মাস্টারপ্ল্যান জটিলতায় তারা সেটা পারছেন না। জমি কেনাবেচা করতে গেলে বিভাগীয় কমিশনারের অনুমতি নিতে হচ্ছে।
ট্যুর অপারেটর এ্যাসোসিয়েশন অফ কুয়াকাটা (টোয়াক) এর সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, কুয়াকাটায় এখন যে সকল হোটেল-মোটেল নির্মাণ হচ্ছে সেগুলো বিভাগীয় কমিশনারের অনুমতি ছাড়াই তোলা হচ্ছে। কারণ অনেক বিনিয়োগকারী (যারা আগে জমি কিনেছেন) স্থাপনা নির্মাণের অনুমতি চেয়েও পাচ্ছে না। তাই অনুমতি ছাড়াই তারা হোটেল-মোটেল নির্মাণ করছেন। যখন স্থায়ী মাস্টারপ্ল্যান প্রকাশ করা হবে তখন এ নিয়ে আরও জটিলতা সৃষ্টি হবে। তাই একটি স্থায়ী মাস্টারপ্ল্যান করার দাবি জানাচ্ছি।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, কুয়াকাটার মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। আশা করছি কুয়াকাটাকে আধুনিক এবং পরিকল্পিত পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে শিগগিরই নতুন মাস্টারপ্ল্যান গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ