ব্রহ্মপুত্র নদে চীনের বাঁধ নির্মাণ বন্ধের দাবি জানিয়ে পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ আন্দোলন জানিয়েছে, এ বাঁধ নির্মিত হলে ভারতের আসাম ও বাংলাদেশে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে। উজানে চীন ও ভারতের ক্রমাগত বাঁধ নির্মাণের ফলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশে মিঠাপানির চরম সংকট দেখা দেবে।
শনিবার (১৬ জানুয়ারি) রাজধানীর গুলশানের পূর্ণিমা রেস্টুরেন্টে পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ আন্দোলনের পরিচালকদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান বাপ্পি সরদার’র সভাপতিত্বে ‘পরিবেশ বিপর্যয়-কোন পথে বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনা সভা ও সংবর্ধনা’ অনুষ্ঠানে সকল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বাপ্পি সরদার বলেন, ‘অনতিবিলম্বে ব্রহ্মপুত্র নদে চীনের বাঁধ নির্মাণ বন্ধ করতে হবে। এ বিষয়ে সরকারের কার্যকর কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করার।’
তিনি আরও বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ বিপর্যয় এখন বাংলাদেশের জন্য মরার উপর খাড়ার ঘা। শিল্পোন্নত দায়ী রাষ্ট্রের কারণে বর্তমানে বাংলাদেশে সব থেকে জলবায়ু ঝুঁকিতে। আমাদের সংগঠন রাষ্ট্রের পক্ষে আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিল আদায়ে জনসাধারণকে সাথে নিয়ে রাজপথে আন্দোলনে নামবে।’
এ সময় সংগঠনের পক্ষ থেকে বেশ কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। (১) বায়ুদূষণ রোধে স্বতন্ত্র কমিশন গঠন। (২) ঢাকা শহরের যানজট কমাতে সচিবালয়কে আগারগাঁও এ স্থানান্তর। (৩) ঢাকা শহরের সকল পতিত জায়গা উদ্ধার করে সবুজায়ন নিশ্চিত করা। (৪) বন পরিবেশ ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সকল পরিবেশবাদী সংগঠনকে নিয়ে আলাদা একটি সেল গঠন করতে হবে। (৫) দেশের সকল নদীর পানি দূষণমুক্ত রাখতে সিইটিপি ব্যবহার নিশ্চিত করতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। (৬) সকল পরিবেশবাদী সংগঠনকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে হবে। (৭) অনতিবিলম্বে ব্রহ্মপুত্র নদে চীনের বাঁধ নির্মাণ বন্ধ করতে হবে। (৮) বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবী জুড়ে সকল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বন্ধ করতে হবে এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। (৯) প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার বন্ধ করে, দ্রুত পাটজাত পণ্যের ব্যবহার নিশ্চিত করতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। (১০) নদী ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও নদী খননে দুর্নীতি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে সকল পরিচালককে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। সংবর্ধিত হয়েছেন সংগঠনের মহাসচিব মহসিন সিকদার পাভেল, অর্থ পরিচালক ওমর ফারুক চৌধুরী, পরিচালক নাসিরুল ইসলাম নাসির, প্রভাষক মো. শাহাদাত হোসেন, নাদিয়া নুর তনু ও এ্যাডভোকেট মো. রাশিদুল ইসলাম। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অভিনেতা উদয় খান, কেন্দ্রীয় সদস্য এম. এ. মামুন, সাব্বির হোসেন, যশোর জেলা সমন্বয়কারী, মো. রবিউল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ, যুগ্ম আহ্বায়ক মির্জা আনোয়ার পারভেজ, সদস্য সচিব রাজু আহমেদ, কণ্ঠশিল্পী মাসুদ টুটুল প্রমুখ।
বাংলা৭১নিউজ/এমএস