বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:১৭ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
প্রতারণার মামলায় ইভ্যালির রাসেল-শামীমার ২ বছরের কারাদণ্ড ইফতিখারের ব্যাটে রংপুরের লড়াকু পুঁজি কারাগারে বসেই ঝাড়ফুঁক দিচ্ছেন দরবেশ : রিজভী ৫ আগস্ট জাতীয় নির্বাচন হলে স্মরণীয় হয়ে থাকবে: সালাহউদ্দিন আহমেদ মহাসড়কে টমেটো ফেলে তিন জেলার চাষিদের বিক্ষোভ ট্রাম্পের আদেশ আটকে দিল ফেডারেল কোর্ট শিবলী রুবাইয়াতসহ ৯ জনের পাসপোর্ট বাতিল দুদকের মামলায় গ্রেফতার সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ এক রাতেই ইউক্রেনের শতাধিক ড্রোন ভূপাতিত করেছে রাশিয়া শাহ এএমএস কিবরিয়ার হত্যাকাণ্ড নিয়ে স্ট্যাটাস শফিকুল আলমের নির্বাচন কর্মকর্তাসহ গ্রেফতার ২, প্রবাসীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা ট্রাম্পের স্টারগেট প্রকল্প কী, কেন তা নিয়ে তীব্র হচ্ছে বিতর্ক? সাবেক এমপি মোমিনের মৃত্যুতে তারেক রহমানের শোক মোটরসাইকেল-কাভার্ডভ্যানের সংঘর্ষে প্রাণ গেল ২ জনের বাসচালক-শ্রমিকদের সঙ্গে অটোরিকশা চালকদের সংঘর্ষ, যানবাহনে আগুন পরীমণির সঙ্গে প্রেম নিয়ে যা বললেন শেখ সাদী ৩১ জানুয়ারির পর অবৈধ বিদেশিদের আইনের আওতায় আনা হবে ভারতকে কোনো বিষয়ে ছাড় দেওয়া হবে না : বিজিবি প্রধান ভারতে কুম্ভমেলায় পদদলিত হয়ে ১৫ জনের মৃত্যু

বিশ্বে মুদ্রাবাজারে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে স্বর্ণ মজুদ, পিছিয়ে বাংলাদেশ

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক:
  • আপলোড সময় মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ২০ বার পড়া হয়েছে

বৈশ্বিক অর্থনীতির সংকটময় পরিস্থিতিতে রিজার্ভে স্বর্ণের মজুদ বাড়িয়ে তুলছে বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর রিজার্ভের বড় একটি অংশ এখন গড়ে উঠছে স্বর্ণের মজুদ দিয়ে, যা সামনে আরো বাড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এসব দেশের আর্থিক অনেক সংস্থা আপৎকালীন বিনিয়োগ হিসেবেও এখন স্বর্ণে অর্থলগ্নির পথে ঝুঁকছে। বৈশ্বিক অর্থনীতির সংকটের পাশাপাশি রাশিয়ার ওপর একের পর এক বিধি-নিষেধ আরোপের পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশ স্বর্ণ মজুদের ওপর মনোযোগ দিচ্ছে।

রয়টার্সের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুসারে, বিশ্বব্যাপী কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর কাছে স্বর্ণের মজুদ রয়েছে ৩৫ হাজার টনেরও বেশি। সব মিলিয়ে পৃথিবীর ইতিহাসে এখন পর্যন্ত উত্তোলিত স্বর্ণের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর নিয়ন্ত্রণে। চলতি বছরেও বিশ্বব্যাপী স্বর্ণের সবচেয়ে বড় নিট ক্রেতা ছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো।

দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে স্বর্ণ মজুদ রয়েছে সবচেয়ে বেশি। ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (আরবিআই) মজুদে স্বর্ণ রয়েছে ৭৮৫ টন। বিশ্বে দেশটি রয়েছে নবম স্থানে। তবে এ ক্ষেত্রে বেশ পিছিয়ে বাংলাদেশ, তালিকায় ৬০-এরও পরে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভে স্বর্ণের পরিমাণ মাত্র ১৪ টন। বাংলাদেশের চেয়েও এগিয়ে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। পাকিস্তানে এর পরিমাণ হচ্ছে ৬৪ দশমিক ৬৫ টন, আর আফগানিস্তানে ২১ দশমিক ৮৭ টন। নেপাল ও শ্রীলঙ্কায় এর পরিমাণ যথাক্রমে ৭ দশমিক ৯৯ ও ৬ দশমিক ৭ টন।

বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর মধ্যে স্বর্ণ মজুদ সবচেয়ে বেশি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভে। ট্রেডিং ইকোনমিকসের ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে মজুদকৃত স্বর্ণের পরিমাণ ৮ হাজার ১৩৩ টন। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা জার্মানির কেন্দ্রীয় ব্যাংকে এর পরিমাণ ৩ হাজার ৩৫৫ টন। তালিকায় তৃতীয় থেকে পঞ্চম স্থানে থাকা দেশগুলো হলো যথাক্রমে ইতালি, ফ্রান্স ও রাশিয়া। দেশগুলোর মজুদ ২ হাজার ২০০ থেকে আড়াই হাজার টনের মধ্যে।

বর্তমানে ইউরোপ বা আমেরিকা নয়, উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোকেই স্বর্ণে বিনিয়োগ করার ঝুঁকি নিতে দেখা যাচ্ছে বেশি। দি ইকোনমিস্টের হিসাব অনুযায়ী, শুধু চলতি পঞ্জিকাবর্ষের তৃতীয় প্রান্তিকেই (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বিশ্বব্যাপী ৪০০ টন স্বর্ণ কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো।

সব মিলিয়ে জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে ৬৭০ টন স্বর্ণ বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভে যুক্ত হয়েছে। ষাটের দশকের বুলিয়ন মার্কেট বিপর্যয়ের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোকে এমন গতিতে স্বর্ণ কিনতে দেখা যায়নি। গত মে মাসে তুরস্ক এক ধাক্কায় ২০ টন স্বর্ণ কিনেছে। মধ্যপ্রাচ্যের কাতার স্বর্ণ ক্রয় বাড়িয়েছে। মধ্য এশিয়ার উজবেকিস্তানের মোট রিজার্ভের দুই-তৃতীয়াংশ এখন স্বর্ণ।

কাজাখস্তানও এখন স্বর্ণ মজুদ বাড়িয়ে দ্বিগুণে তুলছে। অর্থনীতির পুরনো পাওয়ারহাউস হিসেবে চিহ্নিত দেশগুলো যেমন—যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ফ্রান্স ও ইতালির কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন স্বর্ণ না কিনলেও বিদ্যমান মজুদ ধরে রাখার কৌশল নিয়েছে। তথ্য মতে, যুক্তরাষ্ট্রের স্বর্ণ রিজার্ভের পরিমাণ দেশটির মোট বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের ৭৮ শতাংশের সমান। জার্মানির ক্ষেত্রে এ হার ৭৪ শতাংশ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রায় এক দশক ধরেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সুদহার প্রায় শূন্যের কাছাকাছি। অর্থনীতির বর্তমান দুর্বিপাকের মুখে যেকোনো কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন বাজারে মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হতে পারে। কিন্তু মুদ্রার এ অতিরিক্ত সরবরাহের প্রধানতম ঝুঁকি হলো এটি বাজারে ব্যাপক মূল্যস্ফীতিরও কারণ হয়ে উঠতে পারে। অন্যদিকে জোগান সীমিত হওয়ায় স্বর্ণ সরবরাহ ছাপা নোটের মতো চাহিদামাফিক বাড়ানো সম্ভব নয়।

মূল্যবান ধাতুটির বাজারে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বা আর্থিক দুর্বিপাকের প্রভাব পড়ে না বললেই চলে। কোনো একক একটি দেশের অর্থনৈতিক দুরবস্থা স্বর্ণের বাজার অস্থিতিশীল করতে পর্যাপ্ত নয়।

আবার স্বর্ণের বর্ধিত মজুদ মূল্যস্ফীতি মোকাবেলায় নানা সময় কার্যকর হিসেবে প্রমাণ হয়েছে। উপরন্তু স্বর্ণমূল্যের সঙ্গে ডলারের বিনিময় হারের বিপরীতমুখী সম্পর্ক রয়েছে। সাধারণত ডলারের বিনিময় হার কমে এলে স্বর্ণের দাম বেড়ে যায়। এ জন্যই কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো বাজার অস্থিতিশীলতার মুহূর্তে রিজার্ভ সংকট এড়াতে স্বর্ণ মজুদ করে।

জানা যায়, বাংলাদেশের ব্যাংকের রিজার্ভ ব্যবস্থাপনা নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি গাইডলাইন অনুসরণ করা হয়। এ বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি আছে। ওই কমিটি বৈশ্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে রিজার্ভ কিভাবে, কোন মুদ্রায় কতখানি ও কোথায় রাখবে, সেসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়।

স্বর্ণকে এখন বৈশ্বিক মুদ্রাবাজারের অন্যতম বৃহৎ গতিনির্ধারক হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল ক্রয়ে জি-৭ জোটভুক্ত দেশ (যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স ও জাপান), ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও অস্ট্রেলিয়ার মূল্যসীমা আরোপ এর সম্ভাবনাকে অনেকখানি বাড়িয়ে তুলেছে বলে মনে করছেন তারা।

আর্থিক খাতের বিশ্লেষকদের মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়েছে, পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে জ্বালানি তেলের দাম স্বর্ণে গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সে ক্ষেত্রে স্বর্ণের দামে ব্যাপক উল্লম্ফনের পাশাপাশি ডলারের বিনিময় হার পড়ে যাওয়ারও ব্যাপক আশঙ্কা রয়েছে।

জুরিখভিত্তিক বিনিয়োগ ব্যাংকিং ও আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ক্রেডিট সুইসসহ বেশ কয়েকটি বিনিয়োগ সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের ধারণা, অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম স্বর্ণে গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিতে পারে রাশিয়া। সে ক্ষেত্রে মূল্যবান ধাতুটির দাম আউন্সপ্রতি ১ হাজার ৮০০ থেকে বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে ৩ হাজার ৬০০ ডলারও ছাড়াতে পারে।

রাশিয়া জ্বালানি তেলের দাম স্বর্ণে গ্রহণ করা শুরু করলে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর অর্থনৈতিক চাপে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ। আবার কেউ কেউ মনে করেন, বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম বাড়লে বাংলাদেশের তেমন কোনো সমস্যা নেই।

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com