টানা দুদিন ঝড় ও বৃষ্টির পর কুড়িগ্রাম জেলাজুড়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। এতে করে মাঘের শেষ সময়ে তীব্র শীতে কাবু হয়ে পড়েছে উত্তরের সীমান্তঘেঁষা জেলা কুড়িগ্রামের মানুষ।
রাজারহাট আবহাওয়া অফিস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিছুর রহমান বলেন, গত দুদিন টানা ঝড় ও বৃষ্টির পর জেলাজুড়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। যা আগামী দুই-তিন দিন অব্যাহত থাকতে পারে। রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের জন্য আবহাওয়ার এমন পূর্বাভাস রয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
কনকনে শীত ও হিমেল হাওয়ায় কাঁপছে মানুষজন। ঘন কুয়াশায় হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন। কনকনে ঠান্ডায় বিপাকে পড়েছেন খেটেখাওয়া, দিনমজুরসহ নিম্ন আয়ের মানুষজন। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন অনেকেই।
পাঁচগাছি এলাকার দিনমজুর আবুল হোসেন, মকবুল মিয়া ও সাইদুল জানান, গত দুদিন ঝড় ও বৃষ্টির কারণে তারা কাজে যেতে পারেননি। এতে করে তাদের ঘরে খাবারের সংকট রয়েছে। আজ কাজ না করলে পরিবার নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে তাদের। কিন্তু কনকনে ঠান্ডা ও তীব্র শীত উপেক্ষা করে ঘর থেকে বের হলেও কাজ না জোটার আশঙ্কা তাদের।
শীতবস্ত্রের অভাবে ঠান্ডায় কাবু হয়ে পড়ছেন জেলার সাড়ে চার শতাধিক চর ও দ্বীপ চরের মানুষ। একই পরিস্থিতি নদ-নদী সংলগ্ন বাঁধে আশ্রয় নেওয়া মানুষজনেরও। শীতে গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। শীত উপেক্ষা করেই জীবন জীবিকার সন্ধানে ছুটে চলছেন শ্রমজীবী মানুষ।
যাত্রাপুরের ভ্যানচালক আব্দুল জলিল জানান, হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় শরীর কাঁপছে। শির শির বাতাস কাপড় ভেদ করে শরীরের ভেতরে ঢুকছে। কিন্তু যতই ঠান্ডা হোক, আয় করে অসুস্থ ছোট্ট সন্তানের ওষুধের টাকা জোগাড় করে বাড়িতে ফিরতে হবে বলে জানান তিনি।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার বলেন, জেলার নয় উপজেলার শীতার্তদের জন্য এক কোটি আট লাখ টাকার কম্বল ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আসা ৩৫ হাজার ৭০০ কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া আরও প্রায় ছয় হাজার সোয়েটার ও পাঁচ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/পিকে