নাটোরের গুরুদাসপুরে থামানো যাচ্ছে না বৈদ্যুতিক মিটার চুরি। একের পর এক বিভিন্ন এলাকায় মিটার চুরি হলেও প্রশাসনিকভাবে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ধরাছোঁয়ার বাইরে চোর চক্রের সদস্যরা। উপজেলার চাপিলা, নাজিরপুর ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় মিটার চুরির ঘটনা স্বীকার করলেও সঠিক তথ্য দিতে পারেনি বিদ্যুৎ অফিস। তবে শনিবার (৬ জুলাই) চোর চক্রের সদস্যদের বিকাশে টাকা দিয়ে ১৩টি মিটার উদ্ধার করেছেন গ্রাহকরা।
এর আগে শুক্রবার গভীর রাতে পৌর সদরের চাঁচকৈড় গাড়িষাপাড়া, বামনকোলা, গোপালের মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় ৩৬টি মিটার চুরি হয়। চুরি যাওয়া মিটারের পাশে পলিথিনে মুড়িয়ে রাখা হয় চিরকুট। সেখানে লেখা থাকে ‘চুরি যাওয়া মিটার ফেরত পেতে ফোন করুন’।
চিরকুটে থাকা নম্বরে কল করলে বিকাশে টাকা চাওয়া হয়। টাকা দিলে কোথায় মিটার পাওয়া যাবে তার স্থান বলে দেয় চোরেরা। চোর চক্রের সদস্যরা প্রকাশ্যে মোবাইল নম্বর দিয়ে গেলেও পুলিশ এবং বিদ্যুৎ অফিস তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ গ্রাহকদের।
গাড়িষাপাড়া মহল্লার ধান ব্যবসায়ী বাবলুর রহমান জানান, মিটার চুরির ঘটনা এর আগেও ঘটেছে। শনিবার সকালে চাতালে এসে দেখেন মিটার নেই। সেখানে পলিথিনে মুড়িয়ে থাকা একটি চিরকুট দেখতে পান। চিরকুটে লেখা ছিল- ‘চুরি যাওয়া মিটার ফেরত পেতে ফোন করুন’। এরপর নম্বরটিতে কল দিয়ে তার মিটার উদ্ধার করেন।
ভুক্তভোগী চাতাল ব্যবসায়ী রবিউল করিম বলেন, মিটার চুরির ঘটনা নতুন না। এর আগেও মিটার চুরি করে বিকাশে ৪-৫ হাজার টাকা নিয়ে মিটার ফেরত দেয় চোরের দল। চোরের দেওয়া তথ্যমতে একটি নদীর ধার থেকে মিটার পাওয়া যায়।
শাহিন, মুস্তাফিজসহ স্থানীয় গ্রাহকরা জানান, ৩৬টির মধ্যে ১৩টি বাণিজ্যিক মিটার ফেরত পেয়েছেন তারা। কিন্তু মিটার প্রতি ৫ হাজার টাকা বিকাশ করতে হয়েছে চোরকে। প্রশাসনিকভাবে কোনো প্রতিকার না পেয়ে মিটার চোর চক্রের কাছে জিম্মি তারা। বাধ্য হয়ে চোরের দেওয়া নম্বরে বিকাশে টাকা দিয়ে মিটার ফেরত নিতে হয়।
এ বিষয়ে নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ গুরুদাসপুর জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. মোমিনুর রহমান বিশ্বাস মিটার চুরির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, চোর চক্রের সদস্যরা মিটার চুরি করে বিকাশে টাকা নিয়ে আবার মিটার ফেরত দিচ্ছে। এ চক্রের হোতা যেই হোক তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে গ্রাহকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিদ্যুৎ অফিসের পক্ষ থেকে থানায় জিডি করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
বিদ্যুৎ অফিসের এজিএম আব্দুল খালেক বলেন, শুনেছি ১৩টি শিল্প মিটার চুরি হয়েছে। এরমধ্যে ৯টি মিটার উদ্ধার করে গ্রাহকরা সংযোগের জন্য অফিসে এনেছেন। আমরা সংযোগের ব্যবস্থা নিচ্ছি।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) উজ্জ্বল হোসেন বলেন, মিটার চুরির ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ