ইতালীয় বিজ্ঞানীরা মায়ের বুকের দুধে প্রথমবারের মতো মাইক্রোপ্লাস্টিক বা অতি ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা শনাক্ত করেছেন। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এর মধ্য দিয়ে নবজাতকের স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। তবে মাইক্রোপ্লাস্টিক জনিত ঝুঁকির তুলনায় শিশুর জন্য মায়ের দুধের উপকারিতা বেশি বলে মনে করেন তারা। গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মাইক্রোপ্লাস্টিক হলো যেকোনো ধরনের প্লাস্টিকের অতি ক্ষুদ্র কণা। এগুলোর দৈর্ঘ্য ৫ মিলিমিটারেরও কম। সম্প্রতি পলিমারস সাময়িকীতে গবেষণার এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে।
মায়ের বুকের দুধে যেসব মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে তার মধ্যে রয়েছে পলিথিন, পিভিসি এবং পলিপ্রোপিলিন। ২০২০ সালে ইতালীয় বিজ্ঞানীদের এ দলটিই মানুষের গর্ভফুলে প্লাস্টিক কণা শনাক্ত করেছিলেন।
গবেষণার জন্য ইতালিতে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ৩৪ জন মায়ের বুকের দুধের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। সন্তান জন্মদানের এক সপ্তাহ পরই এই নমুনা সংগ্রহ করা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, তিন-চতুর্থাংশ নমুনার মধ্যেই মাইক্রোস্কপিক প্লাস্টিক কণার অস্তিত্ব আছে।
গবেষকেরা জানান, রাসায়নিক দূষণের কারণে নবজাতকেরা ঝুঁকির মধ্যে আছে। এ ব্যাপারে জরুরি ভিত্তিতে আরও গবেষণা হওয়া প্রয়োজন বলে জানান তারা। আগের বিভিন্ন গবেষণায় মানব কোষ, পরীক্ষাগারে গবেষণার জন্য ব্যবহৃত প্রাণী এবং সামুদ্রিক প্রাণীর মধ্যে প্লাস্টিক কণার বিষাক্ত প্রভাব পড়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
তবে জীবিত মানুষের দেহের ওপর এর প্রভাব এখনো অজানা। আর নতুন গবেষণাটির মধ্য দিয়ে বিজ্ঞানীরা মাইক্রোপ্লাস্টিক জনিত ঝুঁকির বিষয়টি এবার সামনে নিয়ে এসেছেন।
গবেষণায় অংশ নেওয়া মায়েদের খাবারের ধরন, প্লাস্টিকের মোড়কজাত পানীয় পান ও সামুদ্রিক খাবার গ্রহণ, প্লাস্টিকের মোড়কজাত প্রসাধনীর ব্যবহারসংক্রান্ত বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। তবে বুকের দুধে ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণার উপস্থিতির সঙ্গে এগুলোর কোনো ধরনের সংযোগ পাওয়া যায়নি।
ইতালির পলিটেকনিকা দেল মারচে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ভ্যালেন্তিনা নোতারস্তেফানো জানান, বুকের দুধে প্লাস্টিক কণার উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার মধ্য দিয়ে নবজাতকদের জন্য উদ্বেগ বেড়েছে। গর্ভাবস্থায় ও স্তন্য পানের সময়ে কীভাবে এগুলোর সংস্পর্শ কমানো যায়, তা বের করাটা জরুরি হয়ে পড়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ