বাংলা৭১নিউজ, এস. এম. রাসেল, মাদারীপুর প্রতিনিধি: মাদারীপুরের কালকিনিতে শুক্রবার সকালে সার্বিক পরিবহন একটি বাস এক শিশুকে বাচাঁতে গিয়ে খোদে পরে কাজী হাফিজ (৫২) নামের এক যাত্রী নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে কমপক্ষে ১২জন যাত্রী । আহতদেরকে উদ্ধার করে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সার্বিক পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস উপজেলা সদরের ডাকবাংলার মোড় থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। পথি মধ্যে উপজেলার লালব্রিজ নামকস্থানে একটি সাইকেল আরোহী এক শিশুকে বাচাঁতে গিয়ে পরিবহনটি পুরোপুরি খাদেঁ পরে যায়। এতে করে দক্ষিন গোপালপুর গ্রামের কাজী হাফিজ ঘটনাস্থলেই নিহত হয় এবং ১২জন যাত্রী গুরুতর আহত হয়। খবর পেয়ে কালকিনি থানা পুলিশের সহযোগীতায় গৌরনদী ফায়ার সার্ভিস এসে যাত্রীদের উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেন। আহতদেরকে উদ্ধার করে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
এব্যাপারে কালকিনি থানার ওসি কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, এক শিশু সাইকেল যোগে ভুরঘাটা দিকে যাচ্ছিল। তাকে পরিবহনের চালক বাচাঁতে গিয়ে পরিবহনটি নিয়ে খাদে পরে যায়। এতে করে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। তবে আমরা গাড়ি উদ্ধার কার্যক্রম অব্যহত রেখেছি।
জাতীয় সংগীত ছাড়া উন্নয়ন মেলা উদ্বোধন করায় শিল্পীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বর্জন
বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া তিনদিনের উন্নয়ন মেলা জাতীয় সংগীত ছাড়াই উদ্বোধন করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় শিল্পীরা। পাশাপাশি নির্ধারিত সময়ের আগে মঞ্চ থেকে শিল্পীদের নামিয়ে দেয়ায় তিন দিনের এ উন্নয়ন মেলার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন তারা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসনের কাছে লিখিতভাবে বিষয়টি জানান বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা। উন্নয়ন মেলায় এ সকল শিল্পীদের জাতীয় সংগীত পরিবেশন করার কথা ছিল। এ ছাড়াও সন্ধ্যার অনুষ্ঠানে স্থানীয় শিল্পীদের মঞ্চ থেকে নামিয়ে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
একাধিক সূত্র ও শিল্পীদের অভিযোগে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে মাদারীপুরে তিনদিন ব্যাপী আয়োজিত উন্নয়ন মেলা জাতীয় সংগীত, কোরআন তেলাওয়াত ও গীতাপাঠ ছাড়াই উদ্বোধন করা হয়েছে। মেলায় জেলা প্রশাসনের আমন্ত্রণ পেয়েও জাতীয় সংগীত পরিবেশন করতে না পেরে ক্ষোভ ও নিন্দা জানান স্থানীয় শিল্পীরা। এ কারণে সন্ধ্যায় তারা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বর্জন করেন।
মাদারীপুরের শিল্পীরা আরো জানান, উন্নয়ন মেলা উপলক্ষে কয়েকদিন আগে জেলার একাংশ শিল্পীদের মৌখিকভাবে জাতীয় সংগীত, কোরআন তেলাওয়াত ও গীতাপাঠ পরিবেশনের জন্য আমন্ত্রন জানায় জেলা প্রশাসন। শিল্পীদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিলো সকাল ৯টার মধ্যে উন্নয়ন মেলার মঞ্চে উপস্থিত থাকতে হবে। শিল্পীরাও জেলা প্রশাসনের কথা মতো সঠিক সময়ে বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রসহ হাজির হন মেলা প্রাঙ্গণে। তখন তারা জাতীয় সংগীত পরিবেশনের জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে অনুমতি চাইলে তাদের অপেক্ষা করতে বলা হয়। এরপরে তাদের জানানো হয় উন্নয়ন মেলায় কোন জাতীয় সংগীত বা অন্যকিছু পরিবেশন করা হবে না। তাই স্থানীয় শিল্পীরা মেলা প্রাঙ্গণ থেকে চলে যান।
মনিরা ইয়াসমিন নামে এক দর্শনার্থী বলেন, ‘উন্নয়ন মেলায় বিদেশী গান ও নাচ হলো। তাতে মনে হচ্ছে, দেশ থেকে বাংলা সংস্কৃতি উঠে গেছে। আমরা এমন ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’
জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সংগীত প্রশিক্ষক নন্দিনী হাওলাদার বলেন, ‘আমরা চরমভাবে লজ্জিত। আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়ে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করতে দেয়নি প্রশাসন। আমরা এর নিন্দা জানাই।’সংগীত শিল্পী রনি মোল্লা বলেন, ‘এটি একটা ন্যাক্কারজনক ঘটনা। শিল্পীদের অপমান কিছুতেই সহ্য করার মতো নয়।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সংগীত শিল্পী বলেন, ‘আশা নিয়ে আসছিলাম। মঞ্চে সংগীত পরিবেশন করবো। কিন্তু স্থানীয় শিল্পীদের মঞ্চ থেকে নামিয়ে দিয়ে তাদের অপমান ও অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। এতে মাদারীপুরের সুশীল সমাজও ক্ষুব্ধ হয়েছেন।’
এ ব্যাপারে মাদারীপুর উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন এলিন বলেন, ‘অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের জন্য শিল্পীদের ডেকে এনে তাদের মঞ্চ থেকে নামিয়ে দিয়ে জাতীয় সংগীত ছাড়াই উন্নয়ন মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে, এটা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ঘটনা। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানাচ্ছি। শিল্পী ও সংগঠনকে অবমূল্যায়ন করা প্রশাসনের এটাই নতুন নয়। এর আগেও একাধিক অনুষ্ঠানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিল্পীদের ডেকে নিয়ে মঞ্চে উঠতে দেওয়া হয়নি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোঃ ওয়াহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, স্থানীয় শিল্পীদের সাথে একটু ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে। এ ছাড়া আর কিছুই না। তবে শীঘ্রই তা ঠিক হয়ে যাবে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস